• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

হাবিপ্রবির ঘটনায় কঠোর হলেন শিক্ষামন্ত্রী

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। চিঠিতে ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীত পদক্ষেপ ও অভিযোগের তথ্য, জরুরিভিত্তিতে পাঠানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। এর আগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ নানা অনিয়ম নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ করে আসছিল।

গত ২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পাঠানো ইউজিসির চিঠিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রমজান আলীর বিরুদ্ধে উপাচার্য কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

গত বছরের ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯ জন প্রভাষক, ১৬ জন কর্মকর্তা ও ২২ জন কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি লিখিত, মৌখিক ও প্রদর্শনী ক্লাস পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত হয়েও যোগ্য ও মেধাবীদের বঞ্চিত করা হয়। এমনকি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম এবং প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়া প্রার্থীকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ২২ জন কর্মচারী নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ১৬ জন কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও ২২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম।

প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ যাবতীয় অনিয়মের ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। অথচ এর কিছুই হয়নি। তাহলে কীভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকবে।

এদিকে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রমজান আলীর বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী। পরে ছাত্রী ও রমজান আলীর স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাত সদস্যের কমিটি রমজান আলীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রমাণ পায়। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে রমজান আলীকে চাকরি থেকে বহিস্কারের সুপারিশ করে। কিন্তু রমজান আলীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্য দিনাজপুর মহিলা পরিষদের সভাপতি কানিজ রহমান অভিযোগ করেন, ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দায়ী একজন শিক্ষককে বাঁচাতে প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে।

ইউজিসির চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফজলুল হক বলেন, কয়েকদিন আগে একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠিতে কোনো সময়সীমা উল্লেখ নেই। তবে যত দ্রুত ইউজিসির চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করা হবে।

এ ব্যাপারে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক মু. আবুল কাশেমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।