জাতির মুক্তিসনদ
– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –
প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২১
তোফায়েল আহমেদ
আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে ছয় দফা দাবি আদায়ে ৭ জুনের গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৬৬ সালের এই দিনে শহীদের রক্তে রঞ্জিত হয় জাতির মুক্তিসনদ ছয় দফা। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৯-এর গণ-আন্দোলনের সূচনালগ্নে ছয় দফা দাঁড়ি-কমা-সেমিকোলন সমেত ১১ দফায় ধাবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭০-এর ঐতিহাসিক নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বিচক্ষণ নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর হৃদয়ের গভীরে প্রবহমান ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার বাইরে অন্য কোনো চিন্তা তাঁর ছিল না। জেল-জুলম-অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে বাংলাদেশকে স্বাধীন করায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।
স্বাধিকার অর্জন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে বাংলার মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ৭ জুন সর্বব্যাপী হরতাল পালন করেছিল। স্বৈরশাসক আইয়ুব খান বাঙালি জাতিকে গোলামির শৃঙ্খলে শৃঙ্খলিত করতে চেয়েছিল। এর বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে সম্মিলিত বিরোধী দলগুলোর কনভেনশনে ‘বাঙালির মুক্তিসনদ’ খ্যাত ‘ছয় দফা’ উত্থাপন করে তা বিষয়সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন বঙ্গবন্ধু। সভার সভাপতি চৌধুরী মোহাম্মদ আলী ‘ছয় দফা’ নিয়ে আলোচনায় অস্বীকৃত হন। বঙ্গবন্ধু ১১ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে ঢাকা বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন। ২০ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘ছয় দফা’ দলীয় কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ‘ছয় দফা’ এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে বাংলার ঘরে ঘরে এই পুস্তিকা সযত্নে রক্ষিত হয়। ১৯৬৬ সালের ১৮, ১৯ ও ২০ মার্চ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সভায় পুস্তিকাটি বিলি করা হয়। তিনি কাউন্সিলে বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘ছয় দফার প্রশ্নে কোনো আপস নাই। রাজনীতিতেও কোনো সংক্ষিপ্ত পথ নাই। নেতৃবৃন্দের ঐক্যের মধ্যেও আওয়ামী লীগ আর আস্থাশীল নয়। নির্দিষ্ট আদর্শ ও সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের ঐক্যেই আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ নেতার দল নয়, এ প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রতিষ্ঠান। শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই ছয় দফা আদায় করতে হবে। কোনো হুমকিই ছয় দফা আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতে পারবে না। ছয় দফা হচ্ছে বাঙালির মুক্তিসনদ।’
‘ছয় দফা’ দেওয়াকে অপরাধ গণ্য করে স্বৈরশাসক আইয়ুব বঙ্গবন্ধুকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং দেশ রক্ষা আইনে আওয়ামী লীগের ওপর গ্রেপ্তার-নির্যাতন চালান। প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের আহ্বানে ১৩ মে সমগ্র প্রদেশে ‘প্রতিবাদ দিবস’ পালিত হয়। প্রতিবাদ দিবসের জনসভায় ‘ছয় দফা’র প্রতি গণমানুষের বিপুল সমর্থন প্রকাশ পায়। দলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদকে গ্রেপ্তার করা হলে সাংগঠনিক সম্পাদক মিজান চৌধুরী অস্থায়ী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নেতাদের গ্রেপ্তার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ২০ মে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ‘সাতই জুন’ সর্বব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়। ৭ জুনের হরতালে পূর্ব বাংলার বিক্ষুব্ধ মানুষ স্বাধিকার, বঙ্গবন্ধুসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়। প্রকৃতপক্ষে ৭ জুন ছিল স্বাধিকার থেকে পূর্ণ স্বাধীনতার সূচনাবিন্দু। আমাদের স্বাধীনতার চেতনার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল এদিনটিতে।
আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, ছাত্রলীগের সার্বক্ষণিক কর্মী। আমরা সেদিন হরতাল কর্মসূচি পালনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করি। সেদিনের হরতাল কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। পুলিশের গুলিতে তেজগাঁওয়ে শ্রমিক মনু মিয়া, আদমজীতে মুজিবুল্লাহসহ ১১ জন শহীদ হন এবং প্রায় ৮০০ লোককে গ্রেপ্তার করা হয়। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সফল হরতাল পালন করেন।
৭ জুনের সফল হরতালে স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ভীতসন্ত্রস্ত হয়। ছয় দফা সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ‘ছয় দফা’র পক্ষে জনমত তৈরিতে দৈনিক ইত্তেফাকের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ১৯৬৬ সালের ১৬ জুন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে গ্রেপ্তার এবং দ্য নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেস বাজেয়াপ্ত করে। ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের ফলে দৈনিক ইত্তেফাক এবং বাজেয়াপ্তকৃত নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেস ফেরত প্রদানে স্বৈরশাসক বাধ্য হয়। ৭ জুনের অনেক স্মৃতি মানসপটে ভেসে ওঠে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি গভীরভাবে অনুভূত হয়। বঙ্গবন্ধুর স্নেহে আমার জীবন ধন্য। ৭ জুনের চেতনাবহ এই দিনটি জাতীয় জীবনে অম্লান হয়ে আছে। ৭ জুন যেসব শহীদ ভাই বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলার মানুষের মুক্তির পথকে প্রশস্ত করে গেছেন, আজ তাঁদের পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি।
লেখক : আওয়ামী লীগ নেতা, সংসদ সদস্য; সভাপতি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
[email protected]
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে’
- উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি
- টেনিস খেলাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করা হচ্ছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ
- ‘উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারি’
- তীব্র গরমেও শীতল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- চাই না মুক্তিযুদ্ধ চেতনাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় আসুক
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ শতাংশ কার্বণ নিঃসরণ কমাতেই হবে
- খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২ কর্মীকে জরিমানা
- সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক : শসার মাস্ক
- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- সাত জেলায় দুপুরের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
- ‘নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে’
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- ছাত্রনেতাদের শৈশবের ঈদ স্মৃতিচরণ
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- পুত্রবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- তীব্র দাবদাহে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ