• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

যে ব্যাধি পরিহার করা জরুরী

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ ২০২০  

আমরা একে অন্যের ভালো সহ্যই করতে পারি না! অন্যের উপকার তো করিই না বরং কারো ভালো দেখলে আমাদের গা যেন জ্বলে ওঠে।  
এজন্যই, ‘হিংসা সৎকর্মকে এমনভাবে জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয় ঠিক যেভাবে আগুন খড়কুটোকে জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়।’ 

উল্লেখ্য আরো বিষয় আছে যেমন: আপনি যার সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করেন তার বিপদে খুশি হলে এবং যাকে অপছন্দ করেন তার দুর্ভোগে পুলকিত হলে সেটিই হলো বিদ্বেষ বা অন্যের বিপদে আনন্দ অনুভব করার ব্যাধি। যে ব্যাধি পরিহার করা জরুরি। পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা বলেন, 

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ فَأَصْلِحُوا بَيْنَ أَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ

‘মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। অতএব, তোমরা তোমাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহকে ভয় করবে-যাতে তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও।’ (সূরা: হুজুরাত, আয়াত: ১০)।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِّن قَوْمٍ عَسَى أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاء مِّن نِّسَاء عَسَى أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الاِسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ

‘মুমিনরা, কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোনো নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম।’ (সূরা : হুজুরাত, আয়াত : ১১)।

হাদিসে শরিফে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘কোনো ব্যক্তির খারাপ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে অবজ্ঞা করে।’ (সহিহ মুসলিম, রিয়াদুস সলিহীন :১৫৭৪)। আল্লাহ তায়ালা মুনাফেকদের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, 

إِن تَمْسَسْكُمْ حَسَنَةٌ تَسُؤْهُمْ وَإِن تُصِبْكُمْ سَيِّئَةٌ يَفْرَحُواْ بِهَا وَإِن تَصْبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لاَ يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا إِنَّ اللّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ

‘তোমাদের যদি কোনো মঙ্গল হয়; তাহলে তাদের খারাপ লাগে। আর তোমাদের যদি অমঙ্গল হয় তাহলে আনন্দিত হয় আর তাতে যদি তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনোই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে সে সমস্তই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে।’ (সূরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১২০)।

অন্যত্র এসেছে, 
وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ

‘প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ, (সূরা: হুমাযা, আয়াত : ১)। 

রাসূলুল্লাহ (সা.) বিদ্বেষ পোষণ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়েছেন। তিনি দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অবিচার, দুর্ভাগ্য ও শত্রুর বিপদে আনন্দ করা থেকে আশ্রয় কামনা করছি।’ ওয়াসিলা ইবনুল আসকা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার ভাইয়ের বিপদে আনন্দিত হয়ো না। কেননা, এতে আল্লাহ তার প্রতি অনুগ্রহ করবেন এবং তোমাকে ওই বিপদে নিমজ্জিত করবেন।’ (তিরমিজি, রিয়াদুস সলিহীন :১৫৭৭)।

মনে রাখা প্রয়োজন, আমরা মুসলিমরা পরস্পর ভাই। কাজেই ভাইয়ের বিপদে আনন্দিত হওয়া যাবে না আর অন্যকে অবজ্ঞা করা যাবে না। অন্যকে অবজ্ঞা করার মানে হলো নিজেকে উত্তম মনে করা। আর নিজেকে উত্তম মনে করা মানে হলো অহংকার করা।