• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

পরিত্যক্ত লোহা দিয়ে নান্দনিক বগি তৈরি   

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৮ ডিসেম্বর ২০২২  

পরিত্যক্ত লোহা দিয়ে নান্দনিক বগি তৈরি                                
দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে চোখে পড়বে রেলগাড়ির একটি নান্দনিক বগি। যা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে। পরিত্যক্ত লোহা-লক্কর দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বগিটি বানিয়েছেন কারখানার শ্রমিকরা। বগিটি দূর থেকে দেখেই মুগ্ধ অনেকে। আর বগিটি এমন এক জায়গায় বসানো হয়েছে, যে কারণে কারখানাটিকে মনে হচ্ছে নান্দনিক এক রেলের রাজ্য। 

জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর দেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই শহর অনেক আগে থেকে প্রসিদ্ধ হলেও অনেকের কাছে রেলের শহর হিসেবে বেশি পরিচিত। ১৮৭০ সালে ১১০ একর জমির ওপর নির্মিত হয় দেশের প্রাচীন এবং বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ রেল কারখানার ২৬টি উপ-কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন। প্রতিষ্ঠার পর এখানে নতুন কোচ তৈরি হতো। কিন্তু ১৯৯৩ সালে রেল সংকোচন নীতির আওতায় কোচ নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন রেলের ছোট বড় যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইনের বগি মেরামতসহ সব কাজ করা হয় এই কারখানায়। রেলওয়ে সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান অর্জনে দেশের বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই কারখানা পরিদর্শন করেন।

কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান যোগদানের পর দর্শনার্থীদের জন্য কারখানার সৌন্দর্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। এরই অংশ হিসেবে রেলওয়ে দিবসে নান্দনিক বগিটি স্থাপন করা হয়েছে। বগিটি মিটারগেজ ট্রেনের। এর দৈর্ঘ্য ১২ ফুট, প্রস্থ ১১ ও উচ্চতা ৭ ফুট।

রেলওয়ে কারখানার শ্রমিক জহিরুল ইসলাম বলেন, অবসর সময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে আমরা ছয় আসনের বগিটি তৈরি করেছি। এটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছে অব্যবহৃত পুরোনো লোহার যন্ত্রাংশ।

দর্শনার্থী অনিক শিকদার বলেন, ভালো লাগলো। কোনোভাবেই মনে হচ্ছে না এটি পরিত্যক্ত লোহা দিয়ে তৈরি। তাছাড়া বগিটির আলোকসজ্জা অনেক সুন্দর হয়েছে। বগির ভেতরে বসলে মনে হয় এই বুঝি ট্রেন হুইসেল দিয়ে ছেড়ে যাবে স্টেশন।

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, এ পথে যাতায়াতকারীরা সহজেই বুঝতে পারবে কারখানায় ট্রেনের এ ধরনের বগির কাজও করা হয়। সত্যিই এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক সাদেকুর রহমান বলেন, প্রয়োজনীয় জনবল ও অন্যান্য সুবিধা পেলে শুধু মেরামতই নয়, এখানে নতুন বগি তৈরি করাও সম্ভব। পরবর্তী সময়ে এখানে একটি ‘প্রদর্শনী ট্রেন’ স্থাপনের চিন্তাও রয়েছে।

প্রসঙ্গত, দেশের বৃহত্তম এই রেল কারখানায় এক সময় ১০ হাজারের মতো শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৬৮০ জনে। কারখানায় এখন মঞ্জুরি পদের সংখ্যা ২ হাজার ৫৫৯ জন থাকলেও তা পূরণ করা হচ্ছে না।