• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

৩০ দেশের কূটনীতিক শুনলেন ভয়াবহ হামলার ঘটনা

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০১৯  

৩০ দেশের কূটনীতিকরা শুনলেন পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় হতাহতের ভয়াবহতার বর্ণনা। শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত এক সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ ঘটনার বর্ণনা দেন।

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিয়ে ‘বাংলাদেশের ওপর ১৫ আগস্টের প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, সেমিনারে উপ-কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীন, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও জাপানসহ ৩০ দেশের কূটনীতিকগণ।

আলোচনা শেষে কূটনীতিকবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি স্মারকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার মাধ্যমে বাংলাদেশকেও হত্যা করে এ দেশকে আরেকটি পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয় বলে সেমিনারে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

তিনি বলেন, পঁচাত্তর সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে স্ব পরিবারে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি ঘাতকেরা। তারা পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতাদের একে এ হত্যা করেন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে ফেলে আরেকটি পাকিস্তান রাষ্ট্র তৈরি করার। কিন্তু তারা সফল হয়নি। যেই বাংলাদেশকে তারা হতে দিতে চায়নি বলে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছিলো। সেই বাংলাদেশ আজ গড়ে উঠছে তার কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে। ২০১৭ সালে মাথাপিছু আয়ে আমরা ছাড়িয়ে গেছি পাকিস্তানকে। এ সবই সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার দেখানো পথে চলে।

আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে চলতে না দেয়ায় আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। যদি তার দেখানো পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারত, তাহলে হয়ত এখন আমরা আরো উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতাম।

বঙ্গবন্ধু হারানো বাংলাদেশে কতটা প্রভাব ফেলেছে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের জানা উচিত বাংলাদেশের জন্য উনি কি পরিকল্পনা করে গেছেন। কৃষি নির্ভর এই দেশের কৃষকদের স্বার্থে কাজ করেছেন তিনি। ১৯৭২ সালে দেশে ফেরার পর থেকে তিনি সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিক্ষাখাতে। বাংলাদেশে যুদ্ধ পরবর্তী সময় কৃষিজমির খাজনা হ্রাস এবং ১৬ হাজারের বেশি যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্কুল পুন:নির্মাণ ও সরকারের অধিভুক্ত করেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান বিশ্বের জন্য বিস্ময়। কেননা যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন হবার পর তার সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ১১ বছর। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সংবিধান তেরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ বছর। পাকিস্তানেরও প্রথম সংবিধান তৈরি করতে সময় লেগেছিলো ৯ বছর। সেখানে মাত্র ৯ মাসে আমরা আমাদের সংবিধান তৈরি করতে পেরেছি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কারণেই।

আলোচনা শেষে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সাথে কথা বলছে সরকার। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে বঙ্গবন্ধুর একজন খুনিকে হস্তান্তর করেছে। আশা করছি বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকীর আগে যুক্তরাষ্ট্র এই আত্মস্বীকৃত খুনিকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।

এছাড়া পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ভোররাতের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যার ভয়াবহতার কথা বর্ণনা করেন প্রত্যক্ষকারী আব্দুর রহমান শেখ (রমা)। এ সময় গোটা সেমিনার হল যেন আবেগ আপ্লুত হয়ে চেখের জল মুছতে দেখা যায়।