রংপুর-৩ আসনের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং রংপুরবাসীর প্রত্যাশা
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০১৯
গত ৫ অক্টোবরের নির্বাচনে, রংপুর-৩ আসনের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়েছেন রাহাগির আল মাহি, যিনি সাদ এরশাদ নামেই বেশি পরিচিত। সাদ এরশাদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবং রওশন এরশাদ দম্পতির সন্তান। সাদ এরশাদের এর পূর্বে কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ছিল না। এই প্রথম তিনি রাজনীতির মাঠের লড়াইয়ে নেমেছিলেন এবং প্রথমবারেই কিস্তিমাত করেছেন।
তবে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এবারের রংপুর-৩ আসনের নির্বাচনে, আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী না থাকাটা, সাদ এরশাদের বিশাল ব্যবধানে জয়ের একটি অন্যতম কারণ। এছাড়াও রংপুর-৩ আসন দীর্ঘদিন থেকে লাঙ্গলের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। কারণ ১৯৮৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে, রংপুর-৩ আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীক বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। এ থেকে রংপুরের মানুষদের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর প্রতি ভালোবাসা অনুমান করা যায়।
সাদ এরশাদ নির্বাচনের আগে থেকেই বলে আসছিলেন, তিনি তার বাবা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর আদলে, স্বপ্নের রংপুর গড়ে তুলতে রংপুরের জনগণের সাথে মিশে কাজ করতে চান। এখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি তার কথা কতটুকু কাজে প্রমাণ করতে পারেন, সেটাই দেখার বিষয়।
মূলত রংপুরবাসী, এরশাদকে তার নিজ এলাকার ছেলে হিসেবে ভালবেসে বহুদিন থেকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে আসছেন। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত রংপুরবাসীর প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির মধ্যে কোন সুন্দর সমন্বয় ঘটেনি। এর ফলে রংপুরের স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে অনেকেই এখন হতাশ। এখন পর্যন্ত আমাদের সরেজমিন অনুসন্ধানে রংপুরবাসীর যেসব সমস্যা এবং প্রত্যাশার কথা উঠে এসেছে, তা নিম্নরূপঃ
১) অপরিকল্পিত নগরায়নঃ
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে রংপুরকে বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে ঘোষণা দেন। মূলত এরপর থেকেই রংপুর শহরে আমূল পরিবর্তন আসতে থাকে। রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি, রংপুরের নগরায়ন প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করে।
কিন্তু সমস্যা হল, এই প্রক্রিয়ার পুরোটিই ছিল অপরিকল্পিত। মানুষজন যে যার জায়গায় যত্রতত্র বিল্ডিং এবং স্থাপনা তৈরি করে নাগরিক সৌন্দর্য বিনষ্ট করেছে। এক্ষেত্রে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এর ব্যর্থতার দায়ভার আছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশনে এখন পর্যন্ত নেই কোন নগর পরিকল্পনা বিভাগ। যার ফলে, একটি সুপরিকল্পিত নগর কেমন হতে পারে, তার কোনো সুস্পষ্ট ধারণা বা রূপরেখা রংপুর সিটি কর্পোরেশন দিতে পারছে না।
বিভাগ হওয়ার পরে, রংপুর সিটি কর্পোরেশন যা করছে তা হল সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন জায়গার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। কিন্তু সেসব নতুন জায়গা নামেমাত্র সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন। বেড়েছে ট্যাক্স, কিন্তু সেখানে নতুন করে কোন নাগরিক সুবিধা দেয়া সম্ভব হয়নি।
সঠিক এবং সুন্দর পরিকল্পনার অভাবে, শহরে যে গুটিকয় রাস্তা আছে তার বাইরে আর নতুন করে কোন রাস্তা তৈরি হয়নি। ফলশ্রুতিতে যানবাহনের চাপে অধিকাংশ সময়ই নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়কগুলোতে জ্যাম লেগেই থাকে। বর্তমানে বিশেষত সকালে অফিস টাইমে এবং সন্ধ্যায় এই জ্যাম চরম আকার ধারণ করে।
সিটি কর্পোরেশন এবং প্রশাসনের উচিত এখনই এই বিষয়ে নজর দেয়া।
২) রংপুরের প্রাণ, শ্যামাসুন্দরী খাল সংস্কারে উদাসীনতাঃ
রংপুর মহানগরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া প্রায় ১২২ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী খাল, রংপুর নগরীর প্রাণ শ্যামাসুন্দরী খাল। ১৮৯০ সালে তৎকালীন ডিমলার দানশীল রাজা, জানকী বল্লভ সেন তাঁর মা ‘শ্যামাসুন্দরী দেবী’র স্মরণে এ খাল খনন করেছিলেন।
শ্যামাসুন্দরীর মতো একটি খাল কেবল রংপুরেই নয়, বরং গোটা বাংলাদেশেই বিরল। ১৬ কিমি দীর্ঘ এবং স্থানভেদে ৪০ থেকে ১২০ ফুট প্রশস্ত এই খাল সিটি এলাকার উত্তর পশ্চিমে কেল্লাবন্দস্থ ঘাঘট নদী থেকে শুরু হয়ে, নগরীর সব পাড়া-মহল্লার বুক চিরে, ধাপ পাশারি পাড়া, কেরানী পাড়া, মুন্সী পাড়া, ইঞ্জিনিয়ার পাড়া, গোমস্তা পাড়া, সেন পাড়া, মুলাটোল, তেঁতুলতলা, নূরপুর, বৈরাগিপাড়া হয়ে মাহীগঞ্জের কেডি ক্যানেল স্পর্শ করে মিশেছে খোকসা ঘাঘট নদীতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্যামাসুন্দরী খালটি বেদখল হয়ে দুই ধারে বড় বড় স্থাপনা গড়ে উঠেছে। খালটিতে সংযোগ রয়েছে এ সকল স্থাপনার পয়ঃনিষ্কাশনের লাইনের। এখন খালটি সংকীর্ণ হতে হতে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। ময়লা আবর্জনার স্তূপে পানির প্রবাহ একদম বন্ধ। এর সাথে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। নাকে রুমাল দিয়ে চলা ফেরা করতে হচ্ছে নগরবাসীকে। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশার উৎপাত। দীর্ঘদিনের দাবির পরেও এই খালটি সংস্কারে কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি নজরে পড়েনি।
৩) রংপুরের ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট সংস্কার না করা এবং নতুন রাস্তা তৈরীর প্রতি উদাসীনতাঃ
রংপুর বিভাগ হওয়ার ৯ বছর এবং পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করার দীর্ঘ ৬ বছর অতিবাহিত হলেও, এখনও পর্যন্ত রংপুর শহরের রাস্তাঘাট রয়ে গেছে আগের অবস্থাতেই। বরং দীর্ঘদিন কোনরকম সংস্কার না করায়, রংপুর শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট হয়ে পড়েছে যাতায়াতের অযোগ্য। আর বর্ষার সময় হলে তো কোন কথাই নেই। শহরের অলিগলির রাস্তা তো দূরের কথা, শহরের প্রধান সড়কগুলোতেও ভাঙাচোরা আর খানাখন্দের মধ্যে পানি জমে সড়কগুলো হয়ে পড়ে যান চলাচলের অযোগ্য। এ বিষয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে আলোচনাকালে তিনি বলেন, কিছু জটিলতার কারণে রংপুরে রাস্তাঘাট সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছেনা। তবে এই জটিলতা খুব দ্রুত নিরসন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
৪) রংপুর তথা বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ, মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়া সত্ত্বেও, এখানে কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নেইঃ
রংপুর বিভাগ তথা বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ, মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা। এই এলাকার কর্মজীবী মানুষের মধ্যে, শতকরা ৬৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষিনির্ভর। অথচ এখানে আধুনিক কৃষি সম্প্রসারণ অথবা কৃষি উন্নয়নের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এখানে নেই কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফলে রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের কৃষি বিষয়ক সমস্যার সমাধানকল্পে বাস্তবিক কোনো অগ্রগতি নেই। এখনও এখানকার কৃষকরা সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে থাকেন। ফলে তাদের পরিশ্রম হয় অধিক এবং সেই হিসেবে ফসল ফলে কম। কিন্তু এখানে যদি একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয় এবং পাশাপাশি যদি একটি সর্বাধুনিক মানের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়, তাহলে এগুলি এই এলাকার প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের চাষ পদ্ধতি, উন্নত জাতের ফসল এবং আধুনিক প্রযুক্তি, কৃষি ক্ষেত্রে প্রয়োগের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। ফলে এখানকার কৃষকরা হবেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। একইসাথে এই এলাকা বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন এক মাইলফলক সংযুক্ত করবে।
৫) রংপুর বিভাগে পাইপলাইনে গ্যাস সংযোগ প্রক্রিয়ায় মন্থরগতিঃ
এই বছরের শুরু থেকেই পাইপলাইনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগে গ্যাস সংযোগ আসার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। গ্যাস সংশ্লিষ্ট শিল্প কল-কারখানার বিকাশসহ ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নেয়া সরকারের প্রায় ১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় রয়েছে।
কিন্তু কোন এক অজানা কারণে- এই প্রকল্পে চলে এসেছে ধীরগতি। রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের আকঙ্খার গ্যাস সংযোগে অনাকাঙ্ক্ষিত ধীরগতি, রংপুরের মানুষদের মনে তৈরি করেছে দ্বিধা এবং হতাশা।
৬) চিলমারী নদী বন্দর পুনরায় চালুকরণঃ
কুড়িগ্রামের ‘চিলমারী নদী বন্দর' উদ্বোধনের দুই বছরেরও বেশি সময় হতে চলল, কিন্তু এখনও বন্দরের কার্যক্রম চালু হয়নি। ফলে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এ পরিস্থিতিতে দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা ও নৌ পথের উন্নয়ন না হওয়ায় বন্দরটি অচল অবস্থায় পড়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা গতিশীল করতে, পুনরায় চিলমারী বন্দরটি সচল করার উদ্যোগ নেয় সরকার।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারী সফরে এসে চিলমারীকে নৌ বন্দর হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিছুদিন পর, ২৩ সেপ্টেম্বর চিলমারীর রমনা ঘাট নামক স্থানে পন্টুন স্থাপন করে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নদীবন্দর উদ্বোধন করেন, তৎকালীণ নৌ পরিবহন মন্ত্রী জনাব শাজাহান খান। কিন্তু দুই বছরের বেশি সময় হয়ে গেলেও এটি এখনও চালু হয়নি।
৭) রংপুরে কৃষিভিত্তিক ইপিজেড তৈরিঃ
রংপুর যেহেতু উত্তরাঞ্চলের একটি জেলা এবং একই সাথে বৃহত্তর উত্তরবঙ্গ নিয়ে গঠিত বিভাগ, সেহেতু রংপুর শহর থেকে পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী দেশগুলোতে খুব সহজেই কৃষিজাত পণ্য, যা আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন হয় এবং দেশের চাহিদা মিটিয়ে যেসব পণ্য আমরা বাইরে রপ্তানি করতে পারি, সেইসব পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে মজুদ এবং রপ্তানি উপযোগী করার জন্য রংপুরে একটি কৃষিভিত্তিক ইপিজেড তৈরি করার দাবি রংপুরবাসীর দীর্ঘদিনের। এতে করে স্থানীয় কৃষক এবং দেশ – দুইই উপকৃত হবে।
৮) রংপুর মেডিকেল কলেজকে রংপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তনকরণঃ
রংপুর মেডিকেল কলেজ রংপুর বিভাগের সর্বোচ্চ সুবিধা সম্পন্ন চিকিৎসালয়। এখানে শুধু রংপুর শহরের নয়, বরং রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার মানুষ প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে রংপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তনের দাবি অনেকদিনের।
এ বিষয়ে রংপুরের কৃতি সন্তান, মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জাতীয় সংসদে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে রংপুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার আবেদন জানান। তিনি তার ভাষণে বলেন, উত্তর জনপদের রংপুর বিভাগের আট জেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার ছোঁয়া রংপুরবাসীর নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য এই বাজেটে আমি রংপুর মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা এবং রংপুর কুড়িগ্রাম হাইওয়ের মাঝে তিস্তা পাড়ে, একটি শিল্পনগরী স্থাপনের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। সেইসাথে রংপুরের সিটি কর্পোরেশন এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের জন্য রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করছি।
তিনি আরও বলেন, রংপুরের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে দিবাকালীন ট্রেন চালু করা এবং ঢাকা রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করণের জন্য আমি রংপুরবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য রংপুর সরকারি কলেজ ও ঐতিহাসিক কারমাইকেল কলেজ আধুনিকায়ন, রংপুর কর কমিশনারের কার্যালয়ে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণ, রংপুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ, গার্মেন্টস পল্লী স্থাপন ও চালু করা এবং বালাসী ঘাট ব্রিজ নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে, উত্তরাঞ্চলের মানুষগুলির অবদান বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের জন্য এখনই আমাদের উদ্যোগ নেয়া বলে আমি মনে করি।
৯) রংপুর হাইটেক পার্ক দ্রুত বাস্তবায়নঃ
সারাদেশে নির্মিতব্য হাইটেক পার্কগুলো ঘিরে তিন লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের কথা বলা হলেও, এর বাস্তব অগ্রগতি এখনো খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন বাজেটে অন্তর্ভুক্ত প্রকল্প সংখ্যা ৬টি। এখানেই কর্মসংস্থান করবে সরকার। অবশ্য হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ সেন্টার ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনবল তৈরি করা হচ্ছে। হাইটেক পার্কগুলোর মাধ্যমে ২০২০ সালের মধ্যে ৫০০ কোটি ডলার এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সফটওয়্যার ও সেবা রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল, রংপুরসহ ১২টি জেলায় আইসিটি বা হাইটেক পার্ক স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। প্রকল্পের আওতায় অন্য জেলাগুলোর মধ্যে আছে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, কক্সবাজার, জামালপুর, নাটোর, গোপালগঞ্জ, ঢাকা এবং সিলেট। এর মধ্যে বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ এখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশও এগোয়নি। সর্বোচ্চ যে কাজগুলো হয়েছে, তার পরিমাণ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে। ২০১৭ সালে রংপুর জেলা প্রশাসন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট জমি হস্তান্তর করে। কথা ছিল প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু বাস্তবে প্রকল্পের জায়গায় শুধুমাত্র সাইনবোর্ড টাঙ্গানো ছাড়া, এখনো পর্যন্ত কোন কাজ করা হয়নি। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জমি বুঝে নেয়ার পর, রংপুর হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক জনাব শফিক উদ্দিন ভূঁইয়া বলেছিলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রংপুরে অন্ততপক্ষে ৫০০০ তরুন-তরুনীর কর্মসংস্থান হবে। এখানে উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা এখানে সফটওয়্যার, অ্যাপস, গেমস ও কার্টুন নির্মাণ করবে। কল সেন্টার প্রতিষ্ঠা হবে। তথ্যপ্রযুক্তিতে জ্ঞান সম্পন্ন তরুণ-তরুণীরা এখান থেকে আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে। কিন্তু সমস্যার কথা হল, এখন পর্যন্ত এই প্রোজেক্টের কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় পুরো পরিকল্পনাটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এই দাবিগুলো ছাড়াও রংপুরবাসীর অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে-
১০) রংপুর থেকে ঢাকা রোডের সাইডে রাস্তা সহ, চার লেনের প্রশস্ত সড়ক নির্মাণ।
১১) রংপুর-গাইবান্ধা-বগুড়া-শেরপুর-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন স্থাপন।
১২) রংপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সরাসরি ট্রেন সার্ভিস।
১৩) রংপুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ।
১৪) রংপুর বিভাগীয় শহর হিসেবে রংপুর বিকেএসপি গঠন।
১৫) রংপুর বিভাগীয় শহর হিসেবে আরও দুইটি বা তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, ইত্যাদি।
এক কথায় বলা যায়, এই দাবিগুলো রংপুরবাসীর প্রাণের দাবি। কাজেই গোটা রংপুরবাসী এখন গভীর আগ্রহে এবং আশায় বুক বেঁধে তাকিয়ে আছে, তাদের নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং তাদের ভালোবাসার একজন নেতা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ এর ছেলে সাদ এরশাদের দিকে।
তিনি নির্বাচনের আগে যেমনটি বলেছিলেন যে রংপুরের সব মানুষকে সাথে নিয়েই তাঁর বাবার আদলে স্বপ্নের রংপুর গড়ে তুলতে চান, সেই প্রতিশ্রুতি তিনি কতটুকু ঠিক রাখতে পারবেন, সেটা সময়ই বলে দেবে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি অনেক জায়গাতেই নিজের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। যেমন নির্বাচনের সময় তিনি রংপুরবাসীদের প্রতিশ্রুতি দেন, যে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার পরেও রংপুর ছেড়ে যাবেন না। সুখে দুঃখে তিনি তাদের পাশে, তাদেরই একজন হয়ে থাকবেন। এছাড়াও নির্বাচনে জয়লাভের সাথে সাথেই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী এবং চাচাত ভাই, আসিফের সাথে দেখা করে একসাথে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি শপথ গ্রহণ করার পরেও জানিয়েছেন যে তিনি নির্বাচনের আগে করা তাঁর প্রতিশ্রুতি একটিও ভুলে যাননি। তিনি আবারও সব রংপুরবাসীকে সাথে নিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ রংপুর গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেন।
এই নির্বাচনের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক যেটি, সেটা হল - আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির জন্য আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়। যে কারণে মহাজোটের অন্যতম শরিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির বিজয় সুনিশ্চিত হয়। এটি মহাজোটের দলগুলির মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্যের ইঙ্গিত বহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় বলা যায়, নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাদ এরশাদ যদি সত্যিকার অর্থে রংপুরবাসীর চাওয়াগুলি পূরণে সচেষ্ট হন, তাহলে সরকারের দিক থেকেও আন্তরিকতার কোনো অভাব থাকবে না।
বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়নের যে মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় রংপুরেও লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। আগে রংপুর তথা বৃহত্তর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ছিল অবহেলিত এবং মঙ্গা প্রবণ এলাকা। কিন্তু এখনকার বৃহত্তর রংপুরের দিকে তাকালে, সেই চিত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি চিত্র দেখা যায়। যদিও এখনও রংপুর বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকখানি পিছিয়ে আছে, কিন্তু এই সরকারের আন্তরিকতা এবং অবদানে সেই তফাৎ হয়তো খুব শীঘ্রই ঘুচে যাবে। রংপুর-৩ আসনের উন্নয়নে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা যেমন প্রয়োজন, ঠিক তেমনই রংপুরের সর্বস্তরের জনগণেরও চেষ্টা করা উচিত, রংপুর কে যেন বাংলাদেশের সমস্ত জেলার মধ্যে সম্পূর্ণ নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়।
- দ্বিতীয় সাক্ষাতেও গুজরাটকে হারাল দিল্লি
- খুন হওয়ার ভয়ে বাড়ি ছাড়লেন সালমান খান
- সব রোগ-ব্যাধি থেকে শেফা লাভের সূরা
- জিম্মি এক ইসরায়েলি-আমেরিকানের ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস
- কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- র্যাবের নতুন মুখপাত্র আরাফাত ইসলাম
- গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন
- গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
- মরিশাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠক
- এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
- সব ডিসি-এসপির সঙ্গে ইসির বৈঠক আজ
- হিট অ্যালার্ট আরো তিনদিন বাড়লো
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- বিআরটিএর অভিযানে ৪০৪ মামলায় ৯ লাখ টাকা জরিমানা
- ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উদযাপন
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা
- চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা
- উপজেলা নির্বাচনে বিজিবি মোতায়েন করা হবে
- পুলিশের প্রতি ১১ নির্দেশনা
- প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ২৬ প্রার্থী
- চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি ৫০ ভাগ
- শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- গাজার সেই শহরে আবারও নারকীয় হামলার ঘোষণা ইসরায়েলের
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি, ৫ যুগ্ম-সচিবের বদলি
- ‘সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে ভূমিসেবায় দুর্নীতি প্রতিরোধ করা হবে’
- জলবায়ু সহনশীল দেশ গড়তে নারীদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ
- অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করতে বললেন ভূমিমন্ত্রী
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- চিকিৎসা ব্যবস্থা যেকোনো মূল্যে সহজলভ্য করবো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- মানুষের জীবন সহনীয় করতে কাজ করছে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
- জামদানিকে আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত করা হবে: শিল্প সচিব
- রোহিঙ্গা সমাধানে নিউজিল্যান্ডকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান
- তুরস্কে আঞ্চলিক নির্বাচনে এরদোগান বিরোধীদের জয়
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- আইপিএলের মাঝপথে হঠাৎ দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ