• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

বেরোবিতে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে কর্তৃপক্ষ, বরখাস্ত ৪

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ অক্টোবর ২০১৯  

ভয়াবহভাবে মাদক ছড়িয়ে পড়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এতে জড়িয়ে পড়েছেন। মাদকের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট থাকায় সম্প্রতি তিন কর্মচারী ও এক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং অপর এক কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মাদক সেবনের সময় তারা পুলিশের হাতে আটক হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।

এছাড়া সন্ধ্যার পর বহিরাগতরাও ক্যাম্পাসকে মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে ব্যবহার করে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে কর্মরত এমএলএস মো. রায়হান প্রধান গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রংপুর নগরীর ৩২নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত সর্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গাঁজাসহ তাজহাট থানা পুলিশের হাতে আটক হন। পরে তাজহাট থানা পুলিশ মাদকের মামলা দায়ের করলে রোববার (৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বহিষ্কার করে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন স্বাধীনতা স্মারকের বেদিতে গাঁজা সেবনরত অবস্থায় পরিসংখ্যান বিভাগের অফিস সহকারী মনিরুজ্জামান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অফিস সহকারী এনায়েতুল করিমকে আটক করে পুলিশ। তারা দুজনও সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। এ ঘটনার এক মাস আগে (৩১ জুলাই) দিনাজপুরের বিরামপুরে ফেনসিডিলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মকর্তা (গ্রেড-১) মোক্তারুল ইসলামকে আটক করে বিরামপুর থানা পুলিশ। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।

এদিকে, গত বছরের ৩১মে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার হাবিলদার শাহ্ সোহেল মিয়া পুলিশের হাতে আটক হন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে। পরে ৬৩তম সিন্ডিকেট সভায় তাকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বেরোবি’র কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির আশেপাশে, স্বাধীনতা স্মারক চত্বর, একাডেমিক ভবনগুলোর আশেপাশে বহিরাগতদের মাদকের আড্ডা বসে। এক গ্রুপ চলে গেলে বসে আরেক গ্রুপ। এভাবে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। 

এদিকে, মাদক সেবনের অভিযোগ আছে কিছু শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেও। তাদরে সহযোগিতায় আবাসিক হলগুলোতে নিয়মিত মাদকের আড্ডা বসান মাদকসেবীরা। কোনো কোনো ছাত্রনেতার ছত্রছায়ায় হলগুলোতে বহিরাগতদের মাদকের আড্ডা বসলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। এছাড়া কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধেও মাদক নেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবে তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো প্রমাণ না থাকায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আতিউর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছে বলেই অভিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বহিরাগতদের ঠেকাতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া আছে।’

ক্যাম্পাসে মাদকের ঘটনা আগের চেয়ে অনেক নিয়ন্ত্রণে বলেও দাবি করেন প্রক্টর।

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ডক্টর নাজমুল আহসান কলিমউলল্লাহ বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধেই মাদেকর সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা মিলেছে তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসন সর্বদা সচেতন।’