• শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

  • || ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা রহস্যময় সিগন্যাল

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ নভেম্বর ২০১৮  

পৃথিবী ছাড়া অন্য গ্রহগুলোতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকা-না থাকা নিয়ে নানা ধরণের প্রশ্ন শোনা যায় চারপাশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৫ সালে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যার নাম- এসইটিআই (সার্চ ফর এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্ট)। এই সংস্থাটি পৃথিবীর বাইরের বুদ্ধিমান প্রাণীর অনুসন্ধান করে থাকে।

পৃথিবীর বাইরে ইন্টেলিজেন্ট সিভিলাইজেশনদের খোঁজার জন্য তারা রেডিও সিগন্যাল ও লেজার সিগন্যাল ব্যবহার করে। অতঃপর এই সিগনালগুলো মহাকাশে পাঠানো হয়। মহাকাশে যদি কোনো উন্নত প্রাণী থাকে তাহলে তারা এই সিগনালে সাড়া দিয়ে থাকে। প্রশ্ন হলো, পৃথিবীর কোনো মানুষ কি মহাকাশ থেকে কখনো কোনো সিগনাল পেয়েছে? এর উত্তর হ্যাঁ। চলুন জেনে আসি এমন কিছু সিগন্যালের কথা যেগুলো বিজ্ঞানীরা মহাকাশ থেকে বিভিন্ন সময়ে পেয়েছে-

 

1.পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা রহস্যময় সিগন্যাল

৫. এইচডি ১৬৪৯৫: মহাকাশ থেকে আসা এই সিগন্যাল নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনো চিন্তিত। ১৫ মার্চ ২০১৫ সালে মহাকাশ থেকে আসা এই রহস্যময় সিগন্যালটি রাশিয়ার একটি টেলিস্কোপ রেকর্ড করে। সিগন্যালটি ৫৫ আলোকবর্ষ দূরে এইচডি ১৬৪৯৫ নামের একটি গ্রহ থেকে এসেছিলো। বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে এমন কোনো যন্ত্র নেই যেটি এতো শক্তিশালী সিগন্যাল পাঠাতে পারে। এই সিগন্যালটি আসার পর থেকে বিজ্ঞানীরা ওই গ্রহটির উপর গবেষণা শুরু করে দেয়।

৪. ফ্রিকোয়েন্সি ৪৪৬২.৩: এই সিগন্যালটি ১০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ টিওয়াইসি ১১২০৯১১ থেকে এসেছিলো। এটিকে দ্বিতীয় ওয়াও সিগন্যালও বলা হয়। ২০১০ সালে এসিটিআই-এর টেলিস্কোপে এটি ধরা পড়ে। এই সিগন্যালটি ১০ সেকেন্ড ধরে রেকর্ড করা হয়।

৩. এফআরবি ১৫০২১৫: ফার্স্ট রেডিও বাস্ট সিগনালটিকে রেকর্ড করা হয় ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে। এটি মাত্র কয়েক মিলি সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। তবে কোথা থেকে এসেছিলো সিগনালটি এই তথ্য কেউ উদ্ধার করতে পারেনি। অনেকে এটিকে এলিয়েনদের পাঠানো সিগন্যালও বলে থাকেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, এটি কোনো এলিয়েন স্পেসশিপ থেকে এসেছিলো। সিগন্যালটি ১১টি টেলিস্কোপে ধরা পড়ে। অনেক বিজ্ঞানীর মতে, এটি ১মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্রহ থেকে এসেছিলো।

 

2.পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা রহস্যময় সিগন্যাল

২. রেডিও সোর্চ এসএইচজিবি +১৪এ: ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এসইটিই-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি বিশাল আরসিপো টেলিস্কোপ নির্মাণ করেন। যার উদ্দেশ্য, মহাকাশের ২০০টি জায়গা থেকে রেডিও সিগন্যাল রিসিভ করা। এই টেলিস্কোপটি ৩বার রেডিও সিগন্যাল রিসিভ করে এবং প্রতিবারই ১মিনিট করে স্থায়ী ছিলো। সিগন্যালটির ফ্রিকুয়েন্সি ছিলো ১৪২০ মেগাহার্জ।

এই সিগন্যালটির বিশেষত্ব হলো এটির উৎসস্থল। বাইসিস এবং এরিসকনস্টিলেশন অর্থাৎ মীন এবং মেস তারামণ্ডল থেকে এসেছিলো সিগন্যালটি।

১. ওয়াও সিগন্যাল: পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা এলিয়েন সিগন্যাল-এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ বলা হয় এটিকে। সিগন্যালটি ১৯৭৭ সালে ওহিও স্টেট ইউনিভার্সিটির রেডিও টেলিস্কোপ বিক ইয়ারে রেকর্ড করা হয়। এই রহস্যময় সিগনালটি সেজিটেরিয়াস কনস্টিলেশন বা তারামণ্ডল থেকে এসেছিলো। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি, এই তারামণ্ডলটি পৃথিবী থেকে ১২০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। এই সিগন্যালটির স্থায়িত্ব ছিলো ৭২ সেকেন্ড।

 

3.পৃথিবীর বাইরে থেকে আসা রহস্যময় সিগন্যাল

সিগন্যালটি নজরে আসে বিজ্ঞানী জেরি আর এহমানের। তিনি সিগন্যালটিকে দেখে এতটাই অবাক হন, এটির সিগন্যাল রিপোর্টে ওয়াও লিখেছিলেন! তারপর থেকে এই সিগন্যালটি ওয়াও সিগনাল হিসেবে পরিচিত। তবে এই সিগন্যালটি কারা বা কেন পাঠিয়েছিলো তা এখনো জানা যায়নি।

মহাকাশ নিয়ে মানুষের গবেষণার শেষ নেই। মহাকাশ থেকে কোনো একটি অস্পষ্ট বা স্পষ্ট সিগন্যাল কিংবা ইঙ্গিত পেলেই বিজ্ঞানীরা ঝাঁপিয়ে পড়েন সেটির পেছনে। জানার চেষ্টা করেন, কী রয়েছে সেই সিগন্যালের মূলে। আর এভাবেই আবিষ্কৃত হয়েছে এবং হচ্ছে মহাকাশের আদ্যোপান্ত।