• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে জিডিপির ক্ষতি ১.৫ শতাংশের বেশি: বিআরটিএ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৪  

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেছেন, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। এটা মোট জিডিপির ১.৫ শতাংশের বেশি।

শনিবার মহাখালী বাস টার্মিনালে বিআরটিএ আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তামূলক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিআরটিএ’র নেয়া নানা উদ্যোগ তুলে ধরেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।

ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সই মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স-
নানা সীমাবদ্ধতার কারণে হার্ডকপি ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে হার্ড কপির জন্য কেউ যেন মরিয়া না হয়। এটা ওয়েল সার্কুলেটেড। ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সই মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স। এটা মোবাইলে প্রদর্শন করে গাড়ি চালনা করা যাবে। কেউ যদি মনে করেন পুলিশ এটা মানছে না, ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখানোর পরও পুলিশ মামলা করেছে তাহলে সেই পুলিশের নাম ফোন-নম্বর আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

তিনি আরো বলেন, যদি কোনো পুলিশ সদস্য এটা না জানেন সেটা তার ব্যর্থতা। এজন্য ঐ পুলিশ সদস্য দায়ী থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাদের সমস্যা আছে তারিখ দেওয়া বন্ধ করে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো করে সার্ভিস দেওয়ার জন্য বিআরটিএ কর্মকর্তাদের আহ্বান করছি।

ডোপ টেস্ট সহজ করা হচ্ছে-
গাড়ি চালকদের লাইসেন্স পেতে ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া আরো সহজ করা হচ্ছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ডোপ টেস্ট ডিজিটাল করার প্রস্তাব এসেছে। ডোপ টেস্ট নিয়ে প্রথমে আমরা কিছু সমস্যা ফেস করেছিলাম। এখন এটা নেই বললেই চলে। আমরা কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে একাধিক মিটিং করে একটা অ্যাপ প্রস্তুত করেছি, এটা এখনো চালু হয়নি। চালু হলে বারবার অফিসে যেতে হবে না।

অভিযান অব্যাহত থাকবে-
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, চালকরা স্বেচ্ছায় একটা পিঁপড়াও মারতে চায় না। কিন্তু নানা পারিপার্শ্বিক কারণে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সড়কে যান চলাচল ব্যতীত পাটকাঠি শুকানো, বা অন্য যেকোনো কাজে ব্যবহার করা বেআইনি। এজন্য সবাইকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। জেলা উপজেলায় সড়ক পরিবহন সংশ্লিষ্ট কমিটিগুলোকে আরো বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের বিভিন্ন অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রাম চালু আছে। লিফলেট বিতরণ বিজ্ঞাপন প্রকাশসহ নানাভাবে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া নানা ধরনের ট্রেনিং চালু আছে, সেটা আমরা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। শুক্রবারও সারাদেশে আমরা ওভারস্পিড নিয়ন্ত্রণে ৪০৫টি মামলায় ১০ লাখ টাকার বেশি জরিমানা করেছি। এই অভিযান চলমান থাকবে।

এদিকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি পেলেই ডাম্পিং করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, গাড়ির রোড পারমিট অবশ্যই আপ টু ডেট থাকতে হবে। সেটার জন্য যা যা করা দরকার আমরা করবো। কোনোভাবেই সড়কে রুট পারমিট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে নামা যাবে না। এক্ষেত্রে চালকদের যত ধরনের সহযোগিতা দরকার আমাদের কাছে পেশ করবেন, আমরা সংবেদনশীলভাবে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। কেউ যদি ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে সড়কে নামেন, তাহলে আমরা সোজা ডাম্পিং স্টেশনে পাঠিয়ে দেবো। এখানে কিন্তু জরিমানা করা হবে না, জরিমানা করে খুব একটা লাভ হয় না। প্রয়োজনে আমরা সময় দেবো। ঐ সময়ের মধ্যে যদি কাগজপত্র আপ টু ডেট না করে, ঐ গাড়ি আমরা সিস্টেম থেকে ডিলিট করে দেবো।

চালু হচ্ছে টার্মিনালভিত্তিক ট্রেনিং-
চালকদের টার্মিনলভিত্তিক ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, পেশাদারদের ট্রেনিং ব্যবস্থা চালু আছে। আর ব্যাপক ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা টার্মিনালভিত্তিক ট্রেনিং দেবো। আর এ ধরনের অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামও ঘন ঘন করবো। এতে চালক-যাত্রী থেকে শুরু করে সব স্টেকহোল্ডার আরো বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হবেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ট্রাফিক গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার আবুল মোমেন, বিআরটিএ’র রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মো. মাহবুব-ই-রব্বানী, ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ওসমান আলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম, ঢাকা জেলা বাস মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছাদিকুর রহমান হিরু, মহাখালী বাস টার্মিনালের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক প্রমুখ।