• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ মাসে ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০১৯  

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) গত ৩ মাসে ৯ জনকে সাময়িকভাবে এবং একজনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদের মধ্যে ৩ জন কর্মকর্তা এবং বাকি ৭ জন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন সেকশনের কর্মচারী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য, প্রকাশ্যে শিক্ষককে গালিগালাজ করাসহ জুয়া, মদ, গাঁজা আর ফেন্সিডিল কারবারিতে জড়িত থাকা।

গত ২৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা (সেকশন অফিসার গ্রেড-১) মো. মোক্তারুল ইসলামকে দুই বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানা পুলিশ। এঘটনায় পরদিন বুধবার রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে সাময়িক বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সেই মামলায় তিনি গ্রেফতার হলেও এখন জামিনে আছেন বলে জানা যায়। এছাড়াও মাদকের সাথে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মচারী হাবিলদার সোহেল রানাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর গত ২৪ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া থেকে জুয়া মামলায় আটক হন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত পরিবহন পুলের উপ-রেজিস্ট্রার মো. তারিকুল ইসলাম এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুর রহিম। কাউনিয়া থানা পুলিশ তাদেরকে জুয়ার স্থান নিজপাড়া মৌজার বাসস্ট্যান্ডের নিকটস্থ টিনের ঘর থেকে গ্রেফতার করে সরাসরি জেল হাজতে পাঠায়।

এ অপরাধের দায়ে এই দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিস্কারের আদেশ দিয়ে এক অফিস আদেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল। এছাড়াও মাদকের সাথে জড়িত থাকায় সাময়িক বহিস্কার হযেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের কর্মচারী রায়হান পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত কর্মচারী এনায়েত এবং পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মচারি রুবেল।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিনষ্টের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চার জন কর্মচারীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা হলেন, সিনিয়র পিএ কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. রবিউল ইসলাম, নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা প্রহরী এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম মিয়া ও রসায়ন বিভাগের ল্যাব এটেন্ডেন্ট মো. মালেক মিয়া।

জানা যায়, বেরোবি অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক এবং গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান সেলিমকে নিয়ে ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য করায় তিন কর্মচারীকে সাময়ীক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানকে অশালীন ভাষায় প্রকাশ্যে গালিগালাজ করার দায়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত সেমিনার সহকারী মাসুম খানকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

উপরোক্ত চার কর্মচারীর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও জানা যায়। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. মাসুদ রানাকে আহবায়ক এবং রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) শাহীদ আল মামুনকে সদস্য সচীব করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক মাসুদ রানা জানান, ‘তদন্তের কাজ প্রায় শেষের দিকে। দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো সম্ভব হয়নি। তবে আগামী বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রিপোর্ট জমা দেব বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা হয়েছে।’

বহিস্কৃতদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘বহিস্কৃতদের কাউকে এখনো কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। যাদের বিরুদ্ধ মামলা হয়েছে তাদের জন্য আদালতের আদেশক্রমেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চারজন কর্মচারীর তদন্তের বিষয় সম্পর্কে তিনি জানান, ‘এখনো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাইনি। তদন্ত রিপোর্ট আসলেই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’