শেখ হাসিনা হাসলেই হেসে ওঠে বাংলাদেশ
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
আলী হাবিব
নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে আসে শরৎ। আকাশে তুলারং মেঘ। মাটিতে নদীতীরে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। এই শরতে প্রকৃতিতে যে শান্তশ্রী দেখতে পাওয়া যায়, বাংলার সেই সৌন্দর্য যেন খুঁজে পাই তাঁর অবয়বে। আমাদের আস্থার প্রতীক হিসেবে তাঁকে পাই। তাঁকে পাই শক্তির উৎস হিসেবে। শরতে জন্ম তাঁর এই বাংলায়। তাই বুঝি তাঁকে পাই শারদ-শুভ্রতায়, মননে-মানসে। কবে থেকে দেখছি তাঁকে? কবে থেকে চিনি? কবে থেকে পাশে তিনি ছায়ার মতন?
আমাদের শৈশবে তাঁর কোনো স্মৃতি কি আছে? আমাদের কিশোরবেলায় যখন নিহত হলেন জাতির পিতা, ইতিহাসের সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতি ছিল দিশাহারা। আর সেই সুযোগে আমাদের জীবনের ওপর চেপে বসে বৈরী সময়। সামরিক বুটের তলায় পিষ্ট আমাদের ইচ্ছেগুলো। কৈশোরের উচ্ছলতা পেরিয়ে আসা তারুণ্যে, মফস্বলেও আমরা বেশ বুঝতে পারি, ইতিহাসের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা। অপনায়কদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করার সাহস আমাদের কোথায় তখন? অথচ তখনো শীত গেলে বসন্ত আসে। গ্রীষ্মের পর বর্ষা। বৃষ্টির পর কখনো কখনো রংধনু ফুটে ওঠে দূর নীলাকাশে। আমাদের মুগ্ধ দৃষ্টি শুধু সেই সাতরং ছুঁয়ে যায়, রং ছড়ায় না মনে।
বলছি আমাদের কৈশোর পেরিয়ে আসা তরুণবেলার কথা। তারুণ্যের আলাদা উদ্যম আছে। অথচ এমনই সে বৈরী সময়, উর্দির আড়ালে আমাদের উচ্ছ্বাসও চাপা পড়ে যায়। আমরা বলতে চাই, বলতে পারি না। আমরা গানের সুরে ভেসে যেতে চাই, পারি না। অনেকটাই যেন নিজভূমে পরবাসী হয়ে আমাদের বসবাস সেই রুদ্ধ সময়ে। আমাদের তারুণ্য পথ খুঁজে ফেরে, পায় না। অথচ তারুণ্য ঘুরে দাঁড়াতে জানে। জানে দ্রোহের আগুনে পোড়াতেও। কিন্তু প্রেরণা কোথায়? সে এক সময় বটে! আজকের প্রজন্ম ভাবতেও পারবে না সেই অবরুদ্ধ সময়ের কথা। জাতির পিতার মৃত্যুতে অভিভাবকহীন জাতি। দিকনির্দেশনাহীন। সেই সব দিন, অমন অন্ধকার দিন কি আগে দেখেছে কেউ? রোজ তো সূর্য ওঠে, অস্ত যায়। দিন যায়, আসে রাত। কিন্তু অমন ম্লান সকাল কি আগে কখনো দেখেছে বাংলার মানুষ? অমন বিবর্ণ বিকেল? বেদনা যেভাবে গড়িয়ে পড়ে অশ্রুবিন্দু হয়ে, তেমনই বেদনাসিক্ত কত যে সন্ধে গেছে আমাদের। ম্লান সকাল পেরিয়ে বিষণ্ন দুপুর। বিবর্ণ বিকেল পেরিয়ে বেদনাচ্ছন্ন সন্ধ্যা। আর রাত? সবাই তো জানে বাংলার রাতে জোছনা কেমন গলে গলে পড়ে। কেমন নদী ও চাঁদের খেলা চলে রাতভর। নদীর ঢেউয়ে ঢেউয়ে দোল খায় পূর্ণিমার চাঁদ। অথচ আমাদের সেই তরুণবেলায় সবই যেন কেমন নিয়ম করে চলা। সেই আদ্যিকাল থেকেই তো পাখির গানে ভোর হয়। আমাদের তরুণবেলায় ভোর হতো বুঝি পাখির কান্নার শব্দে। সূর্য ওঠার আগে আবির মাখে পুবের আকাশ। নিত্যদিন এমনই দেখে এসেছে সবাই। আমাদের তরুণবেলায় আবির মেখে নয়, যেন পিতার রক্তে লাল হতো পুবের আকাশ।
এভাবেই কৈশোর থেকে তারুণ্য অবধি বেড়ে ওঠা আমাদের। এক অনিশ্চিত আগামীর দিকে আমাদের এগিয়ে যাওয়া। তখন সংবিধান নামের পবিত্র গ্রন্থটি নির্বাসনে। সঙ্গিনে সঙ্গিন আমাদের রোজকার জীবন। আমরা তখন মেপে বলি কথা। আমাদের গণ্ডি বেঁধে দেওয়া। তার বাইরে যাওয়ার জো নেই। অদৃশ্য এক শিকল আমাদের পায়ে। তখন আকাশ দেখা মানা। নিষেধ প্রাণ খুলে গান গাওয়া। সবুজ মাঠের বুক চিরে ছুটে আসে যে দখিন হাওয়া, তাতে শরীর জুড়োতেও যেন নিষেধের বেড়াজাল। বুক ভরে নিঃশ্বাস নেব যে, তখন কোথায় সেই মুক্ত পরিবেশ? চেপে চলা আর মেপে বলার অভ্যাস যখন প্রায় আয়ত্ত আমাদের, তখনই পেলাম তাঁকে।
যে বয়সে নিয়মের বালাই নেই। যে বয়স হঠাৎ চিৎকার করে উঠতে জানে। যে বয়স নিত্য ভাঙে নিয়মের বেড়া। আমাদের সে বয়সে চারপাশে ছিল নিষেধের বড্ড বাড়াবাড়ি। ঘরে ও বাইরে শুধু নিয়মের নাগপাশ। পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অবাক বিস্ময়ে দেখি আমাদের চিরচেনা মফস্বল শহরে কিছু অচেনা মানুষ। দেখি একাত্তরের পরাজিত রাজাকারদের শহরে ফিরে আসা। দেখি তাদের নতুন করে সংগঠিত হওয়া। বিনা বাধায় ধর্মের নামে নতুন ধোঁকাবাজির বেসাতি খুলতে দেখি। এসব দেখে মনের কোণে নতুন ভাবনার উদ্রেক হয়। যে সংকীর্ণ রাজনীতিকে উপেক্ষা করতেই একাত্তরে অকাতরে জীবনদান, সে কি ব্যর্থ হবে? রাজনীতি কতটা ঘরোয়া হতে পারে, সান্ধ্য আইনও যে গণতন্ত্রের অংশ হতে পারে—ওসব আমাদের শেখা হয়ে গেছে। আমরা তখন প্রায় অন্ধের ভূমিকায়। আমাদের পেছনে ফিরে তাকানো নিষেধ। সামনের দিকে দৃষ্টি প্রসারিত করার স্বাধীনতাও খর্ব। আমাদের কল্পনার জগেক ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্ধকারে আমরা হাতড়ে ফিরি আগামীর সিঁড়ি। আমাদের দীর্ঘশ্বাস দীর্ঘতর হয়। ভেসে বেড়ায় বাতাসে। ফিরে ফিরে আসে।
আমাদের সেই মাপা জীবনের চাপা বেদনা এক গ্রীষ্মের বিকেলে তিনি ভিজিয়ে দিলেন অশ্রুর বৃষ্টিতে। সেই ভরা গ্রীষ্মে কোত্থেকে যেন মেঘ ভেসে এলো আকাশে। আকাশকে অমন করে কাঁদতে দেখেছে কখনো কেউ? ভেজা বাতাসে সেদিন কার দীর্ঘশ্বাস ছড়িয়ে ছিল? আমরা, যাদের বাস তখন মফস্বলে, তাদের ভেতরেও হঠাৎ আলোর ঝলকানি লেগে ঝলমল করে ওঠার মতো খবর আসে খবরের কাগজের পাতায়। তখন আজকের মতো ইন্টারনেট ছিল না। রেডিও ছিল মধ্যবিত্তের ঘরে ঘরে। টেলিভিশন হাতে গোনা কিছু বাড়িতে। রেডিও-টিভি না থাক, খবরের কাগজ রাখলে সমাজে স্ট্যাটাস কিছুটা বাড়ে, এমন বাড়ির সংখ্যাও নিতান্ত কম ছিল না মফস্বল শহরে। অবাধ নয়, তথ্য তখন বাধ্যগত ছিল। প্রযুক্তি অনেক দূরের ভাবনা। তেমনই কোনো একদিনে জানা গেল, তিনি আসছেন।
অমনি আমাদের মফস্বল শহরও কেমন যেন প্রাণ ফিরে পেল। মুখে মুখে সেই বার্তা ছড়িয়ে যেতে খুব বেশি সময়ও লাগেনি। তত দিনে তিনি পেয়েছেন দলের নেতৃত্ব। সেই দল, যে দলটি স্বাধীনতাযুদ্ধে জাতিকে প্রেরণা দিয়েছে, নেতৃত্ব দিয়েছে। সেই দলের নেতৃত্বভার নিজের কাঁধে নিয়ে সুখের আশায় থাকা বাংলার মানুষের দুঃখের সঙ্গী হতে এলেন তিনি চেনা মাটিতে। যে মাটিতে চিরনিদ্রায় তাঁর মা-বাবা, ভাই।
মফস্বলে তখন হাতে গোনা কয়েকটি খবরের কাগজই আমাদের প্রধান ভরসা। আমরা কাগজে খবর পড়ি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ি তাঁর আগমনবার্তা। একটা ছবিতে চোখ আটকে যায় আমাদের। বিশাল জনসমুদ্রে কে এই ক্রন্দনরতা নারী!
আমরা নতুন করে তাঁকে চেনার চেষ্টা করি। অনেকটা আবিষ্কারের মতো একটু একটু করে আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় তাঁর পরিচয়। খবরের কাগজের পাতায় যে নারীর ছবি, তিনি তো আমাদেরই বোন। চিরদুঃখী বোন আমাদের, ফিরেছেন পিতৃহারা-মাতৃহারা দেশে। একাকী, নিঃসঙ্গ। তারপর?
তারপর তো অন্য ইতিহাস। তাঁর দেখানো পথ ধরে হাঁটা একটানা চার দশক। এই চার দশকে তিনি চারবার দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিন দফা বিরোধী দলের নেতা।
কিন্তু এক বৃষ্টিভেজা অপরাহ্নের যে ছবিটি আঁকা হয়ে গেছে মনের ক্যানভাসে, সে ছবি তো মুছে যাওয়ার নয়। সেদিন থেকেই তিনি বোনের মমতা ছড়িয়ে জড়িয়ে রেখেছেন আমাদের। মনের গহিনে তিনি ভগ্নিরূপেণ সংস্থিতা।
চার দশক আগে তিনি দেশে ফিরেছিলেন কান্নার বৃষ্টি ঝরিয়ে। আজ তিনি হাসলেই হেসে ওঠে বাংলাদেশ। জন্মদিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই তাঁকে। শুভ জন্মদিন বড় আপা। এভাবেই মাথার ওপরে ছায়া হয়ে থাকুন, আরো অনেক অনেক দিন।
লেখক : সাংবাদিক, ছড়াকার।
[email protected]
সূত্র: কালেরকণ্ঠ।
- কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু
- গরমে ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে যা করবেন
- মুস্তাফিজের আইপিএল অভিজ্ঞতা কাজে দেবে: শান্ত
- সাংবাদিক হতে গিয়ে যেভাবে নায়িকা হলেন আনুশকা
- শ্রমিক ঠকানোর ভয়াবহ পরিণতি
- স্বস্তির পরশ ছড়িয়ে রংপুরে ঝরল বৃষ্টি
- হাতপাখায় চলে আজিজুলের সংসার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনা সরকারের
- সরাসরি মুসলিমদের নিশানা করে ভোট প্রচারে মোদি
- জলবায়ু সহনশীলতা অ্যাডভোকেসি জোরদার করবে বাংলাদেশ
- সরকারি অফিস চলবে ‘এআই’ প্রযুক্তিতে
- যুক্তরাষ্ট্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন প্রধানমন্ত্রী
- শ্রমিকদের কল্যাণে বিশেষ নজর দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
- শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী
- অবশেষে আজ তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস
- ডিমলায় মে দিবস পালিত
- হাতপাখা বিক্রি করে চলে বৃদ্ধ আজিজুলের সংসার
- গরমে পটোল খাওয়ার ৭ উপকারিতা
- শেষ ওভারে মুম্বাইকে হারালো লখনৌ
- শাকিবের বিয়ের ইঙ্গিত দিলেন আরশাদ আদনান
- ইসলামে শ্রমের মর্যাদা, গুরুত্ব ও অধিকার
- শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিতে ঐক্যবদ্ধ ইইউ ও বাংলাদেশ:পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ‘ইভিএমে ত্রুটি প্রমাণ করতে পারলে কমিশনের সবাই পদত্যাগ করবো’
- নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন ১৮৫ দিন: শিক্ষামন্ত্রী
- তাপপ্রবাহ কবে কমবে, জানালো আবহাওয়া অফিস
- জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান
- ইসরাইলগামী জাহাজে হামলার ভিডিও প্রকাশ
- সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- অবৈধ দখলে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করতে বললেন ভূমিমন্ত্রী
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- রোহিঙ্গা সমাধানে নিউজিল্যান্ডকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- আইপিএলের মাঝপথে হঠাৎ দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- পুত্রবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার