• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

সরিষায় বদলে গেছে গ্রামের নাম 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪  

বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুধুই হলুদের সমারোহ। মাঝে মধ্যে সবুজের ঝিলিক। এ এক অনিন্দ্য সুন্দর মোহনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তৈরির কারিগর ১৫৬ জন কৃষক। আর এরকম মোহনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করে নিজেদের গ্রামের নামই পরিবর্তন করে দিয়েছেন তারা। নীলফামারীর কুন্দপুকুর ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রাম এখন সরিষা গ্রাম নামে পরিচিত।

জমি পতিত ফেলে না রাখা ও স্থানীয় ভাবে তেলের চাহিদা পূরণে চাষিরা সরকারি সহযোগিতায় করেছেন সরিষা আবাদ। গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে যে দিকেই চোখ যায়, শুধুই সরিষা আর সরিষা। 

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় ভাবে ভোজ্য তেলের চাহিদা মিটাতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সরিষা আবাদকে উৎসাহিত করা হয়েছে। নীলফামারী প্রধানত কৃষি প্রধান এলাকা। পুরো জেলা জুড়ে হাজারো গ্রামে বিভিন্ন ফসল আবাদ হয়। নির্দিষ্ঠ ফসল আবাদে গ্রামের পরিচিতি হয় এরকম ঘটনা খুবই কম। সদর উপজেলার কুন্দপুকুর ইউনিয়নের কাচারী গ্রামের কৃষকেরা তা করে দেখিয়েছে। পুরো গ্রামের বিস্তীর্ণ, মাঠের পর মাঠে এখন শুধুই সরিষার আবাদ।

বাতাসে সরিষার হলুদ ফুলের নাচনে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এক অনিন্দ্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। ফলে পুরো জেলাজুড়ে এই গ্রাম সরিষা গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। সদরের যে কোন স্থানে দাঁড়িয়ে জানতে চাইলে মানুষ দেখিয়ে দেয় সরিষা গ্রাম কোন দিকে।

সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ নীলফামারীতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে টার্গেট মোতাবেক ৮ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের পরিকল্পনা নেয়। সে মোতাবেক তারা জেলায় চাষিদের প্রণোদনা দেয়াসহ সরিষা আবাদে উপকারিতার বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া শুরু করে। সে পরিকল্পনা মোতাবেক সদরের কুন্দপুকুর ইউনিয়নের কাচারী গ্রামের ১৫৬ জন কৃষককে বাছাই করে সরিষা আবাদ নিয়ে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেয়। গত বছর তারা ৩০০ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছিল। এবার তারাই ৪২২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করে গ্রামের নামই পরিবর্তন করে ফেলেছে।

সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রশিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ২ বছর ধরে এই গ্রামের ১৫৬ জন কৃষককে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি। তাদেরকে সরিষা চাষের পদ্ধতি, উপকারিতা ও চাষের পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যার ফলে শুধু একটি গ্রামেই ৪২২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করা সম্ভব হয়েছে। 

ঐ এলাকার কৃষক আতিয়ার রহমান, জহুরুল হক, তাদের খান, তোবারক হোসেন বলেন, সরিষা আবাদ করে আমরা অতিরিক্ত আয় করতে পারছি। সরিষা গাছের কোন কিছুই অব্যবহৃত থাকে না। তাছাড়া জমির উর্বরতা বাড়ে।

কৃষিবিদ আতিক আহমেদ, উপজেলা কৃষি অফিসার, সদর, নীলফামারী এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অমরা নীলফামারীতে কৃষকদের প্রণোদনাসহ প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। নীলফামারী জেলায় এবার সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৮ হাজার ৬৩৬ হেক্টর হলেও আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৬৭২ হেক্টর জমিতে।