• মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

শোকাবহ আগস্ট: বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন সবার হৃদয়ে

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ আগস্ট ২০২০  

মো. আবুল কাশেম

যুগে যুগে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যতিক্রমী কিছু মানুষের বিরল উপস্থিতি এ পৃথিবীকে মহিমান্বিত করেছে। এ রকম একজন আলোক প্রদীপ হলেন সর্বকালের সেরা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার জন্ম না হলে হয়তো এখনও পর্যন্ত আমরা পরাধীন থাকতাম। বঙ্গবন্ধু একটি আবেগের নাম। বঙ্গবন্ধু একটি চেতনা, সর্বোপরি বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শের নাম। তার কথা মনে হলেই আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। কারণ বঙ্গবন্ধুর জীবন, তার কর্মস্পৃহা, তার দূরদর্শিতা আর দশজন মানুষের চেয়ে ছিল আলাদা।

বঙ্গবন্ধুর কাজকর্ম ছিল সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী। মূলত এখানেই জাতির পিতা অসাধারণ। আর এ কারণে সর্বস্তরের বাঙালির প্রাণের স্পন্দন এ মহান ব্যক্তি। তার চেতনায় ছিল এ দেশ, দেশের মাটি ও মানুষ। তিনি ছিলেন সর্বক্ষেত্রে উদার। পদে পদে রয়েছে তার উদারতার উদাহরণ। তার ব্যক্তিজীবন উদারতার এক বিশাল ভাণ্ডার। তিনি চাইলেই হয়তো কোনো বিষয়কে সহজে পাশ কাটিয়ে যেতে পারতেন কিংবা কারও বিপদে পাশে না দাঁড়িয়ে নীরব থাকতে পারতেন। 

কিন্তু তিনি সব ঝামেলাকে কাছে টেনে নিয়েছেন। মানুষের বিপদকে নিজের বিপদ মনে করেছেন। সারাটা জীবন মানুষের জন্য কিছু করার প্রয়াস পেয়েছেন। নিজের বলে কিছু করেননি। পারিবারিক জীবনে বেশি সময় দিতে পারেননি। মূলত দেশটাকেই তিনি সংসার ভেবেছেন। এ দেশের কী করে ভালো হবে, এ চিন্তায় তিনি সবসময় মগ্ন থেকেছেন।

জাতির পিতার মহান আদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে তার ব্যক্তিগত জীবনে এবং এ দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে। জীবনের মায়া ত্যাগ করে সর্বদা তিনি এসব আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে জাতির পিতা বলেছেন- ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব।’ আর এ আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য তার জীবনের মূল্যবান সময়গুলো কারাগারে কেটেছে। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ নানা বৈষম্যের প্রতিবাদ করায় তাকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তারপর ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে এ মহান নেতাকে অন্ধকার কারাবাস করতে হয়েছে। এত মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের পরও তিনি দমেননি। তিনি ছিলেন প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ফিদেল কাস্ত্রো বলে গিয়েছেন- ‘I haven't seen Himalayas, but have seen Sheikh Mujib.’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য কালের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের ওপর গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এমন একজন আদর্শবান ব্যক্তির বুকে গুলি কেমন করে চালানো হয় তা কল্পনাতীত। হয়তো সেদিন গুলি করে তারা জাতির পিতাকে দৈহিকভাবে নিঃশেষ করেছে, কিন্তু তার আদর্শ? সেটা তো অমর, যে আদর্শে এদেশ সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হতে চলেছে।

তাই বলা যায়, এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে। পৃথিবীর বুকে বাঙালি যতদিন বেঁচে থাকবে, শেখ মুজিবুর রহমান প্রত্যেক বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন ততদিন।

লেখক: উপাচার্য, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, তেজগাঁও, ঢাকা।

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর।