নেশা বা মাদকের ওপর ইসলামের নিষেধাজ্ঞা
নীলফামারি বার্তা
প্রকাশিত: ২৪ নভেম্বর ২০১৮
সমসাময়িক মারাত্মক কিছু সমস্যাবলির মধ্যে নেশা বা মাদক অন্যতম।
মূলত কিশোর ও যুব সমাজের জন্য মাদক মারাত্মক হুমকি স্বরুপ দেখা দিচ্ছে। মাদকের বিষাক্ত ছোবল ধ্বংস করে দিচ্ছে অসংখ্য সম্ভাবনাময় জীবন। মাদকের কারণে প্রতিনিয়ত সমাজের পাপাচার, অন্যায়, বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।
ইসলামে নেশা বা মাদককে হারাম করা হয়েছে। যে বস্তুর সেবন করলে মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটে, স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয়, অশান্তি, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় সেই নেশার ওপর ইসলাম পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইসলামে অসংখ্য আয়াত ও হাদীসে নেশার প্রতি নিষেধাজ্ঞার উল্লেখ রয়েছে।
মাদকের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘খমর’ (خمر) যার অর্থ: সমাচ্ছন্ন করা, ঢেকে দেয়া । অর্থগত দিক থেকে মিল থাকার কারণে আরবিতে মদ বা শরাবকে ‘খমর’ বলা হয়। মদ মূলত আঙ্গুর থেকে তৈরি করা হয় এছাড়াও বিভিন্ন ফল ও ফুল থেকেও নেশাজাতীয় দ্রব্য তৈরি হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, كُلُّ مُسْكِرٍ خَمْرٌ وَ كُلُّ خَمْرٍ حَرَامٌ অর্থাৎ,
‘প্রতিটি নেশাদার বস্তুই মদ আর সকল মদই হারাম’। (সহীহ মুসলিম শরীফ , মিশকাত শরীফ)
মাদক দ্রব্য হলো এমন একটি রাসায়নিক দ্রব্য যা গ্রহণ করলে মানুষের শরীরের স্বাভাবিক ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব পড়ে এবং যা আসক্তি, তন্দ্রাচ্ছন্নতা, মেজাজ পরিবর্তন, মানসিক, আচ্ছন্নতা রক্তচাপ পরিবর্তন ইত্যাদির সৃষ্টি করে।
বর্তমান সময়ে মাদকদ্রব্য বিভিন্ন নামে বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন: হিরোইন, কোকেইন, ইয়াবা, আফিম, মারিজুয়ানা, গাজা, ফেনসিডিল, বিয়ার, কেটামিন, মদ ও বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ওষুধ থেকে শুরু করে জুতায় লাগানোর আঠা পর্যন্ত এর অন্তর্ভুক্ত। নেশার দ্রব্য বিভিন্ন ভাবে সেবন করা যায় : পান করে, ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে, নিশ্বাসের মাধ্যমে, শরীর কেটে ইত্যাদিভাবে । ইসলামে পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল করে মহান আল্লাহ পাক নেশা বা মাদক সম্পূর্ণভাবে হারাম করেছেন । সূরা মায়িদায় আল্লাহ পাক বলেছেন-
‘হে মুমিন বান্দাগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা ও লটারি এসকল ঘৃণ্য বস্তু শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা এসকল কাজ থেকে দূরে থাকো। যেন তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হতে পার। শয়তান তো এটাই চায় যে, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষের সৃষ্টি হোক এবং তোমরা আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে দূরে থাকো। সুতরাং তোমরা কি নিবৃত্ত হচ্ছো?’ (সূরা: মায়িদা, আয়াত: ৯০-৯১)
মাদকের নেশা করার পর একজন মানুষ তার স্বাভাবিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেনা। শয়তান এসময় তাকে পেয়ে বসে। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নেশাকারীর ঈমান ঠিক থাকে না অতএব যদি ওই অবস্থায় কেউ মৃত্যুবরণ করে তাহলে তাকে বে-ঈমান হিসেবে মরতে হবে। এবং তার স্থান হবে জাহান্নামে।
মাদক নেশার ভয়াবহতা সম্পর্কে হজরত আবূ হুরাইরা (রা.) কতৃক বর্ণিত নবী করিম (সা.) এর একটি হাদীস এসেছে যে, ‘ব্যাভিচারে লিপ্ত থাকা অবস্হায় ব্যভিচারীর ঈমান থাকেনা, মদ পান করার সময় মদ পানকারীর ঈমান থাকেনা এবং চোর চুরি করার সময় ঈমানদার থাকেনা।’ (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, আবূ দাঊদ, ইবনে মাজাহ্ ) মাদক নেশাকারীর শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীসে অনেক বর্ণনা দেয়া আছে। একজন নেশাগ্রস্থের সম্পর্কে নবীজী (সা.) বলেন, ‘ মদ পান করে যে ব্যক্তি মাতাল হয়ে যাবে তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল হবে না। এবং ঐ অবস্হায় মৃত্যু বরন করলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর যদি সে তাওবাহ করে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করবেন, অত:পর সে পুনরায় মদ পান করে মাতাল হয়ে যায় তাহলে তার ৪০ দিনের সালাত কবুল হবেনা। অত:পর যদি সে ৪র্থ বারের মত মদ পান করে তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহর ওপরে তাকে রাদাগাতুল খাবালত্বীনাতুল খাবাল পান করানো অপরিহার্য হয়ে পরবে। তারা জিজ্ঞাসা করল: হে আল্লাহর রাসূল! রাদাগাতুল খাবালত্বীনাতুল খাবাল কি জিনিস ? রাসূল বললেন: জাহান্নামীদের শরীর থেকে নির্গত দুর্গন্ধযুক্ত নিকৃষ্ট রস।’ (ইবনু মাজাহ (৩৩৭৭), ইমাম আহমদ ও তিরমিযী)
এছাড়াও মিরাজের রাতে মহানবী (সা.) বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি দেখেছিলেন। সেখানে মদ, মাদক ও নেশা গ্রহণকারীদেরও শাস্তি দেখেছিলেন। সেখানে তিনি দেখেছিলেন যে নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিরা জাহান্নামিদের শরীর থেকে নির্গত বিষাক্ত নোংরা পুঁজ পান করছে । (সহীহ বুখারি ও মুসলিম)
মাদকের নেশার সঙ্গে সম্পর্কিত ১০ ব্যক্তির ওপর মহান আল্লার রাসূলের অভিসম্পাত রয়েছে। আর তারা হলো:
(১) মদের নির্যাস যে বের করে, (২) প্রস্তুতকারক, (৩) পানকারী, (৪) যে পান করায়, (৫) আমদানীকারক, (৬) আমদানী যার জন্য করা হয়, (৭) বিক্রেতা, (৮) ক্রেতা, (৯) রপ্তানীকারক এবং (১০) লভ্যাংশ ভোগকারী।
মাদকের নেশা ইসলামে যেমন নিষিদ্ধ তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও অনেক ক্ষতি বয়ে আনে। মাদকের প্রতি নেশাগ্রস্ততার অনেক কুফল রয়েছে যা আমাদের ব্যক্তিজীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় যেমন:
(১) সুস্থ মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায়,
(২) জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তির লোপ করে,
(৩) হজম শক্তির হ্রাস ঘটায় এবং খাবার স্পৃহা নষ্ট করে দেয়,
(৪) স্নায়ু দূর্বল হয়ে যায়,
(৫) শারিরীক ক্ষমতা হ্রাস পায়,
(৬) চেহারার বিকৃতি ঘটায়,
(৭) কিডনির সমস্যাসহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়,
(৮) বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে,
(৯) সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটায়,
(১০) অর্থের অপচয়,
(১১) সাংসারিক অশান্তির সৃষ্টি করে,
(১২) লিভার, হার্ট সংক্রান্ত অনেক রোগ হয়,
(১৩) হেপাটাইটিস, ফুসফুসে ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ, জন্ডিস, মস্তিষ্কে ও মেরুদন্ডে রোগ হতে পারে,
ইত্যাদি ।
একসময় ইসলামে শুরুর দিকে মদ পান জায়েয ছিল কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে তা পবিত্র কোরআনের আয়াত নাজিল করে হারাম করা হয় এবং কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়।
পরিশেষে আলোচ্য বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্তরে মহান আল্লাহর ভয় এবং রাসূল (সা.) প্রেম জাগ্রত করে যাবতীয় হারাম বস্তু ও নেশাদার বস্তু থেকে দূরে থাকি, যথাযথভাবে ইসলামী আদর্শ গ্রহণ করি এই হোক আমাদের শপথ।
- নীলফামারীতে আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালন
- ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে’
- উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি
- টেনিস খেলাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করা হচ্ছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সার্ভিসের মাধ্যমে রাজধানীর চাপ কমে আসবে: চিফ হুইপ
- ‘উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারি’
- তীব্র গরমেও শীতল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- চাই না মুক্তিযুদ্ধ চেতনাবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় আসুক
- ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫ শতাংশ কার্বণ নিঃসরণ কমাতেই হবে
- খুলেছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ২ কর্মীকে জরিমানা
- সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক : শসার মাস্ক
- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- ডিমলায় জুয়া খেলার অপরাধে আটক-২
- ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক
- রাতেই যেসব অঞ্চলে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- ফারিণের ‘নিকষ’ অন্ধকার!
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- রংপুরে সংবর্ধনায় সিক্ত ব্যরিস্টার আনিকা তাসনিয়া
- ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচকে নিয়োগ দিচ্ছে পাকিস্তান
- ঈদে সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়তি ফ্লাইট
- আইকনিক লিডার এখন কুন্তলা চৌধুরী
- ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
- বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ৫ কূটনৈতিক দলিল সই
- মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি
- ছাত্রনেতাদের শৈশবের ঈদ স্মৃতিচরণ
- কারিগরির সনদগুলো কারা কিনেছেন বের করা হবে: ডিবিপ্রধান
- শিল্পী সমিতির নির্বাচনে এফডিসিতে নিরাপত্তা জোরদার
- বিভিন্ন যানবাহনে অবৈধ স্টিকার ব্যবহার
- পুত্রবধূকে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
- শ্রম আইন সংশোধনে প্রস্তুত বাংলাদেশ
- তীব্র দাবদাহে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ