• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

ভালোবাসা যখন ঘৃণায় পরিণত হয়

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

আমাদের সমাজের অশিক্ষা, ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যায়, অত্যাচার, প্রতারণা দূর করা নিয়ে সব সময় কথা বলি, সংগ্রাম করি। কিন্তু আমরা কখনো বলি না বা বলতে চাই না যে, এই ধরনের অপরাধীরা আমাদের অনেকেরই পরিবারের মধ্যে রয়েছে।

এদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করাও অপরিহার্য। আজ আমি নাম উল্লেখ ছাড়াই নমুনা হিসাবে একটা পরিবারের কথা তুলে ধরতে চাই। যে পরিবার শিক্ষা, পরিচয়, অর্থে, দেশে, বিদেশে সুনামের সঙ্গে চললেও তাদের পরিবারে রয়েছে ভাইবোনের বঞ্চনাকারী ও অত্যাচারী এক কীট। এ ধরনের লিখা পাবলিকলি পোস্ট করা সঠিক নয় বলে আমি মনে করি। কারণ বাংলার লাখ লাখ পরিবারে এমনটি ঘটে। যদি পরিবারের কেউ দরিদ্র না হয় তখন তারা মনে করে এটা প্রকাশ করলে পারিবারিক গুডউইল একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে। এগুলো হয় পারিবারিকভাবে বসে মিমাংসা করতে হবে নতুবা ভুলে যেতে হবে। পরিবারের গুডউইল ধ্বংস হয় এমন কাজও সঠিক নয়। যে ক্ষতি হয়েছে সেটা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। তাই গুডউইল নষ্ট করে আরো ক্ষতি ডেকে আনা কি উচিত? পরিবারে বা বংশে কেউ কেউ এমন থাকে। তাদেরকে পারিবারিকভাবে মোকাবেলা করাও একটা দক্ষতা ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি সব কিছু বিচার বিবেচনা করেই আজ সারা দেশের মানুষের কাছে আমার এই বার্তাটি তুলে ধরছি। কারণ বাংলাকে সোনার বাংলা করতে হলে আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে এবং নিজেকে বা নিজের পরিবারকে দিয়ে শুরু করতে হব। দুর্নীতি করে না এমন লোক শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বে খুঁজে পাওয়া যাবে না, তবে পরিমাণ বা তার মাত্রার ওপর নির্ভর করছে পরিবর্তনের। ছোট ভাই-বোনদের জন্য কিছু করে যদি কোনো বড় ভাই-বোন তা সুদ-আসলে তুলে নেয় এবং সারাক্ষণ কঠিনভাবে মানসিক অশান্তিতে রাখে বা চেষ্টা করে। তখন ভালোবাসার সম্পর্ক ঘৃণায় পরিণত হয়। আমার এ লেখা পড়তেই মনে হবে আরে এ তো আমারই পরিচিত এক আপনজনের চরিত্রের একটি অংশ এবং আমি জানি এ বাংলাদেশের লাখ লাখ পরিবারের মনের কথা এবং যা আজ ঘৃণায় পরিণত হয়ে রয়েছে। আজ এই অপ্রিয় সত্যকে তুলে ধরতে এই লিখা তা হলো। অর্থনৈতিকভাবে ঋণগ্রস্ত ছোট ভাই-বোনের উপর বড়দের জুলুমের পরিমাণ যখন সীমা লঙ্ঘন করে, এবং ছোটদের প্রতি অত্যাচার এবং অবিচার করতে শুরু করে, তখন ঘৃণা ছাড়া ছোটদের আর কিছু দেবার থাকে না। সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয় ভালোবাসা এবং সম্পর্কের হয় অবনতি। সম্পর্ক তখন আর ভাই-বোনের মত থাকে না, যার প্রমাণ আমার এই লেখা। যেহেতু করব এমন একটি অপ্রিয় সত্য কথা যা সারা দেশের এক জলন্ত প্রতিচ্ছবি সেহেতু ধরে নেই এই পরিচিত আপনজন আজ সবার কাছে এখন একটি পুরনো নাম মাত্র।

যার ওপর ছিলো ভালো স্মৃতি বহু বছর আগে যখন সে বিয়ে করেনি। তার পর সে মনের অজান্তে হারিয়ে গেছে। সে কিছুই করেনি পরিবারের কারো জন্য। করেছে শুধু নিজেকে লোভি আর গড়েছে তার চারপাশে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রাচীর যা অন্ধকারে বন্ধ করে রেখেছে তার মনুষ্যত্বকে, দিনের পর দিন আর বছরের পর বছর। সামান্যতম ত্রুটি-বিচ্যুতি বড় করে তুলে ধরে সবাইকে নিচু করে তুলে ধরতে কৃপণতা করে না সে। এই ভদ্রলোকের এখন নিজের পরিবার হয়েছে এবং সে তাই নিয়ে ব্যস্ত। তার ছেলেকে বিদেশে এনে ছয় বছর তার সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে তাকে শিক্ষিত করে কাজ এবং স্থায়ী নাগরিকত্ব দিয়ে এখানকার সমস্ত সুযোগ- সুবিধা করে দেওয়া সত্বেও সে বা তার পরিবার খুশি হয়নি। সে সবার সব কিছু ভোগ দখল করে আসছে এত বছর ধরে, তার পরও সে খুশি নয়। তার সব থাকতেও সে অন্ধের মত পরিবারের সকলের সম্পদ গ্রাস করে চলছে। আজ সে বাকি পরিবারের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়েছে। কারণ সে শুধু নিতে শিখেছে, দিতে ভুলে গেছে। আজ এত বছর পর, প্রথম যখন তাকে বলা হয়েছে অন্যের সম্পদ থেকে সরে যেতে তখন সে হয়েছে পাগল। তার দীর্ঘদিন কারো সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় সে পড়ে আছে ১৯৮৫ সালের জগতে। আজ ২০১৮ সাল। সে মাঝখানের এত বছর সব থেকে বঞ্চিত শুধু ভোগদখল ছাড়া। সে শুধু নিয়েছে, দেয়নি কিছু। যার কারণে জং ধরেছে সম্পর্কের এত বেশি যে সেই ভালোবাসার সম্পর্ক এখন হয়েছে “গুড ফর নাথিং”। তাকে শ্রদ্ধা করার মত কিছু কি সে রেখে গেছে? যা দিয়েছিল তার দশ গুণ নিয়ে গেছে জোর করে। কিভাবে সে আশা করে ভালোবাসা? বহু বছর ধরে ঘৃণা জমা হয়েছে হৃদয়ে তাই আগুন জ্বলছে শরীরে এখন, “ঠু লেট তা নেভানো”।

আজ দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে এমন একটি কুৎসিত চরিত্রের মানুষের কথা। এ ধরণের কুৎসিত চরিত্রের মানুষ এখন বাংলার ঘরে ঘরে। দুর্নীতি, পরিবারকে ঠকানো, মিথ্যাকথা বলা এই গুলোকে কুৎসিত চরিত্রের মধ্যে ধরা হয়েছে। যে অসৎ ও দুর্নীতিগ্রস্থ তাকে লজ্জ্বা দেয়া যায় না। যে উলঙ্গ তাকে কি লজ্জ্বা দেবে? আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সমাজে তুলে ধরতে মিডিয়াতে যেতে হবে কি? পরিবারের গুডউইল অবশ্যই নষ্ট হবে। তখন প্রশ্ন হবে বাবা মাকে নিয়ে। সবাই সফল বাবা-মা হিসেবে যে সম্মান করে তাতে দাগ পড়বে। তা ছাড়া মিডিয়া বিচার করতে পারে না। মিডিয়া মানুষকে ছোট বা বড় করতে পারে। তারচেয়ে বরং ভালো আইনের সাহায্য নেওয়া। পরিবারের সম্মানও কম ক্ষুণ্ণ হবে। এমন ভাবে যখন ভাবা হচ্ছে ঠিক সেই সময় সেই পরিচিত আপনজন শুধু ঋণের বোঝা ভারি করতে সবার বিরুদ্ধে কম্প্লেন এবং তার যে একটি বড় ক্ষমতা রয়েছে তা দেখানো এটাই ছলছে তার কাজ পরিবারের প্রতি। আজ পাগলের সাথে পাগলামির খেলা শুরু হয়েছে। যদিও ইচ্ছে করছে দানবের নয় মানবের সমাজে ফিরে যেতে। কিন্তু দানব শেষ না করলে এরকম সৈরাচারির জন্ম হতে থাকবে। আর বাড়তে থাকবে সমাজে এবং দেশে এদের সংখ্যা এত বেশি যে, শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে মানবজাতিকে। এই ধরণের আপনজন রয়েছে দেশের সর্সত্রে, এখন প্রশ্ন কী ভাবে এদেরকে সৎ চরিত্রে ফিরে আনা সম্ভব? আদৌ কি সম্ভব? পারবে কি এরা নতুন করে ভালোবাসা দেখিয়ে প্রমাণ করতে? পারবে যে তারা সমাজের ও পরিবারের সত্যিকার আপনজন? তাহলে তাকে বা তাদেরকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে, যে অন্যায় তারা অতীতে এবং বর্তমান করছে, তারজন্য তাদেরকে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হতে হবে, তবেই ক্ষমা, নইলে নয়। তাকে বা তাদেরকে জানতে হবে আমার ধন আমার, তার ধন তার।

যে বা যারা পরিবারকে ভালোবাসে না, সে বা তারা দেশের শত্রু তাদের থেকে দুরে থাকতে অনুরোধ করছি। বুঝতে নিশ্চয় সহজ হবে এখন কেন সুশিক্ষার জন্য লড়াই আমার? সুশিক্ষার ওপর লিখছি আজ থেকে বছর খানেক ধরে, তাই আজ তুলে ধরলাম এমন একটি পারিবারিক জলন্ত উদাহরণ। এই সেই বর্ণচোরা মুখোশধারী মানুষ নামের দানবেরা যারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরো ফ্যামিলিকে ঠকিয়ে চলছে দীর্ঘ বহু বছর ধরে। এরা যখন ছাত্র বা সবে চাকরিতে ঢুকেছে, বিয়ে করেনি তখন তারা যা করেছে শুধু সেই ইতিহাস তারা বলে বেড়ায়। অথচ ৪০টি বছর পার হয়ে গেলো, দেখিনি বা খোঁজ খবর কিছুই নেয়নি তারা কারো। কী করে তারা দাবি করে সবার ভালোবাসা? শ্রদ্ধা? তারা তো ভুলে গেছে এসব ভালো কথা। তাদের কি মনে পড়ে এত বছর হয়ে গেল, কোনো দিন কি সব ভাই-বোন তাদের বাড়িতে একত্রে বা আলাদা ভাবে একবেলা খেয়েছে? না। কিন্তু কেন? তাদের সঙ্গে কারো দেখাও হয় না যখন তাদের ভাই-বোন বাড়িতে বা বাংলাদেশে যায়। কারন কী? কারণ ভালোবাসার মৃত্যু হয়েছে ৪০ বছর আগে। তাদের সব হয়েছে, তারা সব পেয়েছে। কিন্তু তারা তাদের ভালোবাসাকে কবর দিয়েছে। তাদের বাসাতে তাদের বাবা-মার শেষ মেমোরি যা ছিল, তিনারা বিদেশে এসে বলেছিলেন আজ থেকে ১৫ বছর আগের কথা হবে।

প্লেটের খাবার টেবিলে ঢেলে খেয়ে এসেছিলেন, কিন্তু কেন? তারা কি তা জানতো না? কেও আবার তার বাবাকে বলেছে তার ঘৃণা হয় “সে তার ছেলে এবং পরিচয় দিতে”, কিন্তু কেন? সে এখন লেগেছে পরিবারের বিভিন্ন ব্যক্তির চরিত্র নিয়ে কথা বলতে, সে কি ভুলে গেছে তার অতিত? এবং সে কিভাবে অত্যাচার করেছে আশেপাশের সবাইকে? তার কাছে কে কপপ্লেন করেছে? কি ডোকুমেন্টের উপর সে মিথ্যা সাজিয়ে এসব কথা বলে বেড়াচ্ছে? কে আছে যে তার হয়ে বলবে, হ্যাঁ আমি জানি সে যা বলছে ? তার তো এখন নিজেকে নিয়ে ভাবা উচিৎ। তাকে যদি বোনেরা নারীনির্যাতন এবং চরিত্রহীনতার অপরাধে কোর্টে হাজির করে, ভেবেছে কি এর পরিনতি কি হবে? তার এই অধপতনের কারনে দেশে যেতে মন চাই না। দেশে গিয়ে যদি আপন জনের সাথে দেখা না করা যায় তাহলে ঠিক হবে কি দেশে যাওয়া? আজ এত বছর পরে কলম ধরতে বাধ্য হয়েছি এদের অধপতনের কথা তুলে ধরার জন্য। সুশিক্ষা এবং মানবতার ধ্বংস নয়, ধ্বংস হোক তার নিজের মধ্যের কুশিক্ষা এবং সে ফিরে পাক তার মানবতা ও সুশিক্ষা। জয় হোক ভালোবাসার এমনটি কামনা করছি। আমি এখন এদেরকে নিয়ে গর্ব করতে ভুলে গেছি। এদের আমি ঘৃণা করি। জানিনে কত জন বাংলাদেশি এমনটি বেদনা নিয়ে বেঁচে আছে! একজন শিক্ষিত এবং ক্ষমতাবান ব্যক্তি যে শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে, এমন লোভি আপনজন কেউ চাই না। সুশিক্ষায় গড়া ভালোবাসার সমন্বয়ে ভরা সাধারণ পরিবার চাই। ধ্বংস করতে চাই ভালোবাসা দিয়ে সেই মুখোশধারী ও লোভি পরিবারকে এবং একইসাথে ফিরে পেতে চাই আমার সেই অতিতের আদর্শ পরিবারকে। “হাত জোড় করে দোয়া মাঙ,আয় খোদা! দয়াময়, আমার পরিবারের তরেতে যেন গো তোমার নসিব হয়”।

-রহমান মৃধা