• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

এক মাসের ছুটি নিয়ে ১ বছর ধ‌রে যুক্তরাষ্ট্রে শি‌ক্ষিকা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২২  

নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকা এক মাসের ছুটি নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বলে জানা গেছে। তার বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ অন্যান্য সহকর্মী ও শিক্ষা অফিসার কারো কাছে কোনো তথ্য নেই। 

এদিকে ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকায় তার ক্লাসগুলো স্কুলের অন্য শিক্ষকরা সমন্বয় চালাচ্ছেন। এতে তাদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো ওই শিক্ষকের নাম মোছা. আশরাফী। তিনি সৈয়দপুর শহরের রহমাতুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সপরিবারে এক প্রকার লাপাত্তা।

জানা গেছে,  রহমাতুল্লাহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. আশরাফী  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ থেকে ১১ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে স্কুল থেকে ছুটি নেন। ছুটি নিয়ে তিনি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তারপর থেকে স্কুলের সঙ্গে ওই শিক্ষিকার কোনো যোগাযোগ নেই। 

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষিকা হাফিজা খাতুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী অসুস্থ শাশুড়িকে দেখার জন্য গত বছর এক মাসের ছুটির আবেদন করেন আশরাফী। তাতে আমার সুপারিশে শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে শিক্ষা অধিদফতরে প্রেরণ করা হয়। পরে তিনি ডিজি’র অনুমতি সাপেক্ষে বিদেশে চলে যান। তবে যাওয়ার সময় ছুটি মঞ্জুরির কোনো প্রকার কাগজ বা প্রমাণপত্র বিদ্যালয়ে বা উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেননি। 

তিনি বলেন, গৃহিত একমাসের ছুটি শেষ হলেও তিনি কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করলে টিওর নির্দেশে গত বছরের ১২ অক্টোবরের পর থেকে হাজিরা খাতায় তাকে অনুপস্থিত দেখিয়ে আসছি। আমার সঙ্গে আশরাফীর কোনো প্রকার যোগাযোগ নেই। কেন তিনি এতদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে তা জানি না। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষিকা আশরাফী মূলতঃ শাশুড়ির অসুস্থতার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত। পাশাপাশি চাকরিও করছেন। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষিকাসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার অবগত এবং কর্তৃপক্ষকেও তারাই ম্যানেজ করে রেখেছেন। আর আমাদের অতিরিক্ত খাটাচ্ছেন। আশরাফী কারো সাথেই যোগাযোগ রাখেনি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

আশরাফীর ভাই কামাল ইকবাল ফারুকীর সঙ্গে যোগাযোগ কেরলে তিনি কোন তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সেইসাথে বোনের কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়েও কোনরকম মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান আলী মন্ডল বলেন,  বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, বিষয়টি আমার এতদিন জানা ছিল না। আজকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা প্রথমে ওই শিক্ষিকাকে অনুপস্থিতির বিষয়ে শোকজ করব। শোকজের জবাব না পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিব।

রংপুর বিভাগীয় প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর জেলা শিক্ষা অফিসারকে এ ব্যাপারে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি। সরকারি চাকরিতে এভাবে ছুটি নেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। তিনি এর মাঝে কোনো বেতনও তুলেননি বলে জানতে পেরেছি।