মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতে অস্তিত্ব সংকটে বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে এক সময়ের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি। ভঙ্গুর সাংগঠনিক কাঠামো, দুর্বল নেতৃত্ব এবং মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে দলটির কার্যক্রম। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা ও কার্যত সাংগঠনিক কাজ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছে দলটির নেতাকর্মীরা। ফলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছে তারা।

দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত বিএনপির মূলশক্তি ছিল ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহানগর কেন্দ্রীয় কমিটি। দুর্বল নেতৃত্ব ও কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এসব সংগঠন আজ অকেজো। যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যকারিতা হারিয়েছে অনেক আগেই।

দীর্ঘদিন আগেই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে সংগঠনগুলোতে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মহানগর বিএনপি অনেকটা নিষ্ক্রিয়। 

এদিকে, দীর্ঘ ২৭ বছর পর ভোটের মাধ্যমে ছাত্রদলের নেতা নির্বাচিত করা হলেও এখন পর্যন্ত সেই কমিটি দৃশ্যমান কিছুই করতে পারেনি। সিন্ডিকেট মুক্ত করার জন্য ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা হলেও এখনো সিন্ডিকেটে আবদ্ধ ছাত্রদল। এছাড়া কেন্দ্রের নেতাদের চেয়ে জেলা-উপজেলার নেতারা সিনিয়র হওয়ায় কমান্ড মানতে নারাজ তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির সিনিয়র ও দায়িত্বশীল একজন নেতা বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকার পরও দল গোছাতে পারেনি বিএনপি। তিনি বলেন, পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে এত দিনেও বিএনপি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। বেশিরভাগ নেতাই নিজেদের পদ-পদবি ও অবস্থান ধরে রাখতে তদবিরে ব্যস্ত।

তিনি আরো বলেন, এখনো পর্যন্ত কাউন্সিল নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কবে এর উদ্যোগ নেয়া হবে তা কেউ জানে না। এই অবস্থায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে দলের কার্যক্রম।

কাউন্সিল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কাউন্সিলের বিষয়ে দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনো দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।

এ বিষয়ে বিএনপিপন্থী রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবীরা বলেন, বর্তমানে বিএনপিতে দক্ষ, মেধাবী ও চৌকস নেতার বড়ই অভাব রয়েছে। এ দলে দক্ষ নেতা না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে চমক দেখাতে পারছে না। ভালো নেতা নির্বাচন করে তাদের হাতে দলের দায়িত্ব তুলে দিতে হবে।