• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৫ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ রণাঙ্গনে চলছিল মুক্তিকামী জনতার বিজয়োল্লাস

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

একাত্তরের ১৫ ডিসেম্বর। এদিন মুক্ত হয় চট্টগ্রামের কুমিরা, খাগড়াছড়ি ও বগুড়া। ঠিক সে সময় যৌথবাহিনী তখন ঢাকা অবরোধ করে রেখেছে। বেতারে বার বার পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ জানানো হচ্ছিলো। আর পাকবাহিনী নিশ্চিত হতে চাচ্ছিল যে তাদেরকে হত্যা করা হবে না। 

যৌথ বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল শ্যাম মানেকশ’ পরদিন ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টার মধ্যে আত্মসমর্পণ করার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল নিয়াজির উদ্দেশে বেতার বার্তা পাঠান। 

এই বার্তার বিশ্বাস যোগ্যতা সৃষ্টির জন্য ১৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা থেকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত সব ধরনের বিমান হামলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। তখন আত্মসমর্পণের শর্ত নির্ধারণ ও সময় বৃদ্ধির জন্য জেনারেল নিয়াজি রাও ফরমান আলীকে নিয়ে ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেলের বাস ভবনে যান। 

মার্কিন কনসাল জেনারেল তাদের জানান, এ মুহূর্তে তার করার কিছুই নেই। একটি কাজই তিনি করতে পারেন, তা হচ্ছে আত্নসমর্পণের সময় বৃদ্ধির আবেদনটি যৌথ বাহিনীর হেডকোয়ার্টারে পৌঁছে দিতে পারেন। 

সে সময় দেশের অধিকাংশ রণাঙ্গনে চলছিল মুক্তিকামী জনতার বিজয়োল্লাস। অসংখ্য নদীনালা, খালবিলসহ নানা প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে এরইমধ্যে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেলায় অবরুদ্ধ ঢাকা কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

এমনকি আত্মসমর্পণ করলে মিত্রবাহিনী কোনো প্রতিশোধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াবে না বলেও পাকিস্তানি জেনারেলকে আশ্বস্ত করা হয়। তবে, সেই সঙ্গে পাকিস্তানি জেনারেলকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে এও বলা হয় যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শর্তহীন আত্মসমর্পণ না করলে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে সর্বশক্তি নিয়ে আক্রমণ করা ছাড়া মিত্রবাহিনীর কোনো গত্যন্তর থাকবে না। জেনারেল নিয়াজী তাত্ক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে পাকিস্তান হেডকোয়ার্টারকে অবহিত করেন। 

পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ১৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ঢাকায় জেনারেল নিয়াজিকে নির্দেশ দেন যে, ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের জন্য যে সব শর্ত দিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য তা মেনে নেয়া যেতে পারে। নিয়াজি তাত্ক্ষণিকভাবে তা ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল মানেক শকে অবহিত করেন।