• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

ভারতের জনতার সমর্থনও শেখ হাসিনার দিকে

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

বাংলাদেশের নির্বাচনের দামামা বেজে গেছে। কাগজে কাগজে নির্বাচনের খবর। বিভিন্ন আঙ্গিকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা বিবিধ বিশ্লেষণ। তার মধ্যে একটা প্রসঙ্গ বারেবারে উঠে আসছে তা হল বাংলাদেশের এবারের নির্বাচনে ভারত এত উদাসীন কেন?

বেশ কিছু বিশিষ্ট জনের উক্তি উল্লেখ করে এটা বলা হচ্ছে যে ভারত বা ভারতীয়রা বাংলাদেশের এবারের নির্বাচন নিয়ে সম্পূর্ণ নিরুত্তাপ। আরাম কেদারায় বসে এই সহজ সমীকরণ করে যারা ভারতের উদাসীনতা নিয়ে নিশ্চিন্তবোধ করছেন তাদের এককথায় বলা যায় যে তাদের আগে বুঝতে হবে ভারতীয়রা বাংলাদেশের নির্বাচনের কী ফলাফল হোক চায়। ভারতীয়রা মানে পশ্চিমবঙ্গবাসী আমজনতা নয়। বর্তমানে আন্তর্জালের সৌজন্যে একজন গুজরাট বা কেরলের অধিবাসী বাংলাদেশের সঠিক অবস্থান জানেন। পূর্বের মত একজন বাংলাদেশির বলতে হয় না তাদের দেশটা পৃথিবীর ঠিক কোনো জায়গায়। একইভাবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সার্বিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আন্তর্জালের বিস্তারের সময় বড় জোর গত দশ বছর। কাজেই প্রচারের গুণে ভারতীয়দের কাছে বাংলাদেশ মানে শেখ সাহেবের পরিবার। আরো নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে শেখ হাসিনা। কাজেই ভারতের শাসন ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন তারা জনমতের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস করেন না। কাজেই প্রথমেই দেখা যাক ভারতের জনমত বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনে কী চাইছেন?

গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচলের প্রাক্কালে সুজাতা সিং বাংলাদেশে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর দুই দিনের সফরে ঢাকা আসেন। এসময় তিনি অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং একতরফা নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য তার ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। এরশাদ সংবাদ সম্মেলন করে তার ওপর চাপ প্রয়োগের কথা সবাইকে জানিয়ে দেন। এরশাদ জানান, সুজাতা সিং তাকে অনুরোধ করেছেন জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচনে অংশ নেয়। তা নাহলে জামায়াত-শিবিরসহ উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উত্থান ঘটবে বাংলাদেশে। তারা বাংলাদেশের ক্ষমতা গ্রহণ করবে। এরশাদ বলেন, আমার কাছে সুজাতা সিং জানতে চেয়েছেন আমি সেটা চাই কি-না। জবাবে আমি বলেছি 'দেশের এখন যে অবস্থা তাতে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না, নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। সারাদেশে, গ্রামে-গঞ্জে সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায়, আমার দলের নেতা ও প্রার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, কেউ নির্বাচনি এলাকায় যেতে পারছি না।' তখন সুজাতা সিং আমাকে বলেছেন 'কেন, এই সরকার তো ভালো কাজ করেছে, আপনি থাকুন'। সাংবাদিকদের এরশাদ বলেন, আমি তাকে বলেছি-আপনি রাস্তায় গিয়ে একশজন মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন, কেউ এ সরকারের পক্ষে বলবে না, তারা সবাইকে শত্রু বানিয়ে ফেলেছে। তাদের বাক্সে কোনো ভোট পড়বে না।

এরশাদের এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পরিস্কার হয়ে যায় সুজাতা সিংয়ের তখনকার ঢাকা সফরের উদ্দেশ্য এবং একতরফা নির্বাচনে কংগ্রেস সরকারের প্রকাশ্য অবস্থানের কথা। একজন কূটনীতিক হিসেবে তার এ জাতীয় দূতিয়ালি এবং বিতর্কিত ভূমিকা দারুনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয় কূটনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলে। একে অনেকেই ভারতের হস্তক্ষপ হিসেবে দেখেছিলেন- যদিও ভারত দাবি করে যে ভারতের আসল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে একটা সাংবিধানিক বিপর্যয় এড়ানো।বাংলাদেশে বিগত নিবার্চনে বিএনপি জোট অংশ নিতে রাজি হয়নি বলেই সেই সময় গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছিল বলে ভারতের দাবি।

কিন্তু তারপরে কেটে গেছে ৫ বছর। ভারতে আসীন হয়েছে নতুন সরকার। ভারতের নতুন সরকারের পক্ষ থেকে, কোনো মিডিয়ার পক্ষ থেকে, কোনো সুশীলের পক্ষ থেকে বা কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একজনও কি বলেছেন যে সেদিন পররাষ্ট্র সচিবকে পাঠিয়ে ভারত যেভাবে সেই নির্বাচনকে বৈধতাদান করেছিল তা গণতন্ত্র বিরোধী? পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ বিশেষ কয়েকটি কারণে চেয়েছিল যে ক্ষমতায় থাকুন শেখ হাসিনা। সেই কারণগুলি কি কি? গত নির্বাচনে বিএনপি অনেক বেশি জামাতের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখনও আছে। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতিই জামাত আনুষ্ঠানিক ভাবে অনাস্থা প্রকাশ করেছে এর আগে। বি এন পি তাদের হাত ধরে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার (আমরা বলি তদারকি সরকার) চেয়েছিলেন তাতে রাজী হন নি শেখ হাসিনা। তার দল বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ পথে নিয়ে যেতে পদে পদে বাধা পেয়েছে এতদিন ধরে। সামরিক শাসন ও মৌলবাদ হাত ধরাধরি করে হেঁটেছে সেখানে। কাজেই সে দেশে স্থিতিশীল সরকার গড়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনা বদ্ধপরিকর ছিলেন। এদিকে খালেদা চেয়েছিলেন নির্বাচন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়ত করে পুরো ব্যবস্থাটা এলোমেলো করে দিতে। এ সময় ভারতবাসীরা চেয়েছিল ভারত নাক গলাক। খবরের কাগজের নিবন্ধে, টেলিভিশনের টক শো’তে, রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছিল যে বাংলাদেশের এই গণতান্ত্রিক সংকটে ভারত কেন চুপ? অতএব ভারত সরকার নাক গলাল।

একথা সকলের জানা যে শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার ভারতের চেয়ে ঢের বেশি। এ কথা কমবেশি প্রায় সকল অর্থনীতিবিদই বলেছেন। বিশ্বব্যাঙ্ক এবং বহু আন্তর্জাতিক সংস্থা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। সমস্যা হচ্ছে, উন্নয়ন বাধা পায় যখন বাংলাদেশে আবার ধর্মীয় মেরুকরণ প্রধান রাজনৈতিক উপজীব্য হয়ে ওঠে। ২০০১ সালে আবারও নির্বাচন উত্তর সহিংসতার শিকার হন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। স্বাধীনতা উত্তরকালে এটি ছিল সবচেয়ে ভয়ানক। গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, জোড় করে বিয়ে, ধর্মান্তরিত করা, চাঁদা আদায় ও সম্পত্তি দখল কোন কিছুই যেন বাদ ছিল না সেময়ে। ভারতীয়রা সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী। তারা এই ব্যাপারটা মোটেই ভালভাবে গ্রহণ করে নি। কাজেই তাদের চোখে শেখ হাসিনা আলোকবর্তিকা। তারা তাই সবসময় মনে প্রাণে চায় শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকুন।

ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) সাম্প্রতিক পাবলিক অ্যাটিচুড সার্ভে বলছে যে ভোটে আওয়ামি লিগ জিতবে। মার্কিন সংস্থার সমীক্ষা অনুসারে, বাংলাদেশের ৬৬ ভাগ মানুষ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। এটি আইআরআই ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইআরআই একটি অলাভজনক নিরপেক্ষ সংস্থা বলে পরিচিত। কাজেই আন্তর্জাতিক মহলে বিশ্বাসযোগ্য। আইআরআই সমীক্ষার ৩৩ পৃষ্ঠার রিপোর্টে বলা হয়েছে যে শতকরা ৬২ ভাগ মানুষ মনে করেন দেশ সঠিক পথে চলেছে। শতকরা ৬৯ ভাগ মানুষ বর্তমান অর্থনীতি নিয়ে সন্তুষ্ট। শতকরা ৫৭ ভাগ মানুষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও খুশি। ২০১৫ সালেও আইআরআই সমীক্ষা করেছিল। এ ভাবে তাতেও রিপোর্ট ছিল ইতিবাচক। ২০১৫ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিল, অ্যাকশন এড বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি অব লিবারাল আর্ট যে সমীক্ষা করে তাতে শতকরা ৭৫ ভাগ যুব সমাজ মনে করে, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আরও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। শতকরা ৫২ ভাগ মানুষ হাসিনার পক্ষে। এই তথ্য ভারতীয়দের আপাতত স্বস্তি দিয়েছে।

খালেদা জিয়ার পুত্রের লন্ডন থেকে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসের ঘোরতর বিরোধী ভারতের বেশির ভাগ মানুষ। খালেদাপুত্র তারেক রহমানের সঙ্গে আছে জামাত। লন্ডনেও জামাত ও তারিক যৌথ ভাবে সক্রিয়। এই তো কিছু দিন আগে লন্ডনের আইনজীবী লর্ড আলেকজান্ডার কার্লাইল-কে ভারতে পাঠিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করানোর চেষ্টা হয়। জামাতের ওই প্রবীণ ব্রিটিশ আইনজীবী টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে আসছিলেন। দিল্লি প্রেস ক্লাবে তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনের কথা ঘোষণাও করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে দিল্লি বিমানবন্দর থেকেই লন্ডনে ফেরত পাঠায়। দিল্লির যুক্তি ছিল, টুরিস্ট ভিসায় এ দেশে এসে তিনি কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শামিল হতে পারেন না। ভারতীয়রাবাংলাদেশের কিছু অবদান কখনই ভোলে না। তার প্রথম হল বি এন পি ও জামাত জামানায় ফুলে ফেঁপে ওঠা উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলিতে জঙ্গি কার্যকলাপ বর্তমান শাসক দল সমূলে নিধন করেছে। সে কারণেই স্থল সীমান্ত চুক্তির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের চাপে অসম বিজেপির বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে মোদি চুক্তি করেছেন। কয়েকমাস আগে বিএনপি-র সংসদীয় দল ও আরও কয়েক জন খালেদা দূতও সম্প্রতি দিল্লি এসে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে ভারত যদি খালেদাকে পূর্ণ সমর্থন করে তবে খালেদা জামাতকেও পরিত্যাগ করতে পারে। দিল্লি এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি কারণ খালেদা জামাত ও মৌলবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক পরিত্যাগ করবেন এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ভারতের ইন্টেলিজেন্স অর্থাৎ রিসার্চ এন্ড অ্যানালিটিক উইং ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার দলের জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে গেছে।

ভোট পেতে অমিত শাহ আসাম ও অন্য কিছু জায়গায় ‘অবৈধ বাংলাদেশে অভিবাসী’দের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছিলেন। বিভিন্ন জনসভায় তিনি হুঁশিয়ারি দেন তাদের শনাক্ত করে ফেরত পাঠানো হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া খুবই সংক্ষিপ্ত এবং মাপা। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, অমিত শাহের বক্তব্য ‘প্রাসঙ্গিক নয়’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের হস্তক্ষেপের পর পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি অন্য নেতাদের পাশাপাশি অমিত শাহকেও অবৈধ বাংলাদেশি ইস্যুটি আর সামনে না আনার নির্দেশনা দিয়েছেন। আর এতেই প্রমাণ হয় বাংলাদেশের নির্বাচন দিল্লির কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলোর বেশিরভাগই কট্টর ইসলামপন্থী। এসব দল ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কে আগ্রহী নয়। তারা ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি ও বড় বড় প্রকল্পে ভারতের সহায়তার বিরোধিতা করে থাকে। তাদের দাবি, এসবের ফলে বৃহত্তম প্রতিবেশি দেশের কাছ থেকে বাংলাদেশের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হতে পারে।

বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নতি ও সেখানকার বহু মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের কারণে দ্বিপাক্ষিক রাজনীতির বয়ানে পরিবর্তন এনেছে। তাদের মতে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। এই মুহুর্তে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছে। ফলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক মহলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতীতে থাকা ভারত বিষয়ক মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে। বিদ্যুৎ এবং অবকাঠামো খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে যৌথ প্রকল্পগুলো থেকে দুই দেশের মানুষই লাভবান হয়েছে। বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে ইতিমধ্যেই শুল্ক কমিয়েছে ভারত। স্থল ও নৌপথে ঢাকার ট্রানজিট অধিকার বাড়িয়েছে দিল্লি। দিয়েছে অনেক সহজ শর্তের ঋণ।

কাজেই ভারতের আম জনগণ চাইছে শেখ হাসিনা আবার মসনদে বসুন। শেখ হাসিনার জয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই খুব সচেতনভাবেই ভারত এবার বাংলাদেশের নিবার্চন থেকে একটা দূরত্ব বজায় রাখতে চাইছে। বাংলাদেশে এবারের নিবার্চনী পরিবেশে এখন পযর্ন্ত ভারত-বিরোধিতার কোনো আবহ তেমন নেই, দিল্লির দৃষ্টিতে সেটাও অত্যন্ত ইতিবাচক একটা পদক্ষেপ। ফলে আগ বাড়িয়ে সে দেশের নিবার্চন নিয়ে অতি-সক্রিয়তা দেখিয়ে ওই পরিবেশ বিগড়ে দেয়াও কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এটাও হয়তো ভারত মাথায় রাখছে।

আরেকটি ইংগিতবাহী ঘটনাও ঘটেছে এরমধ্যে। বিএনপি ঘনিষ্ঠ ভারতের এক প্রাক্তন সাংবাদিক মন্ত্রী যুক্তরাজ্যে তারেক রহমানসহ অন্য বিএনপি নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, তিনি আওয়ামী লীগের চেয়ে বিএনপিকে সমর্থন করতেই বেশি আগ্রহী। দুর্ভাগ্যবশত বর্তমানের মিটু আন্দোলনের কারণে বিএনপির এই মিত্র ঝামেলায় পড়েলেন। দীর্ঘদিনের সাংবাদিকতা জীবনে অনেক নারীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠলে তিনি অস্বীকার করলেন এবং কোর্টে যাওয়ার হুমকি দিলেন। কিন্তু সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে এই মন্ত্রীর পদত্যাগের কারণে ভারত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতো বিশ্বস্ত মিত্র হারালো বিএনপি। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে ভারতীয়রা কি চাইছে এবং সে অনুযায়ী ভারত সরকার কি চাইছে। তাই এ’কথা নিশ্চিত করে বলা যায় ভারত সরকারের তীক্ষ্ণ নজরে আছে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন এবং ভারতীয়রা শেখ হাসিনাকে ফের মসনদে চাইছে।

-অমিত গোস্বামী