• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

মানসিক ভারসাম্যহীন শিকলবন্দী বৃদ্ধাকে মুক্ত করলেন ডিসি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০১৯  

দীর্ঘ দুই বছর ধরে শিকলে বাঁধা জীবন থেকে মুক্তি পেলেন বৃদ্ধা লতিফুন বেগম। শুক্রবার রাতে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন ডিসি মো. আবু জাফর।

কয়েক দিন আগে শিকলে বাঁধা লতিফুনের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। পরে তা ডিসি আবু জাফরের নজরে আসে। এরপর তিনি তাকে উদ্ধার করেন।

লতিফুন বেগম আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউপির উত্তর গোবদা গ্রামের আছিমুল্লাহর স্ত্রী। তবে দুই থেকে আড়াই বছর আগে স্বামী তাকে তালাক দেন স্বামী। পরে শঠিবাড়ি বাজারের বিধবা বোন নুরজাহানের কাছে আশ্রয় নেন।

স্থানীয়রা জানায়, তালাকের কিছুদিন পরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন লতিফুন। ঝিয়ের কাজ ও বিধবা ভাতার অর্থে সাধ্যমতো বোনের চিকিৎসা করতে ব্যর্থ হন নুরজাহান। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার অভাবে দিনদিন অবনতি ঘটে লতিফুনের। অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে পড়ে তার চিকিৎসা। মানসিক ভারসাম্যহীন এ বৃদ্ধা পথচারীসহ বাজারের দোকানপাট ও এলাকাবাসীর ঘরবাড়িতে বেশ ক্ষতি করতে শুরু করেন। এতে বাধ্য হয়ে দুই বছর ধরে বাড়ির পাশে একটি গাছের সঙ্গে লতিফুনকে শিকলে বেঁধে রাখা হয়।

প্রতিবন্ধী বোনের চিকিৎসায় জেলা প্রশাসন এগিয়ে আসায় নুরজাহান বলেন, স্বপ্নেও ভাবি নাই বাহে। ডিসি সাব গাড়ি পাঠে দিয়া মোর অসুস্থ বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। আল্লায় ডিসি সাবের মঙ্গল করবেন।

এনডিসি শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ফেসবুকে লতিফুনের শিকলে বাঁধা ছবি ডিসি আবু জাফরের নজরে এলে খোঁজখবর ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী শুক্রবার রাতে আদিতমারী ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) জিআর সারওয়ার ও পুলিশ নিয়ে বৃদ্ধা লতিফুনের শিকল খুলে দেয়া হয়। পরে তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এনডিসি বলেন, লতিফুনকে সুস্থ করতে প্রয়োজনে দেশের ভালো হাসপাতালে পাঠানো হবে। জেলা প্রশাসন তার যাবতীয় খরচ বহন করবে।

তিনি আরো বলেন, সিভিল সার্জনসহ চিকিৎসক বোর্ডের সিদ্ধান্ত মতেই তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হবে। সেটা পাবনা মানসিক হাসপাতাল বা দেশের অন্য কোনো উন্নত হাসপাতাল হোক।