• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

`ছয় সদস্যের সংসার চালাই, বিয়ে দিয়েছি তিন মেয়ের`

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০১৯  

খেজুর গাছ থেকে রস নামানোই আমার কাজ। শ্বশুরের শেখা এই কাজ করেই আমি স্ত্রী, চার মেয়েসহ ছয় সদস্যের সংসার চালাই। এরই মধ্যে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এবার আমি ফুলবাড়ী এলাকার ৬০টি গাছ রস ও গুড় দেয়ার চুক্তিতে ভাড়া নিয়ে রস নামানোর জন্য গাছগুলো পরিষ্কার করছি।

কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের বড় শিমুল তলার গাছি তারা মিয়া।

আসন্ন শীত মৌসুমকে সামনে রেখে এবারো খেজুর গাছ পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই গাছি।

তারা মিয়া আরো বলেন, আমি প্রায় ২২ বছর ধরে খেজুর গাছ থেকে রস নামানোর কাজ করছি। শ্বশুর মজিবর রহমানের কাছ থেকে খেজুর গাছের রস নামানোর কাজ শিখি। আগে অনেক খেজুর গাছ ছিল। রস নামতো বেশি। লাভও হতো ভালো। কিন্তু এখন খেজুর গাছ কমে যাওয়ায় লাভ কমেছে। কষ্ট বেড়েছে। 

এবারের মৌসুম নিয়ে এই গাছি বলেন, এবার আমার ৬০টি খেজুর গাছ থেকে ৪ মাসে রস নামানোর গুড় ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা আয় করার কথা ভাবছি আমি। গাছ ভাড়া ও শ্রমিক মূল্য দিয়ে ১ লাখ টাকা লাভের আশা করছি।

বর্তমানে জেলার নয়টি উপজেলার সর্বত্র খেজুর গাছ পরিষ্কারে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন তারা মিয়ার মতো আরো অনেক গাছি। 

ফুলবাড়ী উপজেলা সদরের কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের বড় শিমুল তলার কয়েকজন গাছি তাদের বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে একসঙ্গে এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এলাকা ভাগ করে নিয়ে খেজুর গাছ থেকে রস নামানোর জন্য এখানকার বিভিন্ন স্থানের খেজুর গাছ মালিকদের সঙ্গে কথা বলে গাছগুলো পরিষ্কার করার শুরু করেছেন। 

গাছ মালিকদের সঙ্গে ৩-৪ মাসের জন্য গুড় ও রস বিনিময়ে ভাড়া নেয়া হচ্ছে এই খেজুর গাছগুলো। একটি গাছের পরিবর্তে গাছ মালিকদের ৩ থেকে ৪ কেজি করে খেজুরের গুড় দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে ৩-৪ মাসের জন্য গাছিদের জিম্মায় খেজুর গাছগুলো ছেড়ে দিচ্ছে গাছ মালিকরা। এতে করে দুই দিক থেকে লাভের আশা করছেন গাছ মালিকরা। অন্যদিকে রস থেকে তৈরি গুড় বিক্রি করে লাভের আশা করছেন গাছিরাও।

পরিষ্কার করা এসব গাছ শুকানোর পর ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে রস নামানোর গাছ শুরু হবে। তিনদিন পর পর এসব গাছ থেকে রস নামানো হবে। আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এখানে খেজুর গাছের রস নামানোর কাজ চলবে।