• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

গুগল ডুডলে কবি সুফিয়া কামাল

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯  

জননী সাহসিকা কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ডুডল বানিয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে গুগলের বাংলাদেশের ডোমেইন হোম পেজে দেখা যাচ্ছে কবি সুফিয়া কামালকে।

বিশেষ দিন, বিশেষ ঘটনা বা বিশেষ কোনো মুহূর্ত ফুটিয়ে তুলতে ডুডল প্রকাশ করে গুগল। কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯১১ সালের এই দিনে বরিশালের শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

সুফিয়া কামাল শৈশবে নানার বাড়িতে থাকায় বহুভাষায় পণ্ডিত বড় মামার সান্নিধ্য এবং তার সমৃদ্ধ লাইব্রেরির সংস্পর্শে জ্ঞানচর্চার প্রতি অনুরাগী হয়ে ওঠেন। সাহিত্য পাঠের পাশাপাশি সুফিয়া কামাল সাহিত্য রচনা করেন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা ‘বাসন্ত’ সওগাত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত হয় তার গল্পের সংকলন ‘কেয়ার কাঁটা’। ১৯৩৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’র মুখবন্ধ লেখেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।

পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সঙ্গীত নিষিদ্ধের প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন। এ বছর তিনি ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন।

১৯৭০ সালে তিনি মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন।

স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ কারফিউ উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন।

সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। প্রতিটি প্রগতিশীল আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এ ছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরি তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ।

সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশি পুরস্কার লাভ করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার, সোভিয়েত লেনিন পদক, একুশে পদক, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার ও স্বাধীনতা দিবস পদক।

মহীয়সী এই নারী ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন।