• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

রংপুরে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭২ জন করোনা রোগী শনাক্ত

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২২  

রংপুর বিভাগে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমিত রোগী সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৯৬ শতাংশে। এই সময়ে কোনো রোগী মারা যায়নি। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ (ইয়েলো জোন) এই অঞ্চলে দিন দিন করোনার সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলার ৪০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের ২৬, রংপুরের ২১, নীলফামারীর ৭, ঠাকুরগাঁওয়ের ৭, পঞ্চগড়ের ৪, লালমনিরহাট ৩ এবং কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার ২ জন করে করোনা পজিটিভ হয়েছেন। বিভাগে নতুন করে আরও ৫৯ জন সুস্থ হয়েছেন।

একই সময়ে লালমনিরহাটের বুড়িমারী, দিনাজপুরের হিলি ও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন ৩০ জন।

এর আগের দিন (রোববার) আট জেলায় ৪৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ওই দিন ২৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ছিল ১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শনিবার বিভাগে ২২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আরও ২৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সেই দিন শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

পরিচালক (স্বাস্থ্য) আরও জানান, রংপুর বিভাগে করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুরে। এ জেলায় সর্বোচ্চ আক্রান্ত ১৫ হাজার ৭ এবং ৩৩২ জন মারা গেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বিভাগীয় জেলা রংপুরে। এ জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৬৭০- তে।

এ ছাড়া জেলা হিসেবে সবচেয়ে কম ৬৩ জন মারা গেছে গাইবান্ধায়। এ জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮৯৬ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে মৃত্যু ২৫৬ ও শনাক্ত ৭ হাজার ৭২৩, নীলফামারীতে মৃত্যু ৮৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৪৭৮, পঞ্চগড়ে মৃত্যু ৮১ ও শনাক্ত ৩ হাজার ৮৪২, কুড়িগ্রামে মৃত্যু ৬৯ ও শনাক্ত ৪ হাজার ৬৫৭ এবং লালমনিরহাট জেলায় মৃত্যু ৬৯ ও আক্রান্ত ২ হাজার ৭৮২ জন।

তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভাগে মোট ৩ লাখ ১০ হাজার ৪৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আট জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৫২ জনের। এখন পর্যন্ত বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ৫৪ হাজার ৩৬৩ জন।

এদিকে রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে তিন জেলাকে ইতোমধ্যে ইয়েলো জোন (মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এসব জেলাসহ পুরো বিভাগেই নতুন করে দেওয়া সরকার নির্দেশিত বিধিনিষেধের কোনো প্রভাব পড়েনি। সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই কোনো আতঙ্ক।

এমনকি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কোথাও চলছে না কার্যক্রম। বাধ্যতামূলক মাস্ক পরার কথা থাকলেও হাটবাজার, পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত সবখানেই তা উপেক্ষিত। স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার নীতি অমান্য করে চলছে সভা-সমাবেশ, উৎসবসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কার্যক্রম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম বলেন, গণটিকাসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে টিকার আওতায় আনার ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমে আসছে। তবে বর্তমানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন এবং করোনার ঊর্ধ্বমুখী পরিস্থিতিতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে, তা উদ্বেগজনক।

একই সঙ্গে শীতকালে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সঙ্গে সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।