• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

বেরোবির ১২ বছরে পদার্পণঃ শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৯  

২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। গত শনিবার ১২ বছরে পদার্পণ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। কেমন চলছে বিশ্ববিদ্যালয়? ভৌত অবকাঠামো, শিক্ষা, গবেষণা প্রভৃতি ক্ষেত্রে কী উন্নয়ন হয়েছে? বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা কি? প্রাপ্তির খাতাতেই বা কি কি যুক্ত হয়েছে এই ক’বছরে? ১২ বছরে পদার্পণে বিভিন্ন প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কথা জানাচ্ছেন ভিসি ও শিক্ষার্থীরা।  

ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ভিসি হিসেবে যোগদানের পর থেকে দুই বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষা, গবেষণা প্রভৃতি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। পরিবেশ-বান্ধব, নারী-বন্ধব এবং অনিয়ম-অনাচারমুক্ত নিরাপদ সবুজ ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্বমানের পরিকাঠামোসমৃদ্ধ রোল মডেল হিসেবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

আমার স্বপ্নের ক্যাম্পাস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে যে জ্ঞান ও সম্মান পেয়েছি তা চিরস্মরণীয় বলে জানালেন ইতিহাস ও প্রত্নতথ্য বিভাগের মামনুর রশীদ মামুন।

তিনি বলেন, অবহেলিত উত্তর জনপদের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীরা জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কিন্তু প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ শিক্ষক রাজনীতির কবলে। সম্মানিত শিক্ষকগণ একাধিক ভাগে বিভক্ত। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের উপর। কয়েকটি বিভাগে সেশনজট রয়েছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানসিক যন্ত্রণা দেয়। সবাই মিলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আরো অধিক সময়, শ্রম ও জ্ঞান প্রয়োগ করলে শিক্ষার্থীদের আলোকিত করা সম্ভব।

জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে পড়ছেন এশা শারমিন হক। তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ বছরে প্রাপ্তির তালিকা নেহাতই কম নয়। 

তিনি বলেন, অনেক আন্দোলন-সংগ্রাামের পর বিশ্ববিদ্যালয়টি আজ পরিচিতির পাশাপাশি সুনাম অর্জনে সক্ষম হয়েছে। প্রাপ্তির খাতায় প্রতিনিয়তই নতুন নতুন পাওয়া যুক্ত হচ্ছে। পর্যাপ্ত যাতায়াত সুবিধা, এমফিল পিএইচডি কোর্স চালু, ক্যাম্পাস রেডিও যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম, বিভিন্ন রকম সংগঠনের সফল কার্যক্রম, নিরাপদ ক্যাম্পাস, বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের আগমন যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষুদ্র সময়ের প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে আশা করা যায় খুব দ্রুত আমাদের বাকি প্রত্যাশা গুলোও বাস্তবায়নের মুখ দেখবে।   

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ছেন মোস্তফা কে মুরাদ আহমেদ।

 

তিনি বলেন, ১১ পেরিয়ে ১২ তে পা রাখলো প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াটাই একটা স্বপ্ন ছিল। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, তারচেয়েও বড় প্রাপ্তি হল এই প্রিয় বিদ্যাপীঠ আমাকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে পড়ছেন সিরাজুল ইসলাম সাগর।

তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের বাতিঘর আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ, যোগ্য, বিবেকবান, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি করবে এটাই প্রত্যাশা।

ম্যানেজম্যান্ট স্টাডিজ বিভাগে পড়ছেন জান্নাতুল ফেরদৌস তমা।

তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে দিয়েছে একটি দ্বিতীয় পরিবার। বাবা-মা থেকে দূরে এসে একটি নতুন পরিবার, সংগঠন, শিখেছি দায়িত্ববোধ, শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি নতুন কিছু।

সবুজ ছায়াঘেরা ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হচ্ছে সহায়ক বন্ধু-বান্ধবী, অনুজ-অগ্রজ, ভাই-বোন ও অত্যান্ত আন্তরিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলে জানালেন সিরাজুম মুনিরা। তিনি পড়ছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।

তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যে সম্ভাবনা নিয়ে ক্যাম্পাসে এসেছে তার উন্মুক্ত পরিচর্যা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট, গবেষণার পরিবেশের অভাব রয়েছে। তবে, উপাচার্যসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব সমস্যা কাটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। সেশনজটের কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে হতাশা কাজ করে আশা করি তা দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভব।