• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আঙুল অপারেশনে শিশুর মৃত্যু: মামলা করতে ঢাকায় মাইশার বাবা-ভাই

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২২  

মাইশার বয়স যখন ৯ মাস তখন চুলার আগুনে পুড়ে যায় তার ডান হাতের আঙুল। তখন কুঁকড়ে যায় মাইশার ডান হাতের তিন আঙুল। আঙুলগুলো ঠিক হয়ে যাবে আশা করে, সম্প্রতি ঢাকার এক চিকিৎসকের পরামর্শে আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয় শিশুটির। আর সেই অস্ত্রোপচারই যেনো কাল হলো। অস্ত্রোপচার করতে গিয়েই মৃত্যু হলো মাইশার। মৃত্যুর পর মরদেহ বাড়িতে নেয়া হলে পেটে মেলে ২০টি সেলাই।

ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামে। মারুফা জাহান মাইশা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়ার মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তার দম্পতির মেয়ে।

সোমবার এ ঘটনায় হাসপাতালসহ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে অভিযোগ করতে ঢাকায় এসেছেন মাইশার বাবা ও তার ভাই।

মাইশার বাবা মোজাফফর বলেন, অপারেশনের খরচ বাবদ নেয়া টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মরদেহ বাড়িতে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সও ঠিক করে দেয়। কিন্তু পথে কয়েকবার চালক পরিবর্তন হয়, গ্যাসের সমস্যার কথা বলে বগুড়ায় নামিয়ে দেয়। পরে অন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়িতে নেয়া হয় মাইশার মরদেহ। দাফনের জন্য গোসল করাতে গিয়ে নারীরা দেখতে পান, শিশু মাইশার নাভির নিচে পুরো পেটে সেলাই করা। পরে তারা পুলিশে খবর দেন। কিন্তু ঢাকায় অপারেশন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলার পরামর্শ দিয়ে পুলিশ চলে যায়। পরে নিরুপায় হয়ে মাইশাকে দাফন করা হয় বাড়ির আঙিনায়।

তিনি আরো বলেন, মেয়ের হাতের আঙুল ঠিক করার জন্য ঢাকার মিরপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের ডা. আহসান হাবীবের কাছে যাই। তিনি সবকিছু দেখে বলেন বুধবার সকালে অপারেশন করা হবে। রূপনগরে আলম মেমোরিয়াল মেডিকেলে তার শেয়ার আছে জানিয়ে ডাক্তার বলেন, সেখানে অপারেশন করালে খরচ কম লাগবে। বুধবার সেখানে হাতের অপারেশন করার সময় মেয়ে মারা যায়। পরে তারা আমাদের টাকা ফেরত দেয় এবং ধমক দিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি এসে মেয়েকে গোসল করার সময় স্থানীয় মহিলারা দেখেন, মেয়ের তলপেটের পুরো অংশ কেটে সেলাই করা।

তিনি বলেন, আমরা এটা দেখে নিরুপায় হয়ে পড়ি। আমরা গরিব মানুষ। কিছু বুঝিনি। হাত অপারেশন করতে গিয়ে তারা কেনো আমার মেয়ের পেট কাটল তা জানি না। আমাদের কোনো কাগজপত্রও দেওয়া হয়নি।
 
জানা গেছে, অভিযুক্ত চিকিৎসক মো. আহসান হাবীব বিসিএস ২৫ ব্যাচের চিকিৎসক। বর্তমানে তিনি মহাখালীতে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) হিসেবে কর্মরত। এ ঘটনায় অপর চিকিৎসক হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলাম।