• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

ঢাকার চলচ্চিত্রের প্রথম নায়ক আমিনুল হক

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ আগস্ট ২০২৩  

এদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে তিনি আমিন নামেই সমধিক পরিচিত। পুরো নাম আমিনুল হক। পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম বাংলা সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ এর অন্যতম অভিনেতা ছিলেন তিনি।

এফডিসি থেকে নির্মিত প্রথম সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করায় তাকে বলা হয় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের প্রথম নায়ক।

জন্ম ১৯২১ সালের ১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের মালদহে। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। মালদহ জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন।

১৯৪৪ সালে কলকাতার শ্রীরঙ্গন থিয়েটারে তার অভিনয় জীবন শুরু। সেখানে শিশির কুমার ভাদুড়ীর নির্দেশনায় অভিনেতা হিসেবে অভিষেক ঘটে তার।

১৯৪৬ সালে কলকাতায় ফণী বর্মণ পরিচালিত ‘মন্দির’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে রূপালি জগতে পা রাখেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গসহ ঢাকা বেতারে শ্রুতি নাটকেও অভিনয় করতেন।

স্বল্পসময়ের জন্য ১৯৪৪ থেকে ৪৬ সাল পর্যন্ত কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের প্রথম ডিভিশনে ফুটবলও খেলেছেন আমিনুল হক।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় ঢাকায় চলে আসেন ও ঢাকা বেতারে চাকরি নেন। বেতারে বেশ কিছু শ্রুতি নাটক করেন।

১৯৫৩ সালে আব্দুল জব্বার খান পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’ নির্মাণের প্রস্তুতি নেন। এ সময় অন্যতম অভিনেতা হিসেবে আমিনুলকে নির্বাচন করা হয়।

১৯৫৫ সালের ৩০ অক্টোবর সিনেমাটির নির্মাণ সম্পন্ন হয় ও ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট মুক্তি পায়। ছবিটি উদ্বোধন করেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। ছবিটি মুক্তির পর আমিনুল বেশ প্রশংসিত হন।

১৯৫৭ সালে চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (এফডিসি) প্রতিষ্ঠিত হলে ফতেহ লোহানীর পরিচালনায় এফডিসি থেকে নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আকাশ আর মাটি’তে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। নায়িকা ছিলেন সুমিতা দেবী। তাই তাঁকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের প্রথম নায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

১৯৫৯ সালে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। পরে আরও পাঁচটি সিনেমায় নায়ক হন তিনি।

আমিনুল হক ১৯৬১ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা) এর নাট্য বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকে তিনি অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক হিসেবেও কাজ করেছেন।

আমিনুল হক মোট ৩৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো - মুখ ও মুখোশ, আকাশ আর মাটি, তোমার আমার, জোয়ার এলো, গোধূলীর প্রেম, অপরাজেয়, জয় বাংলা, এপার ওপার, জানোয়ার, অচেনা অতিথি, নাজমা ও রাবেয়া।

তার স্ত্রীর নাম পিয়ারি বেগম। এই চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজমা নামে পরিচিত ছিলেন। ‘মুখ ও মুখোশ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় তাদের পরিচয় হয়। তাদের একমাত্র সন্তান রবিউল আলম বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।

আমিনুল হক ১৯৯১ সালে নাট্যকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন।

৩১ জুলাই ২০১১ সালে তিনি পরলোকগমন করেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি।