• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জীবন সবার আগে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ মে ২০২১  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জীবন সবার আগে। তিনি বলেন, বেঁচে থাকলে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছুটোছুটি না করে যে যেখানে আছেন সেভাবেই ঈদ উদযাপন করেন। আর যারা বিত্তশালী আছেন যদি দুস্থদের একটু সহযোগিতা করেন, সেটা আরো বেশি সওয়াবের কাজ হবে বলে আমি মনে করি। নৌযানে যাতায়াতকারী এবং পরিচালনাকারী সবাইকেই সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে ভ্রমণ। সুতরাং, স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রাখতে এবং অত্যন্ত জরুরি না হলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে সবার কাছে আমার অনুরোধ রইল।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার ‘নব সৃষ্ট অবকাঠামো ও জলযান’ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের সাথে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেন।

অবকাঠামো ও জলযানের মধ্যে রয়েছে- বিআইডব্লিউটিএ’র ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ ‘টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)’, বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ ‘পরিদর্শী’, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডব্লিউটিসি’র দুইটি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ ‘এমভি তাজউদ্দীন আহমদ’ এবং ‘এমভি আইভি রহমান’, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘পায়রা আবাসন’ পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৫শ’ পাকা বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেট মেরিন একাডেমি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় নৌযানে কাউকে অতিরিক্ত যাত্রী হিসেবে হয়ে না উঠার এবং নৌযানের নিরাপত্তা বজায় রাখতে যাত্রী, মালিক এবং নৌযান কর্তৃপক্ষসহ সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এই করোনাটা যাতে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেজন্য সবার কাছে আমার অনুরোধ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে চলুন। আর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত না করারও আহ্বান জানান তিনি।

আন-রেজিস্টার্ড এবং ফিটনেসবিহীন নৌযান যেন চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি আমরা জলযানগুলো পরিচালনা করতে পারি তাহলে কিন্তু দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। সেদিকে তিনি সবাইকে দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় মেরিন একাডেমি গড়ে তোলায় সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা তার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের শাসনে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে গিয়েছিলেন। আজ সেখান থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গ্রাজুয়েশন লাভ করেছি। এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। আর এই মহামারি সমগ্র বিশ্বব্যাপী চলছে, কাজেই এই সময়ে দেশের মানুষের যেন খাদ্যাভাব না হয়, কোনো কষ্ট যাতে না হয় সেদিকে সবাইকেই দৃষ্টি দিতে হবে এবং এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মানুষকে সত্যি খুব কষ্ট দিচ্ছে। সরকার এটি প্রতিরোধ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যথাযথ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে হতদরিদ্র ৩৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষের জন্য নগদ আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সুবিধা সরকার প্রদান করেছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকেও খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন। মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। 

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ডের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্থানীয় এমপিরা ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে নতুন বাড়ির চাবি ও দলিল হস্তান্তর করেন। এদিন ৫শ’টি বাড়ি হস্তান্তর করার কথা রয়েছে। যদিও অনুষ্ঠানে ৩৫টি পরিবারের নিকট চাবি ও দলিল হস্তান্তর করা হয়। এই প্রকল্পে মোট ৩৪২৩টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।