• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

সরকার পতনের নীলনকশা করেছিল হেফাজত

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২১  

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম সহিংস আন্দোলনে নামলেও তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। মাসব্যাপী আন্দোলনের পরিকল্পনা নেয় সংগঠনটি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে আন্দোলন সংগঠিত করে তাদের পরিকল্পনা ছিল রমজানে ঢাকা দখল করার।

সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের সহিংস আন্দোলনের পর গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্র মতে, এই বড় আন্দোলনের পরীক্ষামূলক অংশ হিসেবে সংগঠনটি বেছে নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে। সেখানে সহিংস আন্দোলনের পর সাংগঠনিকভাবে চরমভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠে হেফাজতে ইসলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংস আন্দোলনের সফলতাকে কেন্দ্র করে তারা ঢাকা দখলের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। আর এই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার পরিকল্পনা ছিল অরাজনৈতিক সংগঠনটির গ্রেফতার হওয়া শীর্ষ নেতাদের।

হেফাজত ইসলামের গ্রেফতার হওয়া সাবেক শীর্ষ নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোদির সফর ঠেকানোর একমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে হেফাজতে ইসলাম আন্দোলনে নামেনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুর পর সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা একাধিক গোপন বৈঠকে মিলিত হয়। এসব বৈঠকে তারা সর্ব সম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার পতনের সহিংস আন্দোলনের। আর এই আন্দোলনের সময় হিসেবে সংগঠনটি বেছে নেয় রমজান মাসকে।

আরও জানা গেছে, সংগঠনটির নেতারা সিদ্ধান্ত নেয় যেহেতু রমজান মাসে ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ হয়েছিল, তাই এই মাসেই ঢাকা অবরোধের সহিংস আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আর এই আন্দোলনে তাদের সহযোগী হিসেবে থাকার কথা ছিল বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামকে।

জানা যায়, রমজান মাসের আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই হেফাজত ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ বাকি শীর্ষ স্থানীয় নেতারা মাঠে নামেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিলে তারা বক্তব্য দিতে থাকেন যে দেশ নারী নেতৃত্বে চলবে না। আলমদের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। এসব বক্তব্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে টার্গেট করে সহিংস আন্দোলনে মাঠে নামে সংগঠনটি।

এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহিংস আন্দোলনের সফলতাকে দেখে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা মাসব্যাপী আন্দোলনের পরিকল্পনা নেয়। যার মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্নস্থানে আন্দোলন করে ঢাকা অবরোধ করে সরকার পতনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরে সরকারের পতন ঘটিয়ে বিএনপি ও এবং জামাতে ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে বড় ইসলামিক রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনাও ছিল হেফাজত ইসলামের।

গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতারা জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাবলীগ জামাতকে দুই ভাগে বিভক্ত করার জন্য হেফাজতের অনেক নেতাই মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। সাদপন্থী এবং অপর আরেকটি পক্ষ তৈরি করে হেফাজতের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করে তাবলীগ জামাতকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য ভাগ করে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব বলেন, গ্রেফতার হওয়া হেফাজত নেতারা জিজ্ঞাসাবাদে জানান রমজান মাসে যেহেতু ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ হয়েছিল তাই হেফাজত ইসলাম এই মাসকে টার্গেট করে সরকার পতনের আন্দোলনের পরিকল্পনা করে। তাদের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে এই রমজান মাসে আন্দোলন করে সফলতা পাওয়ার জন্য জোর দেন সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় সাবেক নেতারা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আন্দোলনে তারা সফলতা পাওয়ায় সাংগঠনিকভাবে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। তখন তারা সিদ্ধান্ত নেয় রমজান মাসে ঢাকাকে আবার অবরুদ্ধ করে বড় ধরনের আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাবে। হেফাজতের আসল উদ্দেশ্য ছিল দেশের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে জামায়াতে ইসলাম এবং বিএনপি।

মাহবুব বলেন, তাবলীগ জামাতকেও নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য দুই ভাগে বিভক্ত করে হেফাজত।