• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নওমুসলিম মোহাম্মদ সালমান সূফির ঈমান জাগানিয়া সাক্ষাৎকার

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০১৯  

আহমদ আওয়াহ: আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

সালমান সূফি: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

আহমদ আওয়াহ: সূফি সাহেব! আপনি তো মনে হয় এখন থেকে দুই মাস আগে আরেকবার এসেছিলেন। তখন আপনার গায়ে ছিল গেরুয়া রঙের পোশাক। হাতে ছিল ডুগডুগি । আপনার সঙ্গে আরো ৩-৪ জন। আপনি আমাদের ঘরে আগমন করেছিলেন। কারো সঙ্গে আপনাকে তখন খানকায় পাঠিয়েছিলাম।

সালমান সূফি: আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন।

আহমদ আওয়াহ: মাশাআল্লাহ! আপনি খুব দ্রুতই একেবারে ওপরের দিকে লাফ দিয়েছেন। মনে হচ্ছে আপনাকে দেখে আপনি একজন জন্মগত সূফি।

সালমান সূফি: মাওলানা আহমদ সাহেব! আমরা ভালো করে জানি, মালিককে অনুসন্ধান করবার এবং তার জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়ার একটা পথ আছে। যাকে ধর্ম কিংবা ধর্মের পথ বলা হয়। আর একটি পথ আছে দুনিয়া অর্জন করবার। জন্তু-জানোয়ারের মতো পেট ভরবার এবং সেটাকে নিজেদের জীবনের টার্গেট হিসেবে গ্রহণ করে নেবার। দুনিয়ার পথে যদি কোনো মানুষ একবার পথ ভুল করে ফেলে তাহলে তাকে তার সঠিক পথে ফিরে আসবার জন্য আবার পেছনে যেত হয়। অনেক দূরে চলে গেলে তাকে আবার পেছনের দিকে আগের জায়গায় ফিরে আসতে হয়। তখনই সে কেবল তার কাঙ্খিত পথ পেতে পারে। এখানে সে যতটা দ্রুত ফিরে আসতে পারবে ঠিক ততটা তার পথের সন্ধান পাবে। কিন্তু দীন এবং ধর্মের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কেউ যদি তার মালিককে সন্ধান করেন এবং যদি মালিককে সন্ধান করতে গিয়ে ভুল পথে চলে যায়। সেদিন সে যদি সত্য সত্য মালিককে কামনা করে থাকে এবং সেই মালিককে পাবার জন্য যদি সে সাধনা করে থাকে তাহলে একেবারে বিপরীত পথে চলবার পরও মালিক যদি চান তাহলে তাকে সেই উল্টো পথ থেকে, অধর্মের পথ থেকে অনেক দূরে চলে যাওয়ার পরও মালিক তাকে ফিরিয়ে আনতে পারে।

যদি সে খাঁটি মনে মালিককে অনসন্ধান করে থাকে তাহলে মালিক তাকে আবার পেছনের দিকে পুরো পথ ফিরে আসতে বাধ্য করেন না। বরং ভুল পথে চলতে চলতে সে যেখানে গিয়ে ঠেকেছে মালিক তাকে সেখান থেকেই তার দয়ার কোলে তুলে নেন। মালিককে পাওয়ার পথে বিসর্জিত কোনো সাধনা বিনষ্ট হয় না। এ কারণেই আমার পণ্ডিত থেকে সূফি হওয়ার পথে অনেক সময় লাগেনি। বাইরের বেশ-ভূষায়ও অনেক কাটছাট করতে হয়নি। আমার চুল দাঁড়ি আগে থেকেই প্রলম্বিত ছিল। শুধু এইটুকু এলোমেলো ছিল। হজরতের কাছে চুল দাঁড়ির সুন্নত তরিকা জেনে নিয়েছি। তারপর একজন হাজি সাহেবকে সঙ্গে করে নাপিতের দোকানে গিয়েছি। সেখানে যাওয়ার পর আমার পণ্ডিত রূপ ধারণ করেছে সূফিরূপ। আমি যদি দুনিয়াদার মানুষ হতাম তাহলে আমার এই বারের বেশ-ভূষা বদলাবার জন্যেও দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতো। আমাকে সেটা করতে হয়নি। এমনকি আমার ভেতর বদলাবার ক্ষেত্রেও দীর্ঘ পথ ঘুরে আসতে হয়নি। বরং খুব সামান্যতেই আমার ভেতরের পরিবর্তনও সাধিত হয়েছে। আমার প্রতি এটা আল্লাহর অনুগ্রহ তিনি আমাকে একেবারে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছেন। দীনের পরিভাষায় যাকে ইহসান বলা হয় সকল কাজে যেন আল্লাহ আমাকে দেখছেন এই অনুভূতি খুব সহজেই আমি সাধন করতে পেরেছি। এ অবস্থায় উন্নীত হওয়ার জন্যে আমাকে অনেক সাধনা করতে হয়নি।

আহমদ আওয়াহ: মাশাআল্লাহ! এই কারণেই তো আমাদের প্রিয়তম নবী (সা.) বলেছন,  তোমাদের মধ্যে মূর্খতার যুগে যারা শ্রেষ্ঠ ইসলাম কবুল করবার পরও তারা শ্রেষ্ঠ। আপনাকে দেখে এবং আপনার কথা শুনে নবীজির (সা.) সেই বাণী মনে পড়ে গেল। আপনাকে না দেখলে নবীজি (সা.) এর এই বাণী এমন করে হয়তো অনুভব করতে পারতাম না। আপনি মাত্র দু’মাস হলো ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এরইমধ্যে আপনার অন্তরের যে অনুভূতির কথা জানালেন তা তো লাখ লাখ সূফি সাধকের মধ্যেও খুঁজে পাওয়া কঠিন। আপনার এ আত্মিক উন্নতি বরকতে বরকতে ভরে উঠুক। সত্যি আপনার অবস্থা দেখে ইর্ষা অনুভব হচ্ছে।

সালমান সূফি: এটা আমার মালিকের অনুগ্রহ। তিনি তার এক অপবিত্র বান্দার আত্মায় সত্যের আলো ঢেলেছেন। আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! (দীর্ঘক্ষণ নিরবে কাঁদতে থাকেন)...

আহমদ আওয়াহ: আমাদের জন্যে দোয়া করুন আল্লাহ তায়ালা যেন আপনার অন্তরের ওই পবিত্র অবস্থা আমাদেরকেও নসিব করেন।

সালমান সূফি: এটা আপনার বড় মনের পরিচয়। আপনি ওইভাবে কথা বলছেন। নইলে কোথায় আপনারা আর কোথায় আমরা। আল্লাহ তায়ালা যে বিষয় ও পবিত্র মিশনের জন্যে আপনাদের পরিবারকে কবুল করেছেন সে তো তাঁর প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিশন।

আহমদ আওয়াহ: তারপরও আপনার অন্তরের সার্বক্ষণিক যে অনাবিল পবিত্র অবস্থার কথা আপনি বলেছেন আর আপনার সঙ্গে সাক্ষাত করে মনের ভেতর যে শান্তি অনুভব করছি সত্যি এটা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। আচ্ছা, দয়া করে আপনি আপনার পারিবারিক পরিচয় বলবেন কী?

সালমান সূফি: আমার জন্ম মিরাঠ জেলার কেল্লা পারিকশিতগড়ে। জন্মেছি ১৯৯৬১ সালে। আমি একজন ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে। আমার পারিবারিক নাম ছিল নারায়ণ শর্মা। আমার পিতাজি দান দক্ষিণা থেকে বাঁচবার জন্যে বংশীয় পেশা মন্ত্রপুতচক্র বিয়ে-শাদি সম্পাদন এবং জ্যোতিষি কর্ম পরিহার করে নিজে ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

প্রথম দিকে অনেক ধরণের ব্যবসাই শুরু করেছিলেন। কোনোটাই ঠিক মতো চলেনি। অবশেষে থালা-বাশনের দোকান দেন। সেটাও খুব ভালো চলেনি। কোনো মতে সংসার চলত। আমি ছিলাম তার বড় পুত্র। ইন্টারমিডিয়েট পাস করি। পিতাজির ইচ্ছা ছিল আমাকে ডাক্তার বানাবেন। এমনিতেও আমি ক্লাসে বরাবর সিরিয়ালের ছাত্র ছিলাম। ডাক্তারি পড়বার জন্যে টিএমটি পরীক্ষায় বরাবর চার বছর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাস করতে পারিনি। এরই মধ্যে আমি মিরাঠ কলেজ থেকে বিএসসি পাস করি। অনেক চেষ্টা সত্তেও টিএমটি পরীক্ষায় পাস করতে না পারার কারণে আমি মনে মনে খুব আহত হই। অবশেষে ১৯৮১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মন খারাপ করে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। তারপর সন্নাস্যের উদ্দেশ্যে ঋষিকেশ চলে যাই। ওখানে পরপর বেশ কয়েকটি আশ্রম ও মন্দিরে ঘুরে বেড়াই। স্বামী দুঃখীরামজির অনুমান আখরা খুবই প্রসিদ্ধ এবং বিশাল। সেখানে আমি পাঁচবছর থাকি।

একসময় তিনি আমাকে পাহাড়ে প্রতিষ্ঠিত একটি আশ্রমের প্রধান বানিয়ে পাঠিয়ে দেন। সেখানে কয়েকজন লোকের সঙ্গে আমার মনোমালিন্য হয়। পরে আমি সবকিছু ছেড়ে ছুড়ে চলে আসি। ফিরে আসি আমার জন্মস্থান কেল্লা পারিকশিতগড়ে।  সেখানে এসে নিজের জায়গায় অনুমান মন্দির প্রতিষ্ঠা করি। মন্দিরটি জনবসতির কাছেই ছিল। তারপর একটি ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করি। নাম দিই অনুমান মানব সেবা ট্রাস্ট। এর অধীনে আলাদা আলাদা স্থানে দুটি মন্দির ছিল। একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলাম লাল কুর্তিতে। তারপাশেই আমার বসবাসের জন্যে একটি কুটিরও বানিয়ে ছিলাম। আমার প্রতি আমার সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ হলো তিনি ইসলামের দয়ায় আমার আঁচল পূর্ণ করে দিলেন। আমি তাঁকে পাবার জন্যেই ছুটে বেড়াচ্ছিলাম। কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়াই তিনি আদঘরে আমাকে তাঁর প্রিয় পথে তুলে দিয়েছেন।

আহমদ আওয়াহ: তারপরও কীভাবে মুসলমান হলেন একটু বিস্তারিত বলবেন?

সালমান সূফি: আসল কথা কী! মালিককে খুশি করাটাই হলো দীন এবং ধর্ম। আমি এমবিবিএস এর ভর্তি পরীক্ষায় প্রাণান্তর চেষ্টা করেছি। প্রতিবারই আমি আশা করেছি এবার টিকে যাব। কিন্তু দেখা গেল আমি পরপর চারবার ব্যর্থ হলাম। ফলে দুনিয়ার প্রতি আমার মন একেবারে বিষিয়ে উঠল। মনের সব আশা স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। পরে আমি দুনিয়ার সব আশা ও স্বপ্ন পরিহার করে নিজেকে মালিকের হাতে তুলে দেয়ার জন্যে বেরিয়ে পড়ি। আমি ঘর ছেড়ে ছিলাম আমার মালিককে পাওয়ার জন্যে।

যেদিন আমি কালেমা পড়ার জন্যে হজরতের কাছে এসেছিলাম সেদিন হজরত বলেছিলেন আল্লাহ তায়ালা কোরআন মাজিদে বলেছেন, তিনি এ জগত সংসার সৃষ্টি করবার আগে মানবজাতির সকল আত্মা সৃষ্টি করেছেন। তারপর সকল আত্মা সমবেত করে একটি সবক পড়িয়েছিলেন। তারপর প্রশ্ন করেছিলেন, বল আমি কী তোমাদের প্রভু নই? কোরআন শরিফে এমন একটি আয়াত আছে না? ওই আয়াতটি হজরত তখন পাঠ করে শুনিয়েছিলেন।

আহমদ আওয়াহ: জ্বী! ‘আলাস্তু বিরব্বিকুম’ ‘আমি কী তোমাদের প্রভু নই?’

সালমান সূফি: তো মালিক জগত সংসার সৃষ্টি করার আগে যে সবক আত্মাকে দান করেছিলেন আত্মা ওই পাঠ কীভাবে ভুলবে? আত্মার মনিকোঠায় প্রতিষ্ঠিত মালিকের ওই পাঠ কোনো ক্রমেই বিস্মৃত হবার নয়। ফলে আত্মায় সর্বদাই এই পাঠ বিমন্দ্রিত হয় তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা। এবং তিনি এক ও অদ্বিতীয়।

মাওলানা আহমদ সাহেব! এই জন্যেই আপনি দেখবেন চূড়ান্ত পর্যায়ের শিরক, মূর্তিপূজায় ফেসে আছে যারা বরং শিরকের কলঙ্কে আকন্ঠ নিমগ্ন কোনো ধর্মশালার গুরু তাকেও যদি আপনি হঠাৎ গিয়ে প্রশ্ন করেন, আচ্ছা গুরুজী! এই জগত সংসার কে বানিয়েছেন? কে এই বিশ্বজাহান পরিচালনা করছেন? দেখবেন ওই গুরু কিংবা পণ্ডিত সঙ্গে সঙ্গে এক আঙ্গুল উঁচু করে বলে উঠবেন, একমাত্র এক অদ্বিতীয় মালিক। আমি আমার হিন্দু ভাই এবং আপনজনকে দাওয়াত দেব। তারা যেন বিষয়টি ভেবে দেখেন। তারা সামান্য লক্ষ করলেই বুঝবেন যখন কারো ঘরে কোনো প্রিয়জন মৃত্যু বরণ করে, মৃত্যু বরণ করে আত্মার ধন সন্তান তখন সমবেদনা জ্ঞাপনের জন্যে যেই আসে সেই আকাশের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে বলে, যার এই দান ছিল তিনি তার দান তুলে নিয়েছেন। এখন কার কী করার আছে?

আহমদ আওয়াহ: চাই সে চূড়ান্ত পর্যায়ের মুশরিক কিংবা দেবদেবীর চরম ভক্তই হোক না কেন। সে একথা কখনোই বলবে না এ ছিল হনুমানজির দান। তিনি তুলে নিয়েছেন। এও বলবে না এটা মা কালির সম্পদ ছিলো। তিনি তার সম্পদ নিয়ে নিয়েছেন। যারা চরম পীরভক্ত, পীর পূজারি মুসলমান বরাবর নানা কবর এবং দরগায় ঘুরে বেড়ায় পরম ভক্তি নিয়ে তারাও একথা বলে না, এটা খাজার দান ছিল, খাজা তুলে নিয়েছেন। বরং সকল মানুষ এখানে এসে একই জবাব দেয় এই জগত সংসারের সৃষ্টিকর্তা একমাত্র পরিচালক। তিনি ছিলেন মালিক, তিনি তার সম্পদ তুলে নিয়েছেন। এখানে কোনো ধর্ম কিংবা গোষ্ঠীর ব্যবধান নেই। এটাই এ কথার সুস্পষ্ট প্রমাণ প্রতিটি মানুষের অন্তর-আত্মায় খোদাই করে লেখা আছে ‘আলাস্তু বিরাব্বিুকম’ এর পাঠ। অন্তরে খুদিত এই শিক্ষার টানেই প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে তার মালিককে পাওয়ার এবং তার মালিককে সন্তুষ্ট করবার একটা স্বভাবজাত তৃষ্ণা থাকে। সব ধরণের চিন্তা কল্পনা এবং যুক্তি অনুভূতির উর্ধ্বে সেই সত্তা। সেই সত্তাকে পূজা দেবার এবং তার প্রতি নির্মল ভক্তি ও ভালোবাসা নিবেদন করবার একটা জন্মজাত প্রেরণা প্রতিটি মানুষের অন্তরেই প্রতিষ্ঠিত থাকে।

সেই মালিকের বাইরে আর কারো সামনে মাথা নত করবার, কাউকে পূজা দেয়ার আগ্রহ স্বভাবগতভাবে কেউ পছন্দ করে না। আমিও এই সমাজের আট দশজন মানুষের মতোই একজন মানুষ। আমার মালিক আমার আত্মাকেও ‘আলাস্তু বিরাব্বিুকম’ এর পাঠ দান করেছিলেন। ওই পাঠ আমার অন্তরেও সুরক্ষিত ছিল। তারই টানে আমি দুনিয়ার প্রতি নিরাশ হয়ে ঘর ছেড়ে দিলাম, সন্নাস গ্রহণ করেছিলাম। এতোদিন পর্যন্ত শিরকের নামে ভুল পথে ফেসে ছিলাম। তারপরও আমার অন্তরে একটা শক্তি ছিল। সেই শক্তি বরাবর আমাকে সঞ্চালিত করছিল। আমার মন আমাকে বরাবর বলছিল, এই জগত সংসারের সৃষ্টিকর্তা যে মহা প্রভুর সন্ধানে আমি সব কিছু ছেড়ে বেরিয়েছি হাতের তৈরি এসইসব মূর্তির ভগবানের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? আমি যেই আশ্রমে গিয়েছি সেখানকার গুরুজনকেই এ প্রশ্ন করেছি। তারা সকলেই আমাকে একথা বলে চুপ করিয়ে দিয়েছেন, এইসব মূর্তি হলো মূলত আত্মার একাগ্রতার জন্যে। মূল পূজ্য সত্তা তো সেই মালিক যিনি এক ও অধীন। কিন্তু আমার ওইসব মূর্তির মাধ্যমে মোটেও আত্মার একাগ্রতা অর্জিত হতো না। শিরক তো বিচ্ছিন্নতার উৎস। শিরকের পথ ধরে কখনো একাগ্রতা আসতে পারে না।

আমি মিরাঠের লাল কুর্তিতে মন্দির বানিয়েছি। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন থেকেই দেখেছি আমার মা পরিচ্ছন্তার প্রতি খুব যত্নবান। আমি আমার মায়ের কাছ থেকে ওই স্বভাবটা পেয়েছি যখন আশ্রম বানালাম তখন পরিচ্ছন্নতার প্রতি আমি যথাসাধ্য যত্নবান থাকতাম। হনুমানজির মূর্তির সামনে মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি প্রসাদ নিবেদন করে। নানা রকমের প্রসাদ মিষ্টান্ন আর ওইসব প্রসাদের কারণেই মূর্তি এবং বিছানা নোংরা হয়ে যায়। আর এমনিতে মিষ্টির ঘ্রাণ পেলে মাছিরা দলে দলে ছুটে আসে। যে কারণে হাজারবার ধ্বনি দেয়ার পরও মূর্তিদের পরিষ্কার রাখা যেত না। আমি দিনে কয়েকবার মূর্তিগুলোকে পরিষ্কার করতাম। যখনি পরিষ্কার করতে যেতাম অন্তরে একটা শক্ত রকমের ঝাঁকুনি অনুভব করতাম এটা কেমন ধর্ম হলো? মূর্তি বানাও, মূর্তি স্থাপন করো তারপর বসে বসে পরিষ্কার করতে থাক। এই চিন্তা মাঝে মধ্যে আমাকে এতোটাই চেপে ধরতো আমার কাছে মনে হতো আত্মহত্যা করি। মৃত্যুর পর যে মালিকের সঙ্গে গিয়ে সকলে মিলিত হয় এখনি আমি ওই মালিকের কাছে চলে যাই। গত চার/পাঁচ বছর ধরে এই ভাবনা আমাকে খুব অস্থির করে রাখছিল। আমি চঞ্চলতায় ঘুমুতে পারতাম না।

চার বছর আগের কথা। আমাদের মন্দির থেকে সামান্য দূরে একটি মসজিদ। একবার আমি ওই মসজিদে গেলাম। উদ্দেশ্য ছিল সেখানকার দেব-দেবিদের দেখব। সেখানের পূজারিদের দৃশ্য দেখব। আমার মন্দিরে তো ধর্মের নামে ব্যবসা ছাড়া আর কিছু আমি দেখলাম না। ভাবলাম গিয়ে দেখি মসজিদে কার পূজা করা হয়। গিয়ে দেখলাম মসজিদের পাশেই ইমাম সাহেবের ঘর। তিনি তার পরিবারসহ সেখানে বসবাস করেন। আমি ইমাম সাহেবের ঘরে ও সামনে গিয়ে কড়া নাড়লাম। ইমাম সাহেব আমাকে দেখে একেবারে অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। আমি বিনয়ের সঙ্গে আমার অস্থিরতার কথা তাকে জানালাম। এটাও জানালাম আমি ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে চাই। তাছাড়া আমি এটা দেখে খুবই আশ্চর্য হয়েছি ইমাম সাহেব কী করে মসজিদের পাশে বসবাস করেন। আমি ভেবেছিলাম মালিককে পেতে হলে তো জগত সংসারের সকল মায়া জাল ছিন্ন করতে হবে। সুতরাং সকল মুসলমানকে যিনি নামাজ পড়ান তিনি তো পরিবার রাখতে পারেন না।

আমার প্রশ্নের জবাবে ইমাম সাহেব বললেন, আমাদের ইসলাম ধর্মের শিক্ষা হলো এই জগতের সকল কিছু মালিক মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাকে একটি সামাজিক বাঁধানে বেঁধে দিয়েছেন। ওই মালিককে সন্তুষ্ট করাবার জন্যে এই সমাজের সকলের হক আদায় করার নাম ইসলাম। আমি প্রশ্ন করলাম আপনি যখন নামাজ পড়েন তখন কার পূজা করেন। মুহাম্মাদ (সা.) সাহেবের না ভিন্ন ভিন্ন পয়গম্বরের? তিনি তখন আমাকে মসজিদে নিয়ে গেলেন। বললেন, আমরা এই জন্যে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে নামাজ পড়ি এটা আমাদের মালিকের নির্দেশ। এতে করে একতা বজায় থাকে। যদি একেকজন একেকদিকে মুখ করে নামাজ আদায় করে তাহলে শৃঙ্খলা থাকবে না। তবে আমাদের ধর্মে একমাত্র পূজার উপযুক্ত সত্তা এই বিশ্ব জাহানের মালিক। যিনি সকল চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। তার কোনো মূর্তি নির্মানও অসম্ভব। একমাত্র তিনি এই বিশ্ব জগতের সৃষ্টিকর্তা ও পরিচালক।

ইমাম সাহেবের সঙ্গে সামান্য সময় কথা-বার্তা বলার পর আমি আমার ভেতরে তুমুল ঝাঁকুনি অনুভব করি। আমার কাছে মনে হতে থাকে, যে সত্যের সন্ধান করে ফিরছি আমি ওটা ইসলাম। আমি ইমাম সাহেবকে বললাম, দেখুন আমি আপনার পার্শ্ববর্তী মন্দিরের পরিচালক। তাকে এও বললাম আমি যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে চাই তাহলে আমাকে কী করতে হবে? তিনি বললেন, প্রথমে শিরক ছেড়ে তওবা করতে হবে। তারপর ইসলামের একটি কালেমা আছে খাঁটি মনে সেটা পাঠ করতে হবে। আমি বললাম, আপনি কি আমাকে মুসলমান করতে পারবেন? জ্বী না। আমি কাউকে মুসলমান করি না। আর আপনাকে তো মোটেও পারব না। আপনাকে মুসলমান করলে পুরো মিরাঠে আগুন লেগে যাবে। আমাদের কাছাকাছি একটি গ্রাম আছে। ফুলাত নাম। আপনি চাইলে সেখানে চলে যেতে পারেন। সেখানে ইসলাম গ্রহণ করবার ব্যবস্থা আছে।

আমি বললাম আপনি কি আমার সঙ্গে যেতে পারবেন? তিনি পরিষ্কার ভাষায় না করে দিলেন। এও বলে দিলেন, সত্যি সত্যি যদি আপনি মুসলমান হতে চান তাহলে দয়া করে আর কখনো আমার কাছে আসবেন না। একথা জানাজানি হলে এখানকার দায়িত্বশীলগণ আমাকে মসিজদ থেকে বের করে দেবেন। পুরো এলাকায় দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়বে। আমি খুবই আশ্চর্য হলাম। আমি একজন ভুল ভগবানের উপাসক। অথচ আমি ইসলাম কবুল করতে ভুল করছি না। আর ইনি জগত সংসারের প্রকৃত মালিকের উপাসক। তিনি আমাকে মুসলমান বানাতে ভয় করছেন।

আহমদ আওয়াহ: আচ্ছা তারপর কী হলো?

সালমান সূফি: জ্বী বলছি। আমাদের কেল্লা পারিকশিতগড়ের একজন হাজি সাহেব মিরাঠে তার টায়ারের ব্যবসা  আছে। তার সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। তাকে একবার বললাম আমাকে ফুলাত নিয়ে চলেন। এদিকে তার এক বন্ধু তাবলিগ জামায়াতের আমির। একবার তার দোকানে তার ওই বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয়। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি আপনাকে ফুলাত নিয়ে যাব। রমজানের ২৭ তারিখে আমরা বরাবর ফুলাত যাই। তারপর আমি বরাবর তাকে তাড়া দিতে থাকি। কিন্তু নানা বাহানায় তিনি এড়িয়ে যেতে থাকেন। একদিন আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কুটির থেকে বেরিয়ে পড়ি। সিদ্ধান্ত নিই আমি যাব। এদিকে সেদিন আমাদের মন্দিরে আগুন লাগে। ফোন পেয়ে আমাকে সঙ্গে সঙ্গে ফিরে আসতে হয়। শয়তান মনে হয় আমাকে সত্য পথ থেকে ফিরিয়ে রাখবার  চেষ্টা করছিল। যে কারণেই এই ইচ্ছা ও চেষ্টার ভেতর দিয়ে তিন বছর পার হয়ে যায়। আমি হাজি সাহেব এবং আমির সাহেবকে বরাবর খোশামোদ করতে থাকি। আমার ধারণা তারাও ভয় করছে। ভয়েই তারা নানা ছুতোয় আমাকে এড়িয়ে চলছিল।

একুশ এপ্রিলের ঘটনা। তখন সকাল নয়টা। আমি সোজা হাজি সাহেবের দোকানে গিয়ে উঠি। ওই আমির সাহেব সম্ভবত কোনো কোম্পানিতে চাকরি করতনে। ঘটনাক্রমে তিনিও তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি তাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললাম, আজ আমি আপনাদের ছাড়ছি না। আজ আমাকে ফুলাত নিয়ে যেতেই হবে। হাজি সাহেব বললেন দেখুন! আজ আমার দোকানে কেউ নেই। কীভাবে যাব? আমি বললাম দিনে আপনার সর্বোচ্চ কত মুনাফা হয়? দুই তিন হাজার। আমি সঙ্গে সঙ্গে আমার পকেট থেকে তিন হাজার রুপি বের করে তার পকেটে ঢুকিয়ে দিই। শুরুতে না না বললেও শেষমেষ নিয়ে নেন। তারপর দোকান বন্ধ করেন। আমি আমির সাহেবের পকেটেও দুই হাজার রুপি ঢুকিয়ে দিই। বলি একদিন চাকরি করে আপনি সর্বোচ্চ হয়ত দুই হাজার রুপি আয় করেন। এইবার চলুন আমার সঙ্গে। সামনে টেক্সি ছিল। আমি টেক্সি ভাড়া করি। তারপর  তাদেরকে নিয়ে টেক্সিতে উঠে পড়ি। আমার মন্দিরের ঝাড়ুদার সুন্দর দাশকে ফোন করে বলি, তুমি বেগম বুরুজে আস। সেও মূলত আমার সঙ্গে মুসলমান হতে চাচ্ছিল। আমরা চারজন ফুলাত পৌঁছাই।

আহমদ আওয়াহ: আপনি কি আগেই জেনেছিলেন আব্বু ফুলাত আছেন?

সালমান সূফি: না। আমার মোটেও জানা ছিল না। আমি জানতাম না, কে মুসলমান বানান কিংবা মাওলানা কালিম সিদ্দিকিই বা কে? এটা আল্লাহর মেহেরবাণী। যখন আমরা পৌঁছাই হজরত তখন ফুলাতের খানকায় উপস্থিত ছিলেন। আমির সাহেব হজরতের সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন ইনি পণ্ডিতজ্বী! চার বছর হলো মুসলমান হওয়ার জন্যে একেবারে বেকে আছেন। আজ সকাল বেলা একেবারে জোর করে আমাদের চেপে ধরেছেন। আমাকে তো একেবারে কলার ধরে এনে টেক্সিতে বসিয়েছেন। তার এ কথা আজ কোনো ভাবেই আমি আপনাদেরকে ছাড়ছি না।

আহমদ আওয়াহ: সত্যিই কি আপনি আমির সাহেবের কলার চেপে ধরেছিলেন?

সালমান সূফি: হ্যাঁ। কথা কী আমি তাদের পেছনে ঘুরতে ঘুরতে একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই আমির সাহেবের কলার চেপে ধরে বলেছিলাম, আজ আমাকে মুসলমান না করা পর্যন্ত আপনাকে ছাড়ছি না। আমার এ কাহিনী শুনার পর হজরত আমির সাহেব এবং হাজি সাহেবেকে খুব বুঝিয়েছেন। বলেছেন, দেওবন্দের বড় মুফতি সাহেব সম্ভবত তার নাম মুফতি মাহমুদ বলেছেন মসজিদের বাইরে এসে কোনো ব্যক্তি যদি বলে, আমি মুসলমান হতে চাই তাহলে তাকে নিয়ে আমার কামড়ায় আসার প্রয়োজন নেই। তার কারণ হলো, বাইরে থেকে ভালোভাবে কালেমা পড়ানোর জন্যে আমার ঘর পর্যন্ত যতটুকু সময় পার হলো অতটুকু সময় আপনি কুফুরিকে মেনে নিলেন। কুফুরি মেনে নেয়া এবং কুফুরির প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করা এটাও কুফুরি। এই অবস্তায় যদি মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে সেটা হবে কুফুরির ওপর মৃত্যু।

হজরত তখন হাজি সাহেব এবং আমির সাহেবকে বলেন, চারবছর পর্যন্ত পণ্ডিতজ্বীকে আপনারা ঘুরিয়েছেন। এই চার বছর পর্যন্ত পণ্ডিতজ্বীর কুফুরির ওপর কেটেছে। জেনে শুনে আপনারা এটা ভালো করেননি। আপনাদের এই জন্যে তওবা করা উচিত। হজরত দাাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমাকে কালেমা পড়ান। জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি নাম বদলাতে চান? আমি বললাম অবশ্যই। হজরত তখন আমার নাম রখলেন সালমান। সুন্দর দাশের নাম রাখলেন উসমান। বললেন হজরত সালমান ফার্সি (রা.) সত্যের সন্ধানে বহুপথ ঘুরে অবশেষে ইসলাম লাভ করেছেন। তারপর তিনি আমাদেরকে হজরত সালমান ফার্সি সম্পর্কে অনেক কথা শুনালেন। আমাকে জিঞ্জেস করেন, ইসলাম সম্পর্কে আপনার কোনো পড়াশোনা আছে? আমি  বললাম, আমাকে তো এতো কাল পাঠ দান করেছে আমার ভুল ভগবানগণ। তারাই আমাকে শিখিয়েছেন আমাদের পূজা ভুল ধর্ম। এটা ধর্ম নয় অধর্ম। আমার পুরো জীবন কেটেছে এই বোকামিতে। হনুমানজির মূর্তি ধৌত করে করে সময় পার করেছি। হনুমানজিকে পরিষ্কার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। প্রতিবেশী মসজিদে সেখানকার ইমাম সাহেবের মুখে প্রথম শুনেছি মুসলমানগণ এক, অদ্বিতীয়। মালিকের পূজা করেন। তখনি আমার কাছে মনে হয়েছে এটাই সত্যিকারের ধর্ম। আমি যখন ইমাম সাহেবের কাছে ইসলাম গ্রহণ করার আগ্রহের কথা বলি, তখন তিনি পরিষ্কার না করে দেন। বলে দেন, আপনি যদি সত্যি সত্যি মুসলমান হতে চান তাহলে আমাদের কাছে আসবেন না। মসজিদের দায়িত্বশীলগণ আমাকে এখান থেকে বহিস্কার করে দেবেন। তারছাড়া এখানেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়বে। এই কাহিনী  শুনে হজরত খুব আফসোস করলেন।

আহমদ আওয়াহ: আচ্ছা, তারপর কী হলো? আপনি কী মন্দির ছেড়ে দিলেন?

সালমান সূফি: হজরত পরামর্শ দিয়েছিলেন হঠাৎ করে মন্দির থেকে গায়েব হয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। আপনি প্রথমে আপনার কোনো শিষ্যকে মন্দিরের দায়িত্ব দিন। তারপর ধর্ম সাধনায় আরো উন্নীত লাভ করতে চান এই কথা বলে চলে আসুন। তারপর জামাতে যান। আমি হজরতের পরামর্শে ৪০ দিনের জন্যে তাবলিগে চলে যাই। ব্যাঙ্গালুরে রমজান এবং ঈদের পর পর্যন্ত আমাদের জামাত সময় কাটায়। আলহামদুলিল্লাহ! জামাতের সাথীগণ প্রশিক্ষিত ছিলেন। আমাকে তারা অনেক সেবা করেছেন। অনেক কিছু শিখিয়েছেন। যে শিষ্যকে আমি মন্দিরের দায়িত্বে রেখে এসেছিলাম সে আমার খুবই আস্থাভাজন শিষ্য। জামাত থেকে ফিরে আসার পর তাকে ঢেকে পাঠাই। আমার পুরো ইতিবৃত্ত তাকে শুনাই। প্রথম সাক্ষাতে সেও কালেমা পড়ে ইসলাম কবুল করেন। দীর্ঘদিন পর আমি আমার বাড়িতে যাই। মা আমাকে দেখে সীমাহীন খুশি হন। তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেন, বাবা আমি তোমাকে অনেকবার স্বপ্নে দেখেছি। প্রত্যেকবারই দেখেছি তুমি মসজিদে নামাজ পড়ছ।

আহমদ আওয়াহ: আপনি কি আপনার মাকে দাওয়াত দিয়েছেন?

সালমান সূফি: আলহামুদুলিল্লাহ! আমার মা ইসলাম কবুল করেছেন। তার স্বপ্ন তাকে আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছিল। তাই তিনি কোনো আপত্তিই তুলেননি।

আহমদ আওয়াহ: এখন আপনার কী পরিকল্পনা?

সালমান সূফি: আমি হজরতের খেদমতে এসেছি। হজরত যা বলবেন তাই করব। তবে আমার মনে ইচ্ছা হলো, হরিদোয়ার ঋষিকেশ কিংবা অন্য বড় কোনো তীর্থস্থান যেখানে আমার মতো অনেক সত্য সন্ধানী ঘুরে বেড়াচ্ছে আমি তাদেরকে নিয়ে কাজ করব। তবে করব তো দাওয়াতিরই কাজ। এটাই আমার একমাত্র মিশন। হজরত জোহরের পর সাক্ষাত দেবেন বলেছেন। দেখি কী বলেন।

আহমদ আওয়াহ: মাশাআল্লাহ! বরকতময় হোক আপনার সকল পরিকল্পনা। আপনাকে অনেক শুকরিয়া। আসসালামু আলাইকুম।

সালমান সূফি: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ: আহমদ আওয়াহ নদবি

ভাষান্তর: মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন

সংকলন: নুসরাত জাহান

সূত্র: আরমোগান জুলাই ২০১৯