• শনিবার ০৪ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ মাদুর

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৩  

 
শুরু হয়েছে দিন বদলের পালা। বদলে যাচ্ছে জীবন-জীবিকা। এক সময় জীবিকা নির্বাহের তাগিদে গ্রামীণ নারীরা বুনতেন মাদুর (শপ)। গ্রাম-গঞ্জের মানুষেরা বারান্দা, উঠোনে, মাটিতে পরিবেশ বান্ধব মাদুর বিছিয়ে তাতে শুয়ে-বসে ক্লান্তির অবসানের পাশাপাশি বিনা এসি ও ফ্যানে শান্তির ঘুম দিতেন।

জমিতে চাষ করা মোথা ঘাস রোদে শুঁকিয়ে তা দিয়ে মাদুর তৈরি করা হয়। সনাতন ধর্মালম্বীদের পূজা পার্বণ, শ্রাদ্ধ, বিয়ের পিঁড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অন্যান্য উপকরণের সঙ্গে মাধুর (শপ) আজও ব্যবহার হয়ে থাকে।

কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে নীলফামারী কিশোরগঞ্জে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী শীতলতার পরশ মাদুর (শপ) শিল্প। কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সিট রাজিব, বাংলাবাজার, দুন্দীপাড়া, রণচন্ডী, মুসাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে মাদুর তৈরি হতো।

সরেজমিনে বিভিন্ন গ্রাম মহল্লার আঁকা বাঁকা মেঠো পথ ঘুরে এই কুটির শিল্পটির দুর্দিন দেখা গেছে। কিন্তু উপজেলার সিট রাজীব দুন্দীপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা আজও পূবর্পুরুষের পেশার শেষ প্রান্ত কুটির শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। ওই গ্রামের মাদুর তৈরীর কারিগর চন্দ্রা জানান, আগোত শপের খুব চাহিদা ছিল, এলা কমি গেইছে, মানুষি এখোন হামার হাতে বানা (তৈরি) সপ কম নেয়ছে। হামরাও আর আগের মতন শপ বানাইনা। খাঁটি খুটি যেকনা লাব (লাভ) হয় সেকনা দিয়া সংসার চলে না। পারাটাত সবার বাড়িতে বাড়িতে শপ বানাইছিল এলা ছাড়ি দিছে।

বাড়িতে তৈরী মাদুর বাজারে এবং নিজে ফেরী করে বিক্রি করেন তার স্বামী পরমেশ্বর রায়। গ্রামীণ নারীদের কাছে কালের পরিবর্তনে এটি এখন বিলুপ্ত প্রায়।

পরমেশ্বর রায় বলেন, আমি ২০ বছর ধরে এ পেশায় আছি। আগেকার সময়ে মাদুর খুব বিক্রি হতো। পাড়ায় বের হলে মানুষের হিরিক লেগে যেত এখন আর আগের মত মাদুর মানুষ কিনে না।

মাদুর ক্রেতা কল্পনা বলেন, আগেকার সময় মাদুর ব্যবহার করা হতো খুব। খাওয়ার সময় মাদুর বিছিয়ে সবাই খেতাম এখন আর তেমনতটা দেখা যায় না। বিশেষ করে গরমের সময়ে মাদু অনেক উপকারে আসে।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তামান্না জানায়, আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্পকর্মে প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করে মাদুর শিল্পের সময়োপযোগী জিনিসপত্র তৈরি এবং বিদেশে পণ্যের বাজার সৃষ্টিতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। পাশাপাশি শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে পৃষ্ঠপোষকতা খুবই জরুরী। আমরা গ্রামীণ নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি।