• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বিদেশি জাতের ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী আদনান

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পল্লীতে বিদেশি জাতের ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন আদনান জুলফিকার করিম। গড়ে তুলেছেন বিশাল একটি খামার।

আদনান জুলফিকার করিম দিনাজপুর শহরের মালদহপট্টির বাসিন্দা। ঢাকার ড্যাফোডিল ইউনির্ভাসিটি থেকে তিনি অনার্স পাস করেন। ২০১০ সালের প্রথম দিকে চার হাজার টাকা দিয়ে চারটি ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ জাতের ছাগল কিনে বাড়ির ছাদে পালন শুরু করেন। এর এক বছর পর চারটি ছাগল থেকে তিনি লাভ পেতে শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি বড় পরিসরে একটি খামার করার জন্য বিরল উপজেলার রবিপুর সরকারপাড়ায় চার শতকের একটি জমি কেনেন। খামারটির নাম দিয়েছেন ‘আইমান গড ফার্ম’। 

এরপর তিনি ভারত থেকে হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি জাতের বিদেশি ছাগল কিনে আনেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এক সময়ের শিক্ষিত বেকার যুবক মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা। বর্তমানে তার খামারে ব্ল্যাক বেঙ্গল, হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি জাতের প্রায় ৫০টি ছাগল রয়েছে। এসব ছাগল পরিচর্যা এবং পাহারা দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে দুইজন সহকারী।

জুলফিকার করিম বলেন, আমি পড়ালেখা করে চাকরির পেছনে ছুটিনি। আমি চেয়েছিলাম নিজে উদ্যোক্তা হতে। বর্তমানে আমার খামারে ৫০টি ছাগল রয়েছে। প্রতিদিন ছাগলগুলোর জন্য দুই হাজার টাকার কাঁঠাল পাতার প্রয়োজন হয়। বিদেশি জাতের এই ছাগলগুলো প্রতি বছর দুই বার বাচ্চা দেয়। একটি এক বছর বয়সের ছাগলের ওজন ১০০ কেজি মতো হয়ে থাকে। প্রতি মাসে ৫-১০টি ছাগল এখান থেকে অনেকে কিনে নিয়ে যান। 

তিনি আরও বলেন, আশপাশের এলাকার অনেক যুবক আমার কাছে এসে ফার্ম করার ব্যাপারে পরামর্শ নিচ্ছেন। আমি তাদের যথেষ্ট পরিমাণ সহযোগিতা করছি। যাতে করে তারাও চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে একজন ভালোমানের উদ্যোক্তা হতে পারে। 

ফার্মের ছাগল রক্ষাবেক্ষণ কাজে নিয়োজিত রয়েছেন জেলার পার্বতীপুর উপজেলার কানাইঘাটী কাজীপাড়ার শিক্ষিত বেকার যুবক জাহিদ হাসান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি পড়ালেখা শেষ করে অনেক জায়গায় চাকরির আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো জায়গায় পায়নি। তাই আমি আদনান জুলফিকার করিমের ভাইয়ের ফার্মে কাজ নিয়েছি। আমি এখানে প্রায় সাত বছর ধরে কর্মরত রয়েছি। ভবিষ্যতে আমি নিজ বাড়িতে ছোট পরিসরে একটি ফার্ম করার চিন্তা করছি। 

ফার্মের কর্মরত রবিপুর সরকার পাড়ার অপর এক শিক্ষিত বেকার যুবক সানোয়ার হোসেন মুন্নান বলেন, এক সময় অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়ে অনেক সমস্যা পড়তে হয়েছিল। এ ফার্মে কাজ করার পর থেকে আমি আজ স্বনির্ভর হয়েছি। আমি পরিবার খুব সুন্দরভাবে চালাতে পারছি।

দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শাহিনুর আলম বলেন, আদনান জুলফিকার করিম এক সময় আমার কাছে বিদেশি জাতের ছাগল পালনের ব্যাপারে পরামর্শ নিতে আসছিলেন। আমি তাকে বিদেশি হরিয়ানা, তোতাপারি ও যমুনাপারি জাতের ছাগল পালনের ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছি। তিনি এখনও প্রায় আমাদের কার্যালয়ে এসে বিভিন্ন ছাগলের ব্যাপারে পরামর্শ নেন। তার মতো যদি কেউ আমাদের কাছে যে কোনো প্রাণির ব্যাপারে পরামর্শ নিতে আসেন আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।