• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনার প্রভাবে কুড়িগ্রামে ফার্মেসিগুলোতে ঔষধের কৃত্রিম সংকট     

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০২১  

কুড়িগ্রামে গত দেড় মাস ধরে করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও শহর ও গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে সর্দি-জ্বরের প্রকোপ। ঘরে ঘরে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ায় দেখা দিয়েছে প্রতিষেধক ট্যাবলেট ও প্যারাসিটামল সিরাপের তীব্র সংকট। ক্রেতা ও বিক্রেতারা মনে করছেন ঔষধ কোম্পানীগুলো কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছেন। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন সারাদেশে একসাথে চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

সরজমিনে শহরের হাসপাতাল মোড়, পৌরবাজার, জিয়াবাজার, ত্রিমোহণী বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটের ফার্মেসি এবং গ্রাম গঞ্জের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে তীব্র ঔষধ সংকটের চিত্র। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ফার্মেসিগুলোতে ঔষধ কিনতে গেলেই অনেককেই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। অথচ কিছুদিন আগে পর্যন্ত বিভিন্ন খোলা দোকানে এসব ঔষধ ও স্যালাইন পাওয়া গেলেও সংকটের কারণে এখন আর তা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন ফার্মেসিতে ছুটতে হচ্ছে ক্রেতাগণকে। এ অবস্থা গত দেড়মাস ধরে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে।

জেলা শহরের পৌরবাজার এলাকায় ‘নিউ টাউন প্লাস’ ফার্মেসিতে ওষুধ কিনতে আসা রোগীর এক স্বজন আহমেদুল কবির জানান,‘আমাদের বাড়িতে সবার একের পর এক জ্বর হচ্ছে। চিকিৎসকগণ দ্রুত জ্বর থেকে মুক্তি মিলতে নাপা রেপিড ট্যাবলেট লিখেছেন। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত গত তিনদিন যাবত এ ট্যাবলেট কোথাও পাচ্ছিনা। কোন ডিসপেনসারিতেই প্যারাসিটামল নেই। কর্মচারীরা বলছেন, সাপ্লাই নাই দেই কি করে। অপরদিকে লাইফ ফার্মেসি, সবুজ ফার্মেসি, সততা ফার্মেসি, টাউন ফার্মেসিসহ বিভিন্ন ফার্মেসিতে খোঁজ নিলে দেখা গেল এসব ফার্মেসিতে নাপা, নাপা এক্সটেন্ড, নাপা রেপিড, নাপা সিরাপ, এইচ,এইচ প্লাস, এক্সএল ইত্যাদি ওষুধগুলো নেই। অথচ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বরাবরই প্যারাসিটামল প্রেসক্রিপশনে লিখে যাচ্ছেন। কোন কোন চিকিৎসক মনে করেন যে নাপা গ্রুপের সবচেয়ে কার্যকরী ট্যাবলেট নাপা রেপিড। তাই অধিকাংশ চিকিৎসক এ ওষুধটি জ্বর, মাথা-গলা ও গায়ে ব্যাথার জন্য প্রত্যেক রোগীকে লিখে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় রোগীরা পরেছেন বিপাকে। 

‘লাইফ ফার্মেসির মালিক উদয় শঙ্কর চক্রবর্তী প্যারাসিটামল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, এখন মানুষ প্রয়োজনের তুলনায় হুমড়ি খেয়ে এক পাতার জায়গায় ৫পাতা ট্যাবলেট কিনছেন। তাছাড়া চিকিৎসকগণ নাপা রেপিডসহ দু-একটি ট্যাবলেটের নাম লিখায় এরুপ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। 

সবুজ ফার্মেসির বিক্রেতা নিত্য চন্দ্র বর্মন জানান, আমরা ওষুধ কোম্পানিগুলোকে যদি আগাম অর্ডার দেই ৫প্যাকেট তারা আমাদের দেন মাত্র ১ প্যাকেট। তাহলে তো সংকট হবেই। 

কুড়িগ্রাম জেলা ড্রাগ এন্ড মেডিসিন বিক্রেতা এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি উজ্জ্বল সরকার বলেন, বর্তমানে নাপা গ্রুপটি বেশি চলছে। কোম্পানিও শর্ট দিচ্ছে আবার কিছু ওষুধ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে ধীরে ধীরে ওষুধ মার্কেটে ছাড়ছে। 

বেক্সিমকো ওষুধ কোম্পানির কুড়িগ্রাম এরিয়া ম্যানেজার কিংশুক পোদ্দার প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, করোনাকালিন সর্দি, জ্বর ও ব্যাথাসহ এ ওষুধের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা সাপ্লাই দিতে হিমশিম খাচ্ছি। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি কেন্দ্র অফিসে জানিয়েছি।