• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কমিউনিস্টরা কতটা প্রাসঙ্গিক

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০১৮  

‘কমিউনিস্ট’ শব্দটা উচ্চারিত হলেই আমাদের মনের পর্দায় ভেসে ওঠে একজন ত্যাগী মানুষের চিত্র যে মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ। কমিউনিস্টরা মানুষের কথা বলে, অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকে। তারা আন্দোলন করে। আপোষ করে না। তারা সোজা পথে চলে। উচিত কথা বলে। তারা যে যাই হোক তারা মানুষের লোক। কিন্তু আসন্ন বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষিতে একটা প্রশ্ন উঠেছে তা হল কমিউনিস্টরা কতটা বিশ্বাসযোগ্য।

কমিউনিস্ট পার্টি অবিভক্ত পাকিস্তানে ছিল এবং স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশেও আছে। অর্থাৎ ৭০ বছর বয়সী তাদের দল। আজ যখন তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে তখন অবশ্যই ঘুরে তাকাতে হয় সেই আন্দোলনের দিকে। একথা সত্যি যে বাংলাদেশের চিনপন্থী কমিউনিস্ট গ্রুপগুলি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল। তবে স্বায়ত্ত্বশাসন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সাথে তারা একমত ছিল না। দলের মুখপত্র হিসেবে ১৯৭০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক গণশক্তি পত্রিকায় ৬ দফা ও ১১ দফা প্রসঙ্গে মন্তব্য করা হয়, “ছয় দফা ও এগার দফার ভিত্তিতে শাসনতন্ত্র রচিত হলেও দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না, ছয় দফা এগারো দফা নয় জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলাই মুক্তির পথ।” ১৯৭০ সালের নির্বাচনে চিনপন্থী কমিউনিস্টগণ ভোট বর্জন করেন। তারা বরং সশস্ত্র বিপ্লব সংঘটনের বিষয়টিকে সে সময় অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছিল। তাদের কাছে ভোটের বিষয় সে সময় গুরুত্ব লাভ করেনি।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শেষে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বর্বর আক্রমণ শুরু হয়। চিন প্রত্যক্ষভাবে পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করে। ১৪ এপ্রিল, ১৯৭১ সালের চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই পাকিস্তান সরকারের কাছে পাঠানো বাণীতে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের সুখসমৃদ্ধি পাকিস্তানের অখন্ডতার উপর নির্ভরশীল। যারা পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছে তারা হলো মুষ্টিমেয় লোক। গণচিনের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এদেশের অধিকাংশ চিনপন্থী কমিউনিস্টগণ মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করার পরবর্তীকালে বাম রাজনৈতিক দলগুলির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয় । এ সময় বাংলাদেশে প্রায় অর্ধ শতাধিক বাম রাজনৈতিক দল ছিল। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ভাসানী ন্যাপ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফ্ফর), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (পীর হাবিবুবুর), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, ঐক্য জাসদ, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, সর্বহারা পার্টি প্রভৃতি দল ছিল অন্যতম প্রধান বামপন্থী রাজনৈতিক দল। এছাড়া ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল নামে নতুন একটি দল যারা লক্ষ্য হিসেবে ঘোষণা করে বৈজ্ঞানিক সমাজতান্ত্রিক সমাজ। কিন্তু এরা অখন্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিল এবং স্বাধীন বাংলাদেশকে পূর্ব-পাকিস্তান নামে পরিচয় দিত। এ বিষয়ে তাদের অভিমত ছিল “ দেশ বলতে আমরা পাকিস্তানকে এবং রাষ্ট্র বলতেও আমরা পাকিস্তানকে চিনপন্থী কমিউনিস্টদের রাজনৈতিক দল ছিল পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী)। এ দলটি বুঝি। পূর্ব পাকিস্তান একটি দেশ নয়, এটা পাকিস্তানের অংশ।” তাদের মতে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের প্ররোচণায় ভারত কর্তৃক চাপিয়ে দেওয়া একটি আক্রমণাত্মক যুদ্ধ। এ যুদ্ধের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানকে “সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের” উপনিবেশে পরিণত কর হয়। কাজেই এই দল আওয়ামী লীগকে উৎখাত করে পূর্ব পাকিস্তান পুনর্বহাল করার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করে। দলের সাংগঠনিক ক্ষমতা কম থাকার জন্য তাদের এ যুদ্ধ বিস্তার লাভ করতে পারে নি।

১৯৭৪-৭৫ সালে বাংলাদেশে একদলীয় প্রথা বাকশাল প্রবর্তন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির মতো বাম সংগঠন তাতে যোগদানের ফলে বাম বিভক্তি আরও তীব্র হয়। জাতীয়তাবাদী বিরোধী এসকল গোষ্ঠীসমূহ ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মূলত আত্মগোপন করেছিল ও অখন্ড পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিল।

১৯৭৫ সালের ক্ষমতার পটপরিবর্তন হওয়ার পর তারা আত্মপ্রকাশ করে। চিনপন্থীদের অপর ধারা যার নেতৃত্বে ছিলেন রাশেদ খান মেনন, অমল সেন, হায়দার আকবর খান রনো প্রমুখ তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তারা নিজেদের সংগঠিত করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী) গঠন করে। পরবর্তীতে তারা দলের নাম পরিবর্তন করে রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।

১৯৭৫ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে চিনপন্থী কমিউনস্টিদের কার্যক্রম ও আচরণে সবচাইতে বেশি পবিবর্তন দেখা যায়। এ সকল দল ১৯৭৫ সালের পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসার সময় বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নেয় ও তাদের দলের নামের আগে পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান পরিত্যাগ করে বাংলাদেশ শব্দটি যোগ করে। ১৯৭৫ সালের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের ৩ দিন পর পূর্ব বাংলার সাম্যবাদী দল (মার্কস-লেনিন)-এর কেন্দ্রীয় কমিটি এক বিবৃতি প্রচার করে এতে বলা হয়, “… সেনাবাহিনী রুশ-ভারতের নিয়ন্ত্রিত খুনী-দুনীর্তিবাজ মুজিব সরকারকে উৎখাত করেছেন। দেশবাসী তাতে আনন্দিত। আমরাও সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক অংশকে স্বাগত জানাই।’

১৯৭৭ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে বেআইনি ঘোষণা করে। ১৯৭৮ সালে পার্টির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পার্টি প্রকাশ্যে তার কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। ১৯৭৮ সালের নির্বাচনের পর বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করে।

১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮২ সালে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের উত্থান পর্যন্ত সময়কাল বাংলাদেশের বাম দলগুলো একত্রে থাকতে পারেনি যদিও তাদের লক্ষ্য এক সমাজতন্ত্র ছিল। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সরকার বিরোধী নীতি গ্রহণ করে তাদের রাজনীতি পরিচালনা করে। অপর দিকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলসহ অনেক বাম দলই সরকারকে সহযোগিতা করা শুরু করে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদের ক্ষমতা গ্রহণের পর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চিনপন্থী বাম রাজনৈতিক দলসমূহ চরমপন্থা পরিত্যাগ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শুরু করে। আশির দশকে চিনপন্থী দলগুলি ঐক্যজোটে সামিল হয়ে স্বৈরশাসন বিরোধী সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে এবং তারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ অবদান রাখে।

১৯৭৭ সালে কাজী জাফর জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যোগদান করেন। ফলে এ দল থেকে বেরিয়ে এসে রাশেদ খান মেনন ও হায়দার আকবর খান রনো ১৯৭৯ সালে গঠন করেন ওয়ার্কার্স পার্টি। এ দলও ১৯৮০-এর দশকে ১৫ দলীয় ঐক্যজোটে যোগদান করে। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে তারা ১৫ দলীয় জোট ত্যাগ করেন এবং গঠন করেন ৫ দলীয় বাম জোট।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বাম দলগুলোর উপর প্রথম বড় আঘাত আসে নব্বই এর দশকের প্রথম থেকে গর্বাচভ প্রণীত গ্লাসনস্ত পেরেস্ত্রোইকার প্রভাব ও ১৯৯১ সালের সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে দলের মধ্যকার এক অংশ পার্টির গঠনতন্ত্র, তার নীতি আদর্শ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তোলা শুরু করে। শুরু হয় সংস্কারের নামে দলের মধ্যে আভ্যন্তরীণ কোন্দল। ফলে ১৯৯০-এর দশকে বাংলাদেশ বামধারার চিনপন্থী রাজনীতিবিদদের আর প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ততটা দৃশ্যমান দেখা যায় না।

দেশে বর্তমানে বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (ইনু), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (খালেকুজ্জামান), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (মোজাফফর), সাম্যবাদী দল (দিলীপ বড়ুয়া), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। এ দলগুলোর মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি (মেনন), ন্যাপ (মোজাফফর) ও দিলীপ বড়ুয়া র নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী দল বর্তমানে সরকার ও ক্ষমতাসীন জোটে রয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে রয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সরকারের বিমানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ক্ষমতাসীন জোটের বাম ঘরানার আরেক শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদেরও (ইনু) একই অবস্থা। এ দলের প্রধান হাসানুল হক ইনু বর্তমান সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপের (মোজাফফর) সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ জেলায় এ সংগঠন নিষ্ক্রিয় বলে জানা গেছে। এদিকে ছোট ছোট কয়েকটি বামপন্থি দলের সমন্বয়ে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোট আছে। এ মোর্চায় দল রয়েছে ৮টি। এ দলগুলো হল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দল, বাসদ (মাহাবুব), সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলন। এদের অধিকাংশই নাম সর্বস্ব। ঢাকার বাইরে এ জোটের কোনো অস্তিত্ব নেই। এদিকে ছোট ছোট কয়েকটি বামপন্থি দলের সমন্বয়ে বাম গণতান্ত্রিক মোর্চা নামে একটি জোট আছে। এ মোর্চায় দল রয়েছে ৮টি। এ দলগুলো হলো বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, শ্রমিক-কৃষক সমাজবাদী দল, বাসদ (মাহাবুব), সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণসংহতি আন্দোলন। এদের অধিকাংশই নাম সর্বস্ব। ঢাকার বাইরে এ জোটের কোনো অস্তিত্ব নেই।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বামপন্থি দলগুলোও নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। বামপন্থি দলগুলোর একটি অংশ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলের জোট থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে। ১৪ দলে যে বামপন্থি দলগুলো রয়েছে তার মধ্যে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল হলো- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও সাম্যবাদী দল। অন্যদিকে বামপন্থি ৮টি দলের জোট বাম গণতান্ত্রিক জোটে নিবন্ধিত দলগুলো হলো বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। এ দলগুলো গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি।

১৪ দলের শরিক বাম দলগুলোর মধ্যে জাসদ চেয়েছে ১৫টি আসন, ওয়ার্কার্স পার্টি ১০টি, জাসদের আরেক অংশ (বাংলাদেশ জাসদ) ৫টি, সাম্যবাদী দল ২টি ও ন্যাপ তিনটি আসন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে কেন এদের সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে? কারণ প্রথমত এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহন করে না। অতীত ইতিহাস বলে এরা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল এবং ১৯৭৫ সাল অবধি এরা নিজেদের নামের সাথে দেশ হিসেবে পাকিস্তান উল্লেখ করত। দ্বিতীয়ত এরা শতধা বিভক্ত। কমিউনিস্ট আন্দোলনের মূল আদর্শ থেকে এরা বিচ্যুত বলে আজ এরা বিভক্ত। ক্ষমতার গুড়লোভী পিঁপড়ে ছাড়া এরা কিছুই নয়। তৃতীয়ত এদের সততা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মতিয়া চৌধুরী বাদে একগুচ্ছ কমিউনিস্ট মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন হলে তিনি কৃষি, খাদ্য ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এখনো তিনি কৃষিমন্ত্রীই। দীর্ঘ সময় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেও তিনি নিজের স্বচ্ছতা ধরে রেখেছেন। বাকিরা? চতুর্থত এই দলগুলি আজ প্রগতির পথে চলা বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় কতটা প্রাসঙ্গিক? এদের কাজের দীর্ঘসূত্রিতার জন্যে সরকারকে মাঝে মধ্যে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। অতএব বাংলাদেশের রাজনীতির উঠোন থেকে কমিউনিস্টদের বিসর্জন দিলে ক্ষতি কী?

-অমিত গোস্বামী