• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

নীলফামারীতে “ফ্রিতে” অস্বচ্ছলদের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপকরণ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২০  

ভুপেন হাজারিকার গাওয়া সেই গান “মানুষ মানুষের জন্যে -জীবন জীবনের জন্যে একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা”--- হ্যা পারে - এই সময়ে অস্বচ্ছল মানুষদের জন্য আজ অনেক সামাজিক সংগঠন ও ব্যাক্তি বিশেষ এগিয়ে এসেছে।  করোনা ভাইরাসের সংকট কালিন এই সময়ে অস্বচ্ছল মানুষদের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ফ্রিতে বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হচ্ছে নীলফামারীতে। ইতোমধ্যে নাম পরিচয়হী ব্যক্তি সংগঠনের এই উদ্যোগ বেশ প্রশংসিত হয়েছে।


গতকাল শনিবার(২৮ মার্চ/২০২০) ঘুরে দেখা যায় জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে এই উপকরণের পসরা বসিয়ে রাখা হচ্ছে ভ্রাম্যমান ভাবে। সেখানে টিস্যু, সাবান, পাউডার, স্যানিটাইজার, মাস্ক, টুথপেষ্ট বিভিন্ন উপকরণ শোভা পাচ্ছে।
শহরের হাজী মহসিন সড়কের মকবুল হোসেন মার্কেট প্রাঙ্গণে দেখা মিলে এই ভ্রাম্যমান দোকানের। মালিক বিহীন এই দোকানে সাজানো রয়েছে নানা উপকরণ। এ যেন অন্য রকম দৃশ্য। অস্বচ্ছল মানুষদের জন্য ফ্রি- প্রয়োজনের বেশি নিবেন না ব্যানারে সজ্জিত রয়েছে এসব পণ্য।


দুরে বেশ খানিক্ষন দাঁড়িয়ে দেখা  যায় বর্তমান সময়ে মানুষের বিবেক জাগ্রত হয়েছে। কোন সচ্ছল মানুষ ভুল করেও এর ধারে ভিড়েনি। যারা প্রকৃত অসচ্ছল তারাই এসে তাদের প্রয়োজন মতো নিচ্ছেন। ফ্রিতে নিতে আসা ভ্যান চালক ইয়াসিন আলী জানান, আমরা গরীব মানুষ। যতটুকু উপার্জন করি সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। আর বাড়তি কোন দিকে মনোযোগ দিতে পারিনা।


করোনা ভাইরাস অঅজ দেশ বিদেশকে অচল করে দিয়েছে। এ  কারণে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য হুইল পাউডার, সাবান, টিস্যু নিলাম ফ্রিতে উপকারে আসবে। কারা এই সেবা দিচ্ছেন তাদের কাউকেই পাচ্ছিনা।  সেবার জন্য যারা উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বড় বাজার, গাছবাড়ি, চৌরঙ্গি মোড়, বঙ্গবন্ধু চত্বর, পিটিআই মোড়, আনন্দবাবুর পুলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে একেক দিন রাখা হয় এই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপকরণ সমাহার।


এদিকে শহরের ঔষুধ, মুদি দোকানগুলোতে আগত ক্রেতাদের নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে চিহিৃত করে দেয়া হচ্ছে। আর এসব করে দিচ্ছেন স্থানীয় কিছু যুবক।
নীলফামারীর জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীন সম্মিলন পরিষদের সাধারণ স¤পাদক রাসেল আমিন স্বপন জানান, একজনের সং¯পর্শে আরেকজন আক্রান্ত হতে পারেন করোনার কারণে। এজন্য দোকানগুলোতে আসা ক্রেতাদের নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখতে আমরা নির্দিষ্ট সীমা রেখা করে দিচ্ছি। এতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা হবে।


মানুষ মানুষের জন্য যা প্রমাণ পাওয়া যায় এসব কর্মসুচীর মাধ্যমে। সংকটের এই সময়ে পাশে দাঁড়ানো সবার কর্তব্য বলে মনে করেন টিআইবি পরিচালিত সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) নীলফামারীর সভাপতি তাহমিনুল হক ববি।

তিনি বলেন, আমরা অনেক আগেই অন্ধকার যুগ পেরিয়ে এসেছি। আমরা এখন সভ্য সমাজের মানুষ। আমরা আলোকিত সমাজের বাসিন্দা। তবুও কেন আমরা নিজেদের অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছি? এর মূলে রয়েছে অন্ধ বিবেক। আমরা অন্ধ বিবেকের বদ্ধ ঘরে থাকতে চাই না। আমাদের সমাজ, আমাদের দেশ সুন্দরভাবে সাজাতে চাই। সত্যের আলোয় ভরে উঠুক আমাদের সমাজ। সত্য, সুন্দর ও স্বচ্ছতায় জেগে উঠুক বিবেক।

তিনি জানান, করোনা ভাইরাসে বর্তমান সময় মানুষের পাশে দাড়াঁনোর  বিশেষ করে অস্বচ্চল মানুষ যারা দিন আনে দিন খায় তাদের সব রকম সামর্থ থাকে না। তিন বেলা খাওয়ার পাশাপাশি দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোয় কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।এখন আমরা যদি তাদের যদি পাশে দাঁড়াতে পারি তাহলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবো। ফ্রিতে উপকরণ বিতরণ নিঃসন্দেহে মহৎ উদ্যোগ।