জলবায়ু পরিবর্তন :বিশ্ব ও বাংলাদেশ
নীলফামারি বার্তা
প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮
জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাটি অতি ব্যাপক, বিস্তৃত ও মানব সভ্যতার জন্য হুমকি স্বরূপ, ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বরফ গলতে শুরু করবে এবং জলভাগ তুলনামূলকভাবে স্ফীত হবে।
ফলশ্রুতিতে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে বসবাসরত প্রায় দু’কোটি মানুষ বাস্তুহারা হবে, এদেশের নিচু এলাকাসমূহ প্লাবিত হবে, স্বাদু পানি এলাকায় লবণাক্ত পানির অনুপ্রবেশ ঘটবে। এমনকি ভূগর্ভস্থ পানির ক্ষেত্রেও এটা হবে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, খরা ও নদী ভাঙ্গনের প্রকোপ বাড়বে। খরা, বন্যা ও লবণাক্ততার ফলে ফসলের উত্পাদন মারাত্মক ভাবে হ্রাস পাবে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মূল উত্স হলো কয়লা, পেট্রোলিয়াম, ডিজেলের মত জ্বালানি ব্যবহার, বন নিধন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ব্যাপক শিল্পায়ন ইত্যাদি। অকেজো ও মেয়াদ উত্তীর্ণ যানবাহনে ব্যবহূত জ্বালানি ভালভাবে নিঃশেষ না হওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরিত হয়। গোটা বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটায় উন্নত অনুন্নত নির্বিশেষে সব দেশের আবহাওয়াতেই মারত্মক বিপর্যয় শুরু হয়েছে। পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
বিশ্বের প্রতিটি দেশেই স্বাভাবিক আবহাওয়া জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটায় কমে যাচ্ছে শীতকালের স্থায়িত্ব, বাড়ছে ভূমি ও পাহাড় ধস, ঘন ঘন দাবানল হচ্ছে, দীর্ঘায়িত হচ্ছে খরা, ঝড়ঝঞ্ঝা, বন্যা, টর্নেডো, সাইক্লোনের মাত্রা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে পরিবেশ বিপর্যয়ের ক্ষতিকর প্রভাব। ফলে ধ্বংস হচ্ছে কৃষি, শিল্প, অর্থনৈতিক সমপদ এবং মানুষের জীবন হয়ে পড়েছে হুমকির সম্মুখীন। ১৮৫০-১৮৬০ সময়কার তুলনায় বর্তমান পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ।
বর্তমানে বিশ্বের তাপমাত্রা প্রতিদশকে ০.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস হারে বাড়ছে। ২০১৩ সালে আইপিসিসি (আন্ত:সরকার পরিষদ) প্রকাশ করেছে পঞ্চম মূল্যায়ন রিপোর্ট (এআর-৫)। এই রিপোর্টে প্রকাশিত জলবায়ু মডেলের হিসাব অনুযায়ী ২০ শতকে বিশ্বের বায়ু এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ০.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়েছে, আর ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে ৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এসে দাঁড়াবে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা না গেলে, বিশ্বে পরিবেশ পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। এবছর কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ হচ্ছে ৩৯৬ পিপিএম যা গত বছরের চেয়ে ২.৯ পিপিএম বেশি।
নেদারল্যান্ড পরিবেশ সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন নির্গমনের হার ২.৯ শতাংশ বেড়ে গিয়ে এ বছর রেকর্ড ৩৫ গিগা টনে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে বৈশ্বিক নিঃসরণের অর্ধেকের চেয়ে বেশি আসছে অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউস যেমন চীন (২৯%), আমেরিকা (১৬%) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (১১%) থেকে। এভাবে অন্যান্য ক্ষতিকর গ্যাস মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদির নির্গমনের পরিমাণ আগের মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন ঘটছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য একদিকে সমুদ্রের পানির যেমন তাপগত স্ফীতি ঘটছে, তেমনি আবার পর্বতের বরফ শীর্ষ, গ্রীনল্যান্ড এবং এন্টার্কটিকার বরফ গলনের ফলে সমুদ্রস্তরের উচ্চতাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। বায়ুমণ্ডলে যে কার্বন নিঃসরণ হয় তার এক তৃতীয়াংশ সমুদ্রের পানি শুষে নেয়।
কিন্তু উষ্ণতা বেড়ে যাবার ফলে সমুদ্রের পানির গ্যাস ধারণ করার ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে, ফলে যে সব কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস পানিতে দ্রবীভূত ছিল তা আবারো বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসছে। বিজ্ঞানীদের মতে গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ যদি গলে যায় তাহলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬ মিটার বেড়ে যাবে। কি ভয়ানক কথা! আইপিসিসির নতুন জলবায়ু মডেলের হিসাব মতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২০০৭ সালের হিসাবের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি হারে বেড়ে চলেছে। এইভাবে চললে এই শতকের শেষে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা সর্বোচ্চ ১ মিটার পর্যন্ত বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীদের মতে, সমুদ্রস্তরের উচ্চতা যদি ১ মিটার বাড়ে তাহলে ২১ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনি, বার্বাডোজ, কিরিবাতিসহ প্রশান্ত মহাসাগরের অনেক দ্বীপপুঞ্জ পৃথিবীর মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। ডুবে যাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু এলাকা। মালদ্বীপ হলো ছোট ছোট কোরাল দ্বীপপুঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশ যার অধিকাংশ ভূমি সমুদ্রতল থেকে মাত্র ১.৫ মিটার উপরে। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থার মতে, সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মালদ্বীপের অধীন ১২০০ দ্বীপ ডুবে যাবে, গৃহহীন হবে ৪ লক্ষ মানুষ। মালদ্বীপের চেয়ে কোন অংশেই কম ঝুঁকির মধ্যে নেই বাংলাদেশ।
বঙ্গোপসাগরের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলভাগ। সমুদ্রপৃষ্ঠের স্ফীতির ফলে লোনা পানি উপকূলীয় এলাকার অভ্যন্তরে প্রবেশ করে কৃষিজমি ও মিঠাপানির প্রাণী ও উদ্ভিদ ধ্বংস করে ফেলবে। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ১.৫০ থেকে ২.০০ সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন বিশ্ব উষ্ণায়ন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বাষপীভবনের হার বেড়ে গিয়ে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাবে; বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।
পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বিশ্বব্যাপী বৈরী প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় কখনো বেশি শীত আবার কখনো কম, কখনো মাত্রাধিক গরম, কখনো তুমুল বৃষ্টিতে ভেসে যাচ্ছে সব। রাশিয়াতে ভয়ংকর দাবদাহ, নাইজেরিয়া, চীন, ভারত, পাকিস্তান ও অষ্ট্রেলিয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা আঘাত হেনেছে। সিডর-আইলার মতো ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়েছে বাংলাদেশ। সমপ্রতি ইউরোপও ব্যাপক বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। আমেরিকায় আঘাত হেনেছে হ্যারিকেন স্যান্ডি। আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্য প্রচণ্ড খরায় আক্রান্ত হচ্ছে যা গত ১০০ বছরে কখনো দেখা যায়নি। ২০১২ সাল আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয় উষ্ণ বছর হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে। এ বছরের গ্রীষ্ম ছিল বৃটেনের সবচেয়ে জলসিক্ত।
বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর যে নতুনধারা বিন্যাস সৃষ্টি হবে, সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ-খাওয়াতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ অত্যাবশ্যকীয়। মানব বাসের এ পৃথিবীতে যাতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে না আসে সেজন্য বিশ্বসংস্থাসহ প্রত্যেকটি দেশ সমস্যা মোকাবিলায় এগিয়ে আসবে প্রত্যাশা এটাই।
- রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত
- দ্রব্যমূল্য নিয়ে চাপের মধ্যে আছি: ওবায়দুল কাদের
- প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস: শিক্ষামন্ত্রী
- জনগণের কথা চিন্তা করে আইন তৈরি করতে হবে: আইনমন্ত্রী
- তৃণমূল মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার
- হাওরের ৯৭ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
- ৩০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার আবাসন সুবিধা পাবে
- চাকরিতে প্রবেশে বয়সের বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- ‘অভিবাসন নিয়ে অপতথ্য রোধে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি’
- ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব
- অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে ১৫ মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদফতর
- উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে তীব্র ঝড়
- ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে’
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালন
- ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে’
- উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি
- টেনিস খেলাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করা হচ্ছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ
- ‘উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারি’
- তীব্র গরমেও শীতল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- চাই না মুক্তিযুদ্ধ চেতনাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় আসুক
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ শতাংশ কার্বণ নিঃসরণ কমাতেই হবে
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- ছাত্রনেতাদের শৈশবের ঈদ স্মৃতিচরণ
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- পুত্রবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- তীব্র দাবদাহে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ