• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-মাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ একমাত্র সন্তান মেহেদী   

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২১  

কে যানে বাবার পর মাকেও সড়ক দুর্ঘটনায় হারাতে হবে। আমারো যাওয়ার কথা ছিলো ওই বাসে রাজশাহীতে। যাওয়ার সময় মা বলেছিলো রাতের মধ্যে ফিরে আসবে। কিন্তু এখন আমার মা জীবিত না মরদেহ হয়ে ফিরে আসবে।
বাবার মতো মা তো ছেড়ে গেল। আমার যে আর কেউ থাকল না। খালা-খালুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে মা আমাকে ছেড়ে গেল। ’বাকরুদ্ধ হয়ে চাপাকান্না সাথে এসব কথা বলেন, মেহেদী হাসান তুবা।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাজশাহীর কাটাখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো কামরুন্নাহারের একমাত্র ছেলে তিনি ।

মেহেদী হাসান তুবা (২০) এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছেন। মেহেদীর বাবা শাহজাহান মন্ডল তোতা ২০০০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাযান। ঠিক ২ দশক পর তার বাবার মতোই সড়কে প্রাণ গেল মা কামরুন্নাহারের। এখন বাবার পর মাকে হারিয়ে শোকে বাকরুদ্ধ মেহেদী।

মেহেদী হাসান বলেন, আমার বয়স যখন আড়াই মাস তখন আব্বা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান। মা আমাকে আগলে রেখে বড় করেছে। আমাকে নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল।

সবাই আমার আব্বার মতোই সড়কে মারা গেল। আমার খালা-খালুও আমাকে খুব ভালোবাসতো। আজ তারা কেউই বেঁচে নেই। ঘুম থেকে দেরিতে উঠায় শুধু আমিই যেন প্রাণে বেঁচে গেলাম। ’

শুক্রবার (২৬ মার্চ) বেলা পৌনে ২টার দিকে রাজশাহীর কাটাখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭ জনের সাথে প্রাণ হারান কামরুন্নাহার। তিনি রংপুরের পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়নের বড় রাজারামপুর গ্রামের আব্দুল করিম সরকারের মেয়ে। তার স্বামী শাহজাহান মন্ডল তোতার ২০ বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়।

মেহেদীর ছোট খালা শামসুন্নাহার (৩২) ও খালু সালাহউদ্দিনের (৩৮) সঙ্গে কামরুন্নাহারও রাজশাহীতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

কাটাখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কামরুন্নাহারসহ (৩৭) তার ছোট বোন, বোনের স্বামী এবং ৮ বছরের ছেলে সাজিদ ও আঠারো মাসের মেয়ে সাফা প্রাণ হারান।

পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, ‘রাজশাহীর ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। লাশ দ্রুত পীরগঞ্জে আনার চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসে চালকসহ ১৮ জন যাত্রী ছিলেন।