• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফ্রিল্যান্সিংয়ে স্বাবলম্বী নীলফামারীর রূপক

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০  

নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সদর ইউপির পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক মো. নুরুজ্জামান রূপক। বাবা বেলাল উদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য দফতরের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ। রূপক চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে ফ্রিল্যান্সিং করে প্রতি মাসে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা উপার্জন করেন। এখন সে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন অনলাইনে কাজ করে উপার্জন করার।

রূপক বলেন, বর্তমানে সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ। হাজার হাজার শিক্ষিতরা চাকরি না পেয়ে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমি চাকরি করার পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে অধিক অর্থ উপার্জন করছি। অনলাইনে প্রচুর কাজ রয়েছে। কাজ জানা থাকলে এখান থেকে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করা সম্ভব। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে একটা কোর্স করে অনলাইনে কাজ করেও স্বাবলম্বী হওয়া যায়।

অতীত জীবনের ইতিহাস তুলে ধরে রূপক বলেন, এক সময় পকেটে ১০ টাকাও ছিল না। অভাব ছিল নিত্যসঙ্গী। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিয়ে করি। ওই সময় কোনো উপার্জনের পথ ছিল না। ডোমার পৌরসভার চিকনমাটি মোড় এলাকায় বাবার পেতৃক বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করি। কোনো উপার্জন না থাকায় বাবার উপার্জনেই নির্ভরশীল ছিলাম। পরে মামার ব্যবসা দেখাশুনা করি। সেখান থেকে সামান্য কিছু টাকা বেতন পাই। এভাবেই চলতে থাকে দিন। এরপর প্রথম ছেলে সন্তানের বাবা হলাম। খরচ আরো বেড়ে যায়। বাবার কাছ থেকে আর কত চাইবো? মাঝে মধ্যে লজ্জাও লাগে। উপায় তো নেই। কোনো কিছু একটা করতেই হবে। ওয়েব ডিজাইন কোর্স করে কাজের সন্ধান করি। 

কিন্তু অনলাইন বা অফলাইনে কোনো কাজ পাই না। তারপরও লেগে থাকি। অবশেষে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে পরিবার পরিকল্পনা দফতরের ডোমার ইউনিয়ন পরিদর্শক হিসেবে সরকারি চাকরি হয় আমার। চাকরি পাওয়ার পর ভাবতে থাকি, এতদিন অনলাইনে কাজ করার জন্য শ্রম দিয়েছি। সে শ্রম কি বৃথা যাবে! না, কাজে লাগাতেই হবে সেই শ্রম ও অভিজ্ঞতা। চাকরির পাশাপাশি অবসরে ইউটিউব থেকে ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখি। পরের বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘ফাইভার’ থেকে ১০০ ডলারের একটি কাজের অর্ডার পাই। 

তখন থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। মাসে দেড় থেকে দুই হাজার ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে সক্ষম হই। অনলাইন থেকে কাজের অর্ডার নিয়ে চারজন বেকার যুবকের মাধ্যমে কমিশনে কাজ করছি। এতে ওই বেকারদের মাসে পাঁচ হাজার  থেকে ১০ হাজার টাকা উপার্জন হয়। করোনা মহামারি শুরু হলে কাজ কিছুটা কমে যায়। তারপরও প্রতিমাসে এক হাজার ডলারের মতো উপার্জন হয়। অনলাইনে কাজের অভাব নেই। কিন্তু দক্ষ কাজের লোকের অভাব আছে।

ফ্রিল্যান্সার রূপক সমাজের শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি অনলাইনে উপার্জনের বিভিন্ন কোর্স করে উপার্জন করার আহ্বান জানান।

তিনি অনলাইন ই-লার্নিং প্লাটফর্ম ‘ইন্সট্রাকটরী’ তে কোর্স করান নতুনদের। আবার অনেককে হাতে-কলমেও শেখান। এ কোর্সসহ বিভিন্ন কোর্স করে শিক্ষিত যুবক-যুবতী ও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার আহ্বান জানান রূপক।