• রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

পাউবোর জমি দখল করে চেয়ারম্যানের মার্কেট নির্মাণ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

নীলফামারীর ডিমলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি দখল করে দোকানঘর তুলে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেছেন। 

জানা গেছে, উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নে চাপানির হাট একটি আদি ও ঐতিহ্যবাহী হাট। এ হাটে ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা ছাড়াও হাট-বাজারের জায়গা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি রয়েছে। তবে হাটের বেশিরভাগ জায়গাই পাউবোর। 

স্থানীয়রা জানান, চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের লোকজন হাটে পাউবোর জায়গায় শতাধিক দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে চলছে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের দখল কার্যক্রম। সর্বশেষ চাপানী-জলঢাকা মূল সড়কের পাশে প্রায় ১৫ শতাংশ জায়গায় ১২টি পাকাঘর নির্মাণ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল। দখল করা জমির দাম প্রায় দুই কোটি টাকা। সেখানে ছয়টি ঘর নির্মাণাধীন ও ছয়টির কাজ শেষে হয়েছে। এসব দোকানে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যবসা করছেন। প্রতিটি দোকানের জন্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে প্রতি মাসে দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা চুক্তিতে চেয়ারম্যান ভাড়া দিয়েছেন।

চাপানির হাটের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এই হাটের বেশিরভাগ জায়গা পাউবোর। ইউপি চেয়ারম্যান সরকারি জায়গায় দোকান নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। হাটে পাউবোর জায়গায় শতাধিক দোকান তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন চেয়ারম্যান ও তার পরিবারের লোকজন। তারা বছরের পর বছর এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া উত্তোলন করছেন।

হাটের দোকানদার তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি তো জায়গা দখল করিনি। দোকান হিসেবে নিয়েছি, আমি একজন ভাড়াটে মাত্র। চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা জামানত দিয়ে মাসিক ২ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নিয়েছি।

আরেক দোকানদার শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানের জামানত হিসেবে অগ্রিম ২ লাখ টাকা নিয়েছেন চেয়ারম্যান। মাসিক ভাড়া ২ হাজার টাকা। 

এ বিষয়ে ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একরামুল হক চৌধুরী বলেন, জায়গাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও আমার দখলে আছে। আগের কাঁচা দোকান ভেঙে পাকা ঘর বানিয়ে ভাড়া দিয়েছি। অনেকেই পাউবোর জায়গা দখল করে দোকানপাট করেছেন। আমি করলে সমস্যা কী?

চেয়ারম্যানের দাবি, পাউবোর জায়গায় গড়ে তোলা আগের শতাধিক দোকানের ভাড়া তার ভাই ও ভাতিজারা আদায় করেন। তার দখলে শুধু এই জায়গাটি রয়েছে।

ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ইতোমধ্যে আমরা নোটিশ করেছি। এর মধ্যে উনারা ভেঙে না নিলে, উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবো। পাউবোর জায়গায় অবৈধ দখলদারিত্বের কোনো সুযোগ নেই।

পাউবোর উত্তরাঞ্চল প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান বলেন, পাউবোর এ সকল জায়গা কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই। যারাই অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে তাদের তালিকা তৈরি করে অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হবে।