• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বন্যায় স্বাস্থ্য জনিত সমস্যা মোকাবিলায় করণীয়

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০১৯  

উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। কোন কোন এলাকায় আবার বন্যার পানি নেমে যেতেও শুরু করেছে। বন্যায় নানা ধরনের রোগবালাই দেখা দেয় কবলিতদের মধ্যে। বিশেষ করে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সময় এবং তার পরবর্তী সময়ে রোগবালাইয়ের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। 

চিকিৎসকরাও এ বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। তারা এসময়টাতে বেশকিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে বলেছেন। 

বন্যার সময় যেসব স্বাস্থ্য সমস্যা হয়
• বন্যার সময় পানিবাহিত রোগগুলো বেশি হয়। কারণ, তখন পানির উৎসগুলো সংক্রমিত হয়। নলকূপ ডুবে যায়। বিশুদ্ধ পানির অভাব, দূষিত পানির কারণে এ রকম হয়।
আমাশয়, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস হয় সবচেয়ে বেশি। তাই এই রোগগুলো থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

• কিছু মশাবাহিত রোগ হয়, যেমন—ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু। আটকে থাকা পানিতে এই রোগের জীবাণুগুলো সহজেই বংশবিস্তার করতে পারে। 

• ফাঙ্গাসজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়, বিশেষ করে বন্যা-পরবর্তী সময়টাতে। এ সময় নানা রকম চর্মরোগ, চোখের অসুখ হয়। স্ক্যাবিস, আঙুলের মাঝখানে ঘা, টিনিয়া ইনফেকশন এ সময়ে খুব বেশি দেখা যায়। 

• কৃমির প্রকোপ বাড়ে এ সময়ে। 

• আবহাওয়া ও তাপমাত্রার তারতম্যজনিত কারণে নানা রকম ভাইরাসজনিত অসুখ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, সাইনোসাইটিস ইত্যাদি দেখা দেয়। 

করণীয় 
• বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করাই হলো প্রথম ও প্রধান কর্তব্য।

• পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে। খোলা পানি পান করবেন না। 

• প্রয়োজনে হ্যালোজেন ট্যাবলেট দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করে নিতে হবে। প্রচলিত ফিল্টার দিয়ে পানির জীবাণুমুক্তকরণ সম্ভব হয় না। 

• বাড়িতে সব সময় শুকনো খাবার মজুদ রাখার চেষ্টা করুন। খাবার স্যালাইনও যেন পর্যাপ্ত থাকে। 

• পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে ও পায়খানা করার পর হাত ধুতে সাবান ব্যবহার করবেন। 

• সব সময় হাত-পা পরিষ্কার রাখবেন। বন্যার পানিতে বেশিক্ষণ পা ডোবালে ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। তাই বারবার কুসুমগরম পানি দিয়ে হাত-পা ধুয়ে শুকনা কাপড় দিয়ে হাত-পা শুকিয়ে নিতে হবে। 

• কৃমিনাশক ওষুধ খেতে হবে। 

• জ্বর, জন্ডিস, পেটের অসুখ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

প্রকৃতির এই দুর্যোগ কেটে যাক দ্রুত। সবাই ভালো থাকুক। অসুখ-বিসুখ থেকে দূরে থাকুক।

লেখক : রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।