• সোমবার ২০ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৬ ১৪৩১

  • || ১১ জ্বিলকদ ১৪৪৫

বদরগঞ্জে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

রংপুরের বদরগঞ্জে সামসুন্নাহার নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। গত এক সপ্তাহ আগে একটি লিচুবাগান থেকে সামসুন্নাহারের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বদরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিক। এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরেন আমিনুর ইসলাম।

এ ঘটনায় নিহতের চাচা বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির নামে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ক্লুলেস ওই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্তে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে গ্রেফতার করা হয় নিহতের পরিচিত আমিনুর ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে। তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে সামসুন্নাহার হত্যার রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। 

আদালতে আমিনুর ইসলামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিক জানান, তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের কাজীপাড়ার আব্দুর রশিদের ছেলে জিয়ারুল হকের সঙ্গে প্রায় ১৫ বছর আগে বিয়ে হয় সামসুন্নাহারের। সংসারে তাদের তিন সন্তান রয়েছে। ভালোভাবেই চলছিল তাদের সংসার জীবন। এরমধ্যে একই এলাকার ছফির উদ্দিনের ছেলে স্যালো মেশিন মেরামতকারী আমিনুর ইসলামের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে সামসুন্নাহারের। সুসম্পর্কের কারণে গত ৩১ জানুয়ারি (সোমবার) রিকশাভ্যান যোগে তারাগঞ্জ বাজারে যান সামসুন্নাহার ও তার স্বামী জিয়ারুল হক এবং তাদের প্রতিবেশি ঘাতক আমিনুর ইসলাম। তারাগঞ্জে একটি পদক্ষেপ নামে এনজিও থেকে প্রায় ৪৮ হাজার টাকা ঋণ নেন জিয়ারুল হক। এতে সহযোগিতা করেন আমিনুর ইসলাম। ওইদিন বাড়ি ফেরার পথে সড়কের পাশে চা খেতে যান জিয়ারুল হক। এসময় আমিনুর ইসলাম গৃহবধূ সামসুন্নাহারকে ফুসলিয়ে একদিন পর গত বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) বদরগঞ্জ সীমান্তে চিকলী নদীর পাড়ে রাধানগর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ এলাকার বালাপাড়া গ্রামের মজিবর রহমানের লিচুবাগানে দেখা করতে বলেন। সে হিসেবে রাত আটটার দিকে একাই আমিনুর ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে যান সামসুন্নাহার। এসময় তারা পরকীয়া সম্পর্কের জেরে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমিনুর ইসলাম সামসুন্নাহারের পরনে থাকা চাদর দিয়ে তার গলায় ফাঁস দেন। এতে সে মারা যায়। পরে ওই চাঁদর গলায় পেচিয়ে একটি লিচু গাছের ডালে ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় আমিনুর ইসলাম। পরের দিন খবর পেয়ে পুলিশ হাটু গেড়ে থাকা অবস্থায় ওই গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় সামসুন্নাহারের চাচা বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের হাসিনানগর গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে থানায় মামলা করেন। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা বদরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ক্লুলেস ওই মামলা তদন্তে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে গত রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বাটুপাড়া থেকে আমিনুর ইসলামকে গ্রেফতার করেন তিনি। 

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান বলেন, গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের পর গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হয়। এ জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় ওসি (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিককে। সামসুন্নাহার হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।