• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

রাবেয়া ও রোকাইয়া এবং একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২০ আগস্ট ২০১৯  

দুই যমজ বোন রাবেয়া ও রোকাইয়া। জন্ম থেকেই দুজনের মাথা ছিল জোড়া লাগানো। চিকিৎসকদের কাছে এই জটিল অপারেশন ছিল যথেষ্ট কঠিন। অপারেশনের মাধ্যমে এদের আলাদা করাটা ছিল দুই বোনের বাঁচা মরার সংশয়। পাবনার চাটমোহরের রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা দম্পতির আর্থিক অবস্থায় নাজুক। কিভাবে ব্যয় ভার বহন করবেন এই জটিল চিকিৎসার, তা নিয়ে এই দরিদ্র পরিবারের চিন্তার শেষ ছিলো না।

বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। শত ব্যস্ততার মাঝেও ২০১৭ সাল থেকেই এই দুই যমজ সন্তানের খোঁজ খবর নেন আমাদের মানবিক প্রধানমন্ত্রী। তখন থেকেই এই দুই শিশুর যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় এবং সামগ্রিক সহায়তা করে আসছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। স্থানীয় সাংসদ মুকবুল হোসেনের মাধ্যমে এই শিশু দুটির অবস্থার খোঁজ রাখতেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

২০১৭ সালের নভেম্বরে ওদের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেসময় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, রাবেয়া–রোকাইয়ার মস্তিষ্ক আলাদা। কিন্তু ওদের পুরোপুরি আলাদা করার জন্য টিস্যু বাড়াতে হবে। পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাবেয়া-রোকাইয়াকে হাঙ্গেরি নেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।

সেসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাঙ্গেরিতে শিশু দুটির চিকিৎসার জন্য অনুদান পৌঁছে দেন শিশুদের মা-বাবার হাতে। প্রধানমন্ত্রীর হয়ে ওই অনুদান তুলে দেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাস্তব অর্থেই মানবতার নেত্রী। তিনি চিকৎসক ও রাবেয়া-রোকাইয়ার বাবা-মাকেও ধন্যবাদ জানিয়ে ওদের চিকিৎসার সাফল্য কামনা করেন।

হাঙ্গেরিতে টানা কয়েকমাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরার পর সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সিএমএইচের নিউরো অ্যানেসথেশিওলজিস্টদের তত্ত্বাবধানে নিউরো ও প্লাস্টিক সার্জনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশন, নিউরো সায়েন্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের শতাধিক সার্জন ও অ্যানেসথেশিওলজিস্ট এই দুই শিশুকে আলাদা করার জটিল অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন।

টানা ৩০ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর জোড়া মাথার যমজ দুই বোন রাবেয়া ও রোকাইয়া সুস্থ আছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) অস্ত্রোপচার করার পর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ ধরনের অস্ত্রোপচার অত্যন্ত জটিল এবং সাফল্যের হার খুব বেশি নয়। এ ধরনের অস্ত্রোপচারের পরও সব সময় ঝুঁকি এবং বেশ জটিলতা থাকে। তবে অস্ত্রোপচারের পর রাবেয়া এবং রোকাইয়ার অবস্থা এখন ভালোর দিকে।