• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

একাত্তরের সেই দিনের কথা শোনালেন বীরাঙ্গনারা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২১  

ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলে একাত্তরের সেই দিনগুলোতে কত বাঙালি নারী যে পাকসেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের সম্ভ্রম হারিয়ে ও নির্যাতনের বিনিময়ে পেয়েছিলেন কেবল বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি। এখন থেকে তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। পাচ্ছেন ভাতাও। রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এ উপজেলার বীরাঙ্গনাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, ২০০৭-০৮ সালে জেলা থেকে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ওই গ্রামে সরেজমিনে বীরাঙ্গনাদের দেখতে যান। ৩৫ জন নারীকে সনাক্ত করেন তারা। যারা একাত্তরে পাকসেনাদের হাতে বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছিলেন। লোক লজ্জার কারণে তাদের মধ্যে ২৪ জন নারী নাম পরিচয় দিতে রাজি হন। বেঁচে থাকা বীরাঙ্গনারা দীর্ঘদিন থেকেই দাবি করে আসছিলেন তাদেরকেও যেন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি নিয়মিত ভাতার ব্যবস্থা করাও দাবি ছিল তাদের। অবশেষে মিলেছে স্বীকৃতি।

সরকারের এমন ঘোষণায় খুশি ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার মুগল বাসুগীর কন্যা সুমি বাসুগী, একই উপজেলার নিয়ানপুর গ্রামের জমরত আলীর কন্যা মালেকা, রাউতনগর গ্রামের মঙ্গল কিসকুর (শহীদ) কন্যা মনি কিসকু, শিদলী গ্রামের বনহরি সরকারের কন্যা নিহারানী দাস, পকন্বা গ্রামের মনির উদ্দিনের কন্যা নুরজাহান বেগম ও রাউতনগর গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের কন্যা হাফেজা বেগম।

এ ব্যাপারে বীরাঙ্গনা হাফেজা বেগম বলেন, সরকার আমাদের মুক্তিযোদ্ধা করেছে। এ সরকারের উপর আমরা খুবই খুশি।

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের সে সন্মান আরো বেড়েছে বলে মনে করেন তারা। সরকার আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে আমরা এখন মুক্তিযোদ্ধা। বাকি জীবন চালাতে আমার আর ভিক্ষা করতে হবে না।

বর্তমানে ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কয়েকটি এলাকার বেঁচে থাকা বীরাঙ্গনাদের অনেকেই অনাহারে অর্ধাহারে অসুস্থ অবস্থায় দিনযাপন করছেন বলেও জানান তিনি। শুধু বীরাঙ্গনা শব্দটির মধ্যেই দীর্ঘ কয়েক যুগ আটকে রয়েছেন লাল-সবুজের পতাকার জন্য সব হারানো এই নারীরা। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও তাদের স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। পেয়েছেন তারা মুক্তিযুদ্ধের সম্মান আর বর্তমান সরকারের দেওয়া সম্মানী।

সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেফালী বেগম বীরঙ্গনাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা হতে। এলাকার বীরাঙ্গনাদের মুখে এমন কথাই শোনা যাচ্ছে।