• সোমবার ১৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৩০ ১৪৩১

  • || ০৪ জ্বিলকদ ১৪৪৫

খালেদার চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে চাঁদা আতঙ্কে বিএনপি নেতারা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিন দফায় প্রায় ছয় মাস চিকিৎসা নেন। সর্বশেষ গত ১ ফেব্রুয়ারি সুস্থ হয়ে গুলশানের বাসা ফিরোজাতে ফিরেছেন। তার এই দীর্ঘ সময় চিকিৎসা সেবায় পরিশোধ করতে হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। ফলে নতুন করে আবার তারেক রহমানের চাঁদা আতঙ্কে রয়েছেন বিএনপির নেতারা।

জানা গেছে, প্রথম দফায় ৫৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ২৬ দিন এবং তৃতীয় দফায় ৮১ দিন হাসপাতালে ছিলেন খালেদা জিয়া। এ দীর্ঘ চিকিৎসায় ব্যয় কে বহন করেছেন? এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন।

এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রথম দফায় ৮৫ লাখ, দ্বিতীয় দফায় ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বিল আসে। আর সর্বশেষ দফায় ২ কোটি টাকার উপরে বিল এসেছে। সব মিলিয়ে চিকিৎসা সেবা বাবদ খরচ প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এসব ব্যয় মিটিয়েছে খালেদা জিয়ার পরিবার।

এভারকেয়ার হাসপাতাল ও খালেদা জিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা সেবা বাবদ সব খরচই খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বহন করা হয়েছে।

এভারকেয়ারের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মোট তিনবার। পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানই সব বিল পরিশোধ করেছেন। কাগজে-কলমে পরিবারের পক্ষে তিনিই দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছিলেন।

তিনি জানান, প্রথম দফায় ৮৫ লাখ, দ্বিতীয় দফায় ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বিল আসে হাসপাতালে চিকিৎসা বাবদ। এবং শেষ দফার বিল আসে ২ কোটি টাকার উপরে।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক বলেন, শেষবার সবচেয়ে বেশি সময় ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ সময়ে অনেক ক্রিটিক্যাল অবস্থার মধ্যে ছিলেন তিনি। আইসিইউ ও সিসিইউতে ছিলেন। দেশে না থাকায় কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম আমেরিকা থেকে অর্ডার করে আনা হয়েছিল। এছাড়া কিছু যন্ত্র অন্য হাসপাতাল থেকেও এভারকেয়ারে আনা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এসবে পুরোপুরি সহায়তা করেছে।

তৃতীয় দফায় চিকিৎসা সেবা বাবদ ২ কোটি টাকার উপরে বিল এসেছে। বিল পরিশোধ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর এসব সমন্বয় করেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সচিব আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, তারেক রহমান সব খরচ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমে জানান, হ্যাঁ, ম্যাডামের সব খরচ পরিবার দিয়েছে। কিন্তু কত বিল এসেছে তা তিনি বলেননি।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

দলটির দায়িত্বশীল কিছু নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিষয়টি নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। কেননা, তারেক রহমানের নির্দিষ্ট কোনো আয় নেই। তিনি কীভাবে এত টাকা পরিশোধ করলেন? তাহলে কি তিনি দলীয় ফান্ড থেকেই এ খরচ বহন করেছেন? নাকি আবারো নেতাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করবেন?

তারা বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় ও করোনা পরিস্থিতির কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য না থাকায় দলের প্রায় সব নেতাকর্মীর আর্থিক অবস্থা নাজুক। এর মধ্যে যদি আবার দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ব্যয় বাবদ নেতাকর্মীদের কাছে চাঁদা চাওয়া হয়, তাহলে বিষয়টি ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়াবে।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা বলেন, কথায় কথায় চাঁদা দাবি করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একটা স্বভাবে পরিণত হয়েছে। তিনি সর্বদা অজুহাতের অপেক্ষায় থাকেন। যেকোনো অজুহাত পেলে তা নিয়ে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে লন্ডনে আয়েশি জীবনযাপন করেন।