• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় রোল মডেল: প্রধানমন্ত্রী

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯  

দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন কেবল উন্নয়নেরই নয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও বিশ্বে একটি রোল মডেল দেশ।

রোববার (১৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। খবর বাসস'র

তিনি বলেন, বিশ্বে এখন আমরা শুধু উন্নয়নের রোল মডেলই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাতেও রোল মডেল হিসেবে একটা সম্মান পেয়েছি।

তিনি আরো বলেন, বন্যা, খরা, ঘুর্ণিঝড়, অগ্নিকান্ড- এসবে ক্ষয়ক্ষতি যাতে হ্রাস পায় তার জন্য যা ব্যবস্থা নেয়ার এরইমধ্যে আমরা তা নিয়েছি। যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং সবাই মনে করে এটাও বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার রয়েছে। অনেকে আমাদের কাছ থেকে এটা এখন জানতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর জুলাই মাসে ঢাকায় গ্লোবাল কমিশন অন এ্যাডাপ্টেশন’র সভা হয়েছে। সেখানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র- ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন। 

বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যে কোন ধরনের দুর্যোগের জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, যেকোন মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ আসুক আর প্রাকৃতিব দুর্যোগই আসুক সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ সবসময় প্রস্তুত থাকবে সেটাই আমি চাই। আমাদের ভলান্টিয়াররা নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করবে, সেটারই আমি আশা পোষণ করি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় যেকোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণেও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, আমরা দেশকে গড়ে তুলতে চাই উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে। জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তাঁর একটা স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা এবং দারিদ্র মুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। আমরা সেই সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ বি তাজুল ইসলাম এবং সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

‘দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় দুজন ‘দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ’ প্রাপ্ত ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শিউলী রানী শিল এবং কুড়িগ্রামের মো.শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সেরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এ বছর ৮২ জনকে ‘সিপিপি’ পুরস্কার দেয়া হয়। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তিনজনের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।

তারা হচ্ছেন- কক্সবাজারের চকোরিয়ার বুলবুল জান্নাত, ভোলার লালমোহনের এ কে এম কামরুল ইসলাম এবং খুলনার মোংলার সুস্মিতা মন্ডল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন অগ্রগতি তুলে ধরে ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী- ১৯৯৭ প্রণয়ন করেছিলাম। পরবর্তীতে আমরাই আবার ২০১০ সালে এটি হালনাগাদ করি। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠন করি।

২০১২ সালে তার সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন করে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আইনের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর গঠন করা হয়েছে, যা দুর্যোগ মোকাবেলা, ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভ্যন্তরীণ বাস্তুহারা মানুষের দুর্দশার বিষয়গুলো আমলে নিয়ে ২০১৫ সালে আমরা একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করি এবং জাতীয় রিজিলিয়েন্স পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি, যা সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক ও এসডিজি’র সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০১৫ সালে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠা করেছে। বড় ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পূর্বাচলে একটি স্টেজিং এরিয়া নির্মাণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে, যেন জরুরি অবস্থায় এটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোরও প্রয়োজন মিটাতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সিভিল মিলিটারী সমন্বয়ে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিজিওনাল কন্সালটেটিভ গ্রুপের (আরসিজি) মাধ্যমে আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছি।