• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্প পুনরায় সচলের উদ্যোগ

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০২০  

শুকনো মৌসুমে পানির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে ও আবহাওয়ার উঞ্চতা সুষম রাখতে জলাধার খনন করে গোটা দেশের ভূ-উপরিভাগে পানি সংরক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনায়। এরই ধারাবাহিকতায় নীলফামারীর ডিমলায় বুড়ি তিস্তা ব্যারেজের উজানে ভরাট হয়ে যাওয়া ১ হাজার ২১৭ একর জলাধার পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এই জলাধারে সঞ্চিত পানি শুকনো মৌসুমে ব্যবহার করে ৮ হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। যা দিয়ে সামান্য খরচে কৃষকেরা ফলাতে পারবে ধান, পাট, ভূট্টা, সবজিসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল।

বর্ষা মৌসুমে সম্পূরক সেচ আর শুকনো মৌসুমে সেচের মাধ্যমে অনুর্বর জমির বুকে শষ্য ফলাতে ষাটের দশকে ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জে বুড়ি তিস্তা নদীর ওপর ১৪টি জলকপাটের সমন্বয়ে ব্যারেজ নির্মাণ করা হয়। শুরু থেকে বিগত ২০১০ সাল পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে জলাধারের পানি আর বর্ষায় প্রবাহের পানিতে এসব জমি হয়ে উঠে সুজলা-সুফলা। কিন্তু জলাধার লিজ দেওয়া সংক্রান্ত মামলার কারণে টানা ৮ বছর বন্ধ থাকে এ প্রকল্পের সেচ কার্যক্রম। এতে একদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকেরা। অন্যদিকে পলি জমে ভরাট হয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকার জলাধার। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যারেজের জলকপাট, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি খালসহ বিভিন্ন অবকাঠামো। অবশেষে ২০১৮ সালে আদালতের নির্দেশে নিষ্পত্তি হয়ে মামলা। পুনরায় এ প্রকল্পকে সচল করতে ১২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়।

স্থানীয় কৃষকদের দাবি, জমিতে সেচ সমস্যার সমাধানে জলাধার খনন, সেচ নালা ও বিভিন্ন অবকাঠামো সংস্কার করে সেচ কার্যক্রম শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সরকারের ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ৬টি হট স্পটের মধ্যে নীলফামারী অন্যতম। এই হট স্পটগুলোতে ভূ-উপরিভাগের পানি ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্পের সেচ নেটওয়ার্ক তৈরি, রিজার্ভার তৈরি, খাল খনন, ব্যারেজ সংস্কারের জন্য আমরা ১২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প দাখিল করেছি। ইতিপূর্বে বুড়ি তিস্তার জলাধার পুনঃখনন আর তিস্তা নদীর বিভিন্ন খালের পানি ব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে, ফসল উৎপাদনে অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. সামছুল আলম জানান, বুড়ি তিস্তার জলাধার খনন করে সেচ প্রকল্প চালু করা হবে। বুড়ি তিস্তা নদীর জলাধারের আদলে সারা দেশে শুকনো মৌসুমে পানি পেতে জলাধার গড়ে তোলা হলে আবহাওয়া সুষম থাকবে। পানির জন্য বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। বর্ষায় বৃষ্টির পানি জলাধারের মাধ্যমে আটকে রেখে তা অনায়াসে শুকনো মৌসুমে ব্যবহার করা সম্ভব।

কৃষক মফিজুল ইসলাম জানান, খরিপ মৌসুমে জমিতে সেচ দেওয়া কষ্টকর ও ব্যয়বহুল। যদি নদী ও খাল খনন করে পানি সংরক্ষণ করা হয় তাহলে সামান্য খরচে কৃষকেরা ধান পাট, গম, ভূট্টা, সবজিসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল ফলাতে পারবে। আওয়ামীলীগ সরকার কৃষকদের সরকার। এই সরকারের আমেলেই এই সেচ প্রকল্প পুনরায় চালু হওয়ার খবরে উচ্ছসিত এই এলাকার কৃষকরা।