• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২১ অক্টোবর ২০২১  

কার্তিক মাসের বৃষ্টি আর উজানের ঢেউয়ে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ২৪ ঘণ্টা পরে তা নিচে নেমে এসেছে। ফলে তিস্তা নদীর বাম তীরের লালমনিরহাটের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকালে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২০ মিটার। যা বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ মিটার) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে বুধবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১২টায় এ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় তিস্তা নদীর পানি।

জানা গেছে, ভারতের সিকিম উপত্যকা থেকে সৃষ্ট তিস্তা নদী ভারতে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। উজানে ভারতের অংশে ভারত সরকার বাঁধ নির্মাণ করে তিস্তা নদীর এক তরফা ভাবে ব্যবহার করছে।

ফলে শুষ্কু মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে কোনো পানি থাকে না। মরুভূমিতে পরিণত হয় তিস্তা।

আবার বর্ষাকালে অতিবর্ষণের ফলে ভারতের অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যা আর তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলাসহ নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলা।

চলতি বর্ষা মৌসুমেও কয়েক দফায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরে পানি কমতে থাকে তিস্তায়। বর্ষা শেষ না হতেই আবারও পানি শূন্য হতে থাকে তিস্তা নদী। প্রায় শূন্যের কোটায় যাওয়া তিস্তা গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে কার্তিক মাসেও ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা নদী। হঠাৎ পানি বাড়ার কারণে বুধবার তিস্তার উভয় তীর উপচিয়ে প্রবাহিত হয়। ডুবে নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর জমির উৎতি ফসল। ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ।

পানি তোড়ে ভেঙ্গে গেছে আদিতমারীর মহিষখোচার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধা(ওয়াব্দা)। ভেঙ্গে গেছে কালীগঞ্জের কাকিনা রংপুর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে নদী তীরবর্তী এলাকায়। গংগাচওড়া শেখ হাসিনা সেতু হয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গত দুই দিনে উজানের ভারত ও বাংলাদেশে ভারী বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। যা মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। বুধবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ২০ মিটার। তা আবারও বেড়ে গিয়ে ওই দিন দুপুর ১২টায় রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ৩০ মিটার। যা বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানির চাপে ফ্লাড বাইপাস ভেঙ্গে যায়। ফলে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়। ২৪ ঘণ্টা পরেই পানি প্রবাহ কমে গিয়ে বৃহস্পতিবার(২১ অক্টোবর) সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি ঘটেছে।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউ দৌলা  বলেন, পানি প্রবাহ বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। বন্যা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি ঘটেছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বন্যার্তদের জন্য ৭০ মেঃটন চাল ও ৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। পানি কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থির উন্নতি ঘটেছে।