• বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ২৫ ১৪৩১

  • || ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানির গোশত কী করতে হবে?

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৪  

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলার নামে পশু জবাই বা কোরবানি করা একটি স্বতন্ত্র ও ইসলামের অন্যতম তাৎপর্যমণ্ডিত এবং ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এতে আছে আত্মত্যাগের ঐতিহাসিক মহিমা।

সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। মহান রাব্বুর আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে নামাজের সঙ্গে যুক্ত করে কোরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, اِنَّاۤ اَعۡطَیۡنٰکَ الۡکَوۡثَرَ فَصَلِّ لِرَبِّکَ وَ انۡحَرۡ اِنَّ شَانِئَکَ هُوَ الۡاَبۡتَرُ

অর্থ: ‘নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি। সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। নিশ্চয় তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণকারীই নির্বংশ’। (সূরা: কাওসার, আয়াত: ১-৩)

আর তাই কোরবানির গুরুত্ব, মহত্ব ও ফজিলতের দিকে খেয়াল রেখে আমাদের এমন কিছু বিষয় মেনে চলা বা জানা জরুরি; যা শরিয়তে বৈধ এবং নিষিদ্ধ। সেই বিষয়গুলো কী কী?

উক্ত বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রেখে আজ আমরা জানার চেষ্টা করবো- মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানির গোশত কী করতে হবে?

অন্যান্য নফল ইবাদতের মতো মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করে তার সওয়াবের আশা করা যায়। আয়েশা (রা.) বলেন, أَنَّ رَجُلاً قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّيَ افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا وَإِنِّي أَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ فَلِيَ أَجْرٌ أَنْ أَتَصَدَّقَ عَنْهَا قَالَ نَعَمْ

অর্থ: ‘এক ব্যক্তি নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললো, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। তার ব্যাপারে আমি ধারণা করি, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তবে সাদাকার অসিয়ত করতেন। আমি যদি তার পক্ষে সাদাকা্ করি, তবে কি আমার এ কাজের কোনো সাওয়াব হবে? নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ’। (সহিহ মুসলিম: ৪০৭৪)

নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পক্ষ থেকে কোরবানি করার পাশাপাশি নিজের উম্মতের পক্ষ থেকেও কোরবানি করতেন। আয়েশা (রা.) ও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُضَحِّيَ اشْتَرَى كَبْشَيْنِ عَظِيمَيْنِ سَمِينَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مَوْجُوءَيْنِ فَذَبَحَ أَحَدَهُمَا عَنْ أُمَّتِهِ لِمَنْ شَهِدَ لِلَّهِ بِالتَّوْحِيدِ وَشَهِدَ لَهُ بِالْبَلاَغِ وَذَبَحَ الآخَرَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَعَنْ آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم

অর্থ: আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোরবানির ইচ্ছা করলে ২টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের ও ছিন্নমুষ্ক মেষ ক্রয় করতেন। এর একটি নিজের উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তার নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানি করতেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২২)

মৃত ব্যক্তি যদি কোরবানির জন্য অসিয়ত না করে থাকে তবে মৃত ব্যক্তির নামে দেওয়া কোরবানি নফল কোরবানি গণ্য হবে এবং ঐ কোরবানির গোশত নিজেরা খাওয়া যাবে, আত্মীয়-স্বজনকেও দেওয়া যাবে।

আর যদি মৃত ব্যক্তি কোরবানির ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে, তবে ঐ অসিয়ত পূরণের জন্য দেওয়া কোরবানির গোশত নিজেরা খাওয়া যাবে না এবং সম্পদশালী আত্মীয়দের দেওয়া যাবে না। ঐ গোশত দরিদ্র ও মিসকিনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।