• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন অটুট রাখার উপায়

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারি ২০২০  

ইসলাম ধর্ম একটি মজবুত, আন্তরিক এবং পরস্পর বোঝাপড়া ও সহানুভূতিশীল মুসলিম পরিবার নির্মাণ করার তাগিদ দেয়। 
এমন মুসলিম পরিবার- যা পরিচালিত হয়- শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সম্মান, অঙ্গীকার, সুখ, মানসিক প্রশান্তির ইত্যাদির মাধ্যমে। 

পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,

‘তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিনীরা সানন্দে জান্নাতে প্রবেশ কর। স্বর্ণের থালা ও পানপাত্র নিয়ে তাদেরকে প্রদক্ষিণ করা হবে; সেখানে রয়েছে সবকিছু, অন্তর যা চায় এবং নয়ন যাতে তৃপ্ত হয়। সেখানে তোমরা স্থায়ী হবে।’ (সূরা: যুখরূপ, আয়াত: ৭০-৭১)।

যার আদর্শ হবে- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর সাহাবাগণ এবং তাঁর অনুসারীগণ। 

এ ক্ষেত্রে স্বামীর করণীয় কী, কীভাবে স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক আরো নিবিড় করবে, ভালোবাসা সদা অটুট রাখবে; ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

(১) সুযোগ বুঝে আচরণ করুন: আপনার স্ত্রী যখন হাসিখুশি থাকে তখন তার সঙ্গে হাস্যরস করুন। কিছুটা বাচ্চামো, ন্যাকামো করুন। আর যখন প্রয়োজন তখন গুরুগম্ভীর হোন। সাইয়িদুনা উমর (রা.) বলেন, ‘পুরুষের উচিত স্ত্রীর সঙ্গে বাচ্চামিসূলভ ব্যবহার করা, কিন্তু যখন স্ত্রীদের তার প্রয়োজন হবে তখন সে একজন পুরুষের মতো আচরণ করবে।’

(২) স্ত্রীর জন্য সাজুন: আপনি যেমন চান আপনার স্ত্রী আপনার জন্য সাজ-সজ্জা গ্রহণ করুক, আপনার স্ত্রীও তো চায় আপনিও তার জন্য একটু সাজুন, একটু পরিপাটি হয়ে তার কাছে যান। আজকাল পুরুষরা বাইরে বেরোবার সময় যথেষ্ট স্মার্টনেস প্রদর্শনের চেষ্টা করলেও নিজ ঘরে পরিপাটি থাকার ব্যাপারটা একেবারেই ভুলে যান। শরীর থেকে ঘাম আর মুখ থেকে হয়তো বেরিয়ে আসে তামাক জাতীয় দ্রব্যের দুর্গন্ধ। স্ত্রী বেচারী হয়তো কিছু বলতে পারে না, কিন্তু প্রতিটি স্ত্রীই চায় তার স্বামী তার কাছে পরিপাটি হয়ে আসুক। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি নিজেকে আমার স্ত্রীর জন্য সাজাতে পছন্দ করি, ঠিক যেভাবে আমি চাই আমার স্ত্রী আমার জন্য সাজুক।’

(৩) সবকিছু স্ত্রীর ওপর চাপিয়ে দেবেন না: পুরুষ মানেই মনে করা হয় রাজা-টাজা টাইপের কিছু। আর নারী যেন তার সেবাদাসী। পুরুষ শুধু আদেশ করবে, নারী তা নির্দ্বিধায় পালন করে যাবে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা এরকম না। একপাক্ষিক না। এখানে উভয়েরই আছে দায়িত্ব-কর্তব্য, আছে একে অপরের ওপর অধিকার। ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা পারস্পরিক সহযোগিতামূলক। রাসূল (সা.) শুধু বসে বসে আদেশ করতেন না। কিছু কাজ নিজেই করে নিতেন। নিজের কাপড় নিজেই সেলাই করতেন। নিজের জুতা নিজেই তালি লাগাতেন। এছাড়াও ঘরোয়া অন্যান্য কাজ করতেন, যেগুলো অন্যান্য পুরুষেরা করে না। (আহমাদ, আলমুসনাদ : ২৪৯০৩)।

(৪) বসে বসে স্ত্রীর উপার্জন খাবেন না: স্ত্রী যদি দ্বীনের গন্ডির ভেতর থেকে কোনো কাজ করে কিছু উপার্জন করে তাহলে স্বামী যেন এটাকে সুযোগ মনে করে ঘরে বসে বসে না খায়। মিরাস সূত্রে স্ত্রী যদি কোনো সম্পদ পায় তাও যেন না নেয়। স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পুরোটাই স্বামীর ওপর। স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায় সাংসারিক ব্যাপারগুলোতে আর্থিকভাবে অংশগ্রহণ করে, এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু কোনো ক্রমেই জোর করা যাবে না। (মুসলিম, আসসাহিহ : ৫১৯৯)।

(৫) জোর করবেন না: কোনো ব্যাপারে, বিশেষ করে জৈবিক চাহিদার ক্ষেত্রে জোর করবেন না। কথোপকথনের সময় খুব অমায়িক ও ভদ্র থাকার চেষ্টা করুন। এমন শব্দ ব্যবহার করুন যা তার হৃদয়কে বিগলিত করে, তাকে আনন্দ দেয়, তার ওপর আপনার যেসব অধিকার আছে তা সে বুঝতে পারে। যখন সে আপনার সঙ্গতা উপভোগ করবে তখন সে নিজেই আপনার চাহিদা পূরণ করবে।