• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

শেখ কামাল দেশের সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২০  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শেখ কামাল বেঁচে থাকলে দেশকে অনেক কিছু দিতে পারতো। সে তার বহুমুখী প্রতিভা দিয়ে দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন- পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্য-স্বজনদের পাশাপাশি আর্মি অফিসাররা তাদের সহকর্মীদেরও হত্যা করেছে। আজ দেশের মানুষ মারা গেলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছে জনগণ বিচার চায়। 

বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ভবনে এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সন্তানই বাবার হাত ধরে স্কুলে গেলেও আমাদের সেই সুযোগ হয়নি। বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনকে দেশ ও মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করায়, পরিবারের বড় ছেলে শেখ কামালকে শৈশব থেকেই ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মায়ের সাথে পরিবারের অনেক দায়িত্বও পালন করতে হয়েছে।

পঁচাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে চেতনা নষ্ট করার চেষ্টা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এখন একজন ব্যক্তি মারা গেলেও মানুষ আমার কাছে বিচার চায়। কিন্তু পঁচাত্তরে জাতির পিতাসহ তার পরিবারের তিন মুক্তিযোদ্ধা ও আর্মি অফিসার দুই ভাই হত্যার বিচার পাইনি। 

রাজনীতি ও আন্দোলনে শেখ কামালের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছয় দফা দাবির সময় থেকে প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে কামাল সক্রিয় ছিলো। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির পিতা গ্রেফতার হলে কামাল সে সময় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ক্রীড়াঙ্গনে শেখ কামালের অবদান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধানমন্ডিতে খেলাধুলার আয়োজন এবং আবাহনী ক্লাব প্রতিষ্ঠা ক্রীড়াঙ্গনে কামালের সবচেয়ে বড় অবদান। মুক্তিযুদ্ধের পর কামাল আবাহনীকে আরো শক্তিশালী করে।

আবাহনীর জন্য কামালের গভীর ভালবাসা ছিলো উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে জার্মানি যাওয়ার আগে কামাল তার কাছে ক্লাবের ফুটবল খেলোয়াড়দের জন্য অ্যাডিডাস বুটস আনতে বলেছিলো। কামাল তার নিজের জন্য কখনোই কিছু চায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কামাল গান গাইতো ও সেতার বাজাতো। সে স্পন্দন শিল্প গোষ্ঠী’ নামে একটি সঙ্গীতের ব্যান্ড দলও গঠন করে। পাশাপাশি, কামাল ঢাকা থিয়েটার প্রতিষ্ঠায়ও ভূমিকা রাখে। কামাল আজ আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার হাতে গড়া আবাহনী ও স্পন্দন এখনো আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, কামাল আমার দুই বছরের ছোট ছিলো। কিন্তু সে অনেক পরিপক্ক ও বাস্তবজ্ঞান সম্পন্ন ছিলো। পাশাপাশি তার আরো অনেক গুণ ছিলো। ছোটবেলা থেকেই কামালের দায়িত্ববোধ ছিলো। মাকে সে ঘরের কাজে সাহায্য করতো।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য হত্যার বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা কখনই ভাবেননি যে তাদের এভাবে সবাইকে হারাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ কামালকে তারা হত্যা করে, যাদের সঙ্গে (কামাল) একজন সেনাকর্মকর্তা হিসেবে এবং ওসমানির এডিসি হিসেবে, সে কাজ করেছে এবং একসঙ্গে থেকেছে।

তিনি বলেন, তারা (খুনিরা) নিয়মিত তাদের বাড়িতে যেত। তাদের বাড়িতে খাবার ও নাশতা খায়নি এমন কেউই ছিলো না। তারা কামাল ও জামালের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের গুলি চালায়।

প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগকে জনগণকে সেবা করার এবং বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকারীদের বিচারের সুযোগ দেয়ায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার ছোট ভাই শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের শুভেচ্ছা জানান। পরে তিনি শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রকাশিত একটি স্মৃতিগ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করেছেন।