• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সারাদেশের সাত স্থানে দুদকের অভিযান

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০১৯  

ঘুষ গ্রহণ, গ্রাহক হয়রানি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে সারাদেশের সাত স্থানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগে পেয়ে বৃহস্পতিবার এসব অভিযান চালানো হয়। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (টোল ফ্রি হটলাইন- ১০৬) এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়ার সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম রাজধানীর স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে ফার্মাসিস্ট নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক।  

সরেজমিন অভিযানে দুদক টিম জানতে পারে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ফার্মাসিস্ট পদের জন্য গত ২৬ অক্টোবর ২০১৯ অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় মোট ৭১৮ জন অংশগ্রহণ করেন, এরমধ্যে উত্তীর্ণ ৩৮৬ জনের মৌখিক পরীক্ষা ০৭ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে নেয়া হয়। টিম দৈবচয়ন পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষার বেশ কয়েকটি উত্তরপত্র পরিক্ষা-নিরীক্ষা করে তিনটি উত্তরপত্রে হুবহু একই উত্তর প্রদান করা হয়েছে মর্মে উদঘাটন করে। এছাড়াও বেশ কিছু উত্তরপত্রে হাতের লেখায় ব্যাপক বিস্তর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। সার্বিক বিবেচনায় উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে মর্মে দুদক টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়। টিম পরবর্তী কার্যক্রমের প্রয়োজনে লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র উদ্ধার করে। এ অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।

এদিকে, নোয়াখালী হতে ফেনী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ফেনীর ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। ফেনী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চলাকালে দুদক টিম জানতে পারে যে, গ্রাহকদের ঝামেলা এড়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে ফেনীর বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো গ্রাহকদের নিকট হতে জরুরি পাসপোর্ট বাবদ ৯,৫০০/-নরমাল পাসপোর্ট গুলোতে ৫,৫০০/-টাকা আদায় করছে। এ বিষয়ে অধিকতর সচেতন হতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে দুদক টিম।

অপরদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ফেনী'র ভূমি অধিগ্রহণ শাখার উচ্চমান সহকারীকে ১০% কমিশন না দেয়ায় ক্ষতিপূরণের চেক প্রদানে হয়রানি করার অভিযোগে অভিযান পরিচালনাকালে দুদক টিম দেখতে পায় যে, পরশুরাম সহকারী জজ আদালতের দেওয়ানি মামলা নম্বর ১৩৬/২০১৮ এর বিবাদী মোট ২২ জন। গত ০৬/০৮/২০১৯ এবং ২৬/০৮/২০১৯ তারিখে যথাক্রমে ১৭ নম্বর বিবাদী জনাব মোহাম্মদ ইসমাইল মজুমদার ও ২২ নম্বর বিবাদী জনাব আবু তৈয়ব অধিকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করলে ১৭ নম্বর বিবাদী মো. ইসমাইল মজুমদারের মামলা রয়েছে বলে তাকে টাকা দেয়া না হলেও একই মামলার ২২ নম্বর বিবাদী জনাব আবু তৈয়ব ০২/০৯/২০১৯ তারিখে ক্ষতিপূরণের চেক পান। সার্বিক রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দুদক টিম এর নিকট প্রতীয়মান হয়েছে যে, চাহিদামতো ১০% কমিশন না দেয়ায় ১৭ নম্বর বিবাদী মোহাম্মদ ইসমাইল মজুমদারকে ক্ষতিপূরণের চেক চেক প্রদান করা হয়নি। এ দুর্নীতির পেছনে বিরাজমান চক্রের উৎস উদঘাটনে বিস্তারিত অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে অভিযান পরিচালনাকারী টিম।

এছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, জামালপুর কর্তৃক বৈদ্যুতিক সংযোগ প্রদানের নামে ঘুষ গ্রহণ ও গ্রাহক হয়রানির অভিযোগে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে জেলেদের জন্য সরকার নির্ধারিত ভাতা প্রদান না করার অভিযোগে এবং স্থানীয় প্রভাবশালী গোষ্ঠী কর্তৃক সরকারি জায়গা দখলপূর্বক দোকান ভাড়া দেয়ার অভিযোগে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান না করে প্রাইভেট ক্লিনিকে সেবা প্রদানের অভিযোগে যথাক্রমে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, টাঙ্গাইল, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, কুমিল্লা ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চারটি পৃথক অভিযান পরিচালিত হয়েছে।